চূড়ান্ত হয়ে গেছে কাতার বিশ^কাপের ৩২ দল, নির্ধারিত হয়ে গেছে পূর্ণাঙ্গ সূচি। মাঠের লড়াই শুরুর এখনো বাকি প্রায় ৫ মাস। তবে এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে মাঠের বাইরের নানান লড়াই। ফাইনালে উঠতে প্রিয় দলের সামনে পড়বে কোন কোন দল ভক্ত-সমর্থকরা হিসাব কষতে শুরু করে দিয়েছেন। একনজরে দেখে নেওয়া যাক ফাইনালে ওঠার পথে কোন কোন দলের মুখোমুখি হতে পারে আর্জেন্টিনা।
শেষ ষোলো : কাতার বিশ^কাপে ‘সি’ গ্রুপে রয়েছে লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা। যেখানে তাদের তিন প্রতিপক্ষ মেক্সিকো, সৌদি আরব ও পোল্যান্ড। শেষ ষোলোয় এই গ্রুপের রানার্সআপ দলকে খেলতে হবে ‘ডি’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন দলের বিপক্ষে। আর ‘সি’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন দলকে খেলবে ‘ডি’ গ্রুপের রানার্সআপের বিপক্ষে। অতীত পরিসংখ্যান কিংবা সাম্প্রতিক ফর্ম বিবেচনায় ধরে নেওয়াই যায় বিবেচনায় আর্জেন্টিনাকে ‘সি’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হিসেবে ধরে নেওয়া খুব একটা ভুল হবে না। এমনটা হলে তাদের সামনে পড়বে ফ্রান্স, ডেনমার্ক, অস্ট্রেলিয়া ও তিউনিশিয়ার গ্রুপের রানার্সআপ দল। বিশ^চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স হবে ‘ডি’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়নÑ এটি সহজেই অনুমেয়। অন্যদিকে রানার্সআপ হিসেবে জোর সম্ভাবনা রয়েছে ডেনমার্কের। তাহলে শেষ ষোলোয় মুখোমুখি লড়াই হবে আর্জেন্টিনা ও ডেনমার্কের। এ ম্যাচে স্বাভাবিকভাবেই ফেভারিট থাকবে আর্জেন্টিনা।
কোয়ার্টার ফাইনাল : ডেনমার্ককে হারিয়ে কোয়ার্টারে উঠলে আর্জেন্টিনার সামনে পড়বে ‘এ’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন ও ‘বি’ গ্রুপের রানার্সআপের মধ্যকার শেষ ষোলো ম্যাচজয়ী দল। ‘এ’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে নেদারল্যান্ডসের। অন্যদিকে ‘বি’ গ্রুপে ইংল্যান্ডের পর দ্বিতীয় হয়ে শেষ ষোলোয় উঠতে পারে ওয়েলস। সেক্ষেত্রে শেষ ষোলোয় লড়বে নেদারল্যান্ডস ও ওয়েলস এবং এই ম্যাচের জয়ী দল হিসেবে ডাচদেরই আর্জেন্টিনার মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। অর্থাৎ কোয়ার্টার ফাইনালে আর্জেন্টিনার সম্ভাব্য প্রতিপক্ষ হতে পারে ২০০৬ সালের বিশ^কাপের রানার্সআপ দল নেদারল্যান্ডস।
সেমিফাইনাল : নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে সেরা চারে উঠতে পারলেই কঠিন পরীক্ষার সামনে পড়তে হবে আর্জেন্টিনাকে। আসরের ৬১তম ম্যাচটিতে ৫৭তম ম্যাচের জয়ী দল হিসেবে আর্জেন্টিনাকে খেলতে হবে ৫৮তম ম্যাচের জয়ী দলের বিপক্ষে। আর ৫৮তম ম্যাচে লড়বে ৫৩ ও ৫৪তম ম্যাচের জয়ী দল। এই সমীকরণ অনুযায়ী ৫৩তম ম্যাচে খেলবে ‘ই’ গ্রুপের সম্ভাব্য চ্যাম্পিয়ন জার্মানি ও ‘এফ’ গ্রুপের রানার্সআপ ক্রোয়েশিয়া। এই ম্যাচে জার্মানির জয়ী হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। অন্যদিকে ৫৪তম ম্যাচে লড়বে ‘জি’ গ্রুপের সম্ভাব্য চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল ও ‘এইচ’ গ্রুপের রানার্সআপ উরুগুয়ে। যেখানে ব্রাজিলই থাকবে এগিয়ে। তাহলে ৫৮তম ম্যাচ অর্থাৎ কোয়ার্টার ফাইনালেই হবে ব্রাজিল ও জার্মানির মধ্যকার মহারণ! এই ম্যাচের জয়ী দলকেই খেলতে হবে সেমিফাইনালে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে। যদি ৫৮তম ম্যাচে জেতে ব্রাজিল, তাহলে সেমিফাইনালে হয়ে যাবে ভক্ত-সমর্থকদের ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা সুপার ক্লাসিকো ম্যাচ। অন্যথায় জার্মানির বিপক্ষে লড়তে হবে আর্জেন্টিনাকে।
ফাইনাল : সেমিফাইনালের কঠিন লড়াইয়ে উতরে গেলে ২০১৪ সালের পর আবার ফাইনালের টিকিট পাবে আর্জেন্টিনা। সেক্ষেত্রে তাদের সামনে পড়বে অন্য সেমিফাইনাল জয়ী দল। ফিফার সমীকরণের হিসেবে সেই সেমিফাইনালে মুখোমুখি হতে পারে ফ্রান্স ও বেলজিয়াম। পরে ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে বেলজিয়ামকে হারাতে পারলে টানা দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনালের টিকিট পাবে ফ্রান্স। অন্যথায় বেলজিয়াম পাবে শিরোপা জেতার সুবর্ণ সুযোগ। অর্থাৎ সম্ভাব্য সমীকরণ সব ঠিক থাকলে শিরোপার লড়াইয়ে ফ্রান্স অথবা বেলজিয়ামের মুখোমুখি হবে আর্জেন্টিনা।