টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে দেশের সার্বিক বন্যার পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ পূর্বাঞ্চলের সিলেট ও সুনামগঞ্জ সহ আশপাশের জেলাসমূহ। বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে নদ-নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে রাস্তাঘাট, বাড়িঘর ডুবে পানিবন্দি হয়ে পড়ছে অনেক এলাকার মানুষ। নষ্ট হচ্ছে ফসলি জমি। অনেকে আশ্রয়ের খোঁজে এদিক-ওদিক ছুটছেন। গবাদি পশু ও ঘরের জিনিসপত্র নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন তারা।
স্বরণকালের রেকর্ড বন্যায় সিলেট ও সুনামগঞ্জের সঙ্গে বিভিন্ন উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। ঢাকা-সুনামগঞ্জ মহাসড়কের বেশিকিছু অংশ এখন পানির নীচে। বন্ধ হয়েছে ছোট ছোট যানবাহন চলাচল। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন সুনামগঞ্জে। অচল হতে চলেছে মোবাইল নেটওয়ার্কও। অনেক এলাকায় আটকা পড়েছেন দুর্গত মানুষ। দেখা দিয়েছে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানি সংকট। খাদ্য ও নিত্যপণ্য সরবরাহ ব্যহত হচ্ছে।
এদিকে ভীড় বাড়ছে আশ্রয় কেন্দ্রে গুলোতে। নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে এলাকার দুর্গত মানুষ। গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন অনেকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মাঠে নেমেছে সেনাবাহিনী। শুক্রবার থেকে ত্রাণ বিতরণ ও বানভাসীদের উদ্ধারে কাজ করছেন এ বাহিনীর সদস্যরা। সুনামগঞ্জের ৮০ ভাগ এলাকা এখন পানিতে নিমজ্জিত।
তাছাড়া সিলেট ও সুনামগঞ্জ শহরের বেশিরভাগ এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে।
এদিকে দেশের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় ১৯ জুন থেকে শুরু হতে যাওয়া এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান তপন কুমার সরকার এ তথ্য জানিয়েছেন। বন্দরে পানি ওঠায় সিলেট বিমানবন্দরের কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের কারণে দেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ১০টি নদীর পানি ১৩টি পয়েন্টে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এসব অঞ্চলের নদ-নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে এরই মধ্যে বন্যা দেখা দিয়েছে। ভারী বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় সিলেট ও রংপুর অঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (বাপাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। সব মিলিয়ে সিলেট, সুনামঞ্জ, হবিগঞ্জ, মৌরভীবাজার সহ বৃহত্তর সিলেটের চার জেলা কমবেশি বন্যায় আক্রান্ত। এর বাইরে লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর, কুড়িগ্রাম, শেরপুর, জামালপুর, নেত্রকোণা, কিশোরগঞ্জ সহ আট জেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতি আরো অবণতি হতে পারে বলছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
সিলেটে ভয়াবহ বন্যা
টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে দ্বিতীয় দফায় ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে সিলেটে। সেখানকার অধিকাংশ বাড়িঘর ও রাস্তাঘাট পানিতে ডুবে গেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন কয়েক লাখ মানুষ। অনেকে আশ্রয়ের খোঁজে এদিক-ওদিক ছুটছেন। গবাদি পশু ও ঘরের জিনিসপত্র নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন তারা।
সিলেট নগরীর বাসিন্দা শাকিল আহমেদ বলেন, ‘এমন বন্যা গত ২০ বছরে দেখিনি। সব ডুবে গেছে। সবার ঘরে হাঁটুপানি। যাওয়ার কোনও জায়গা নেই। মানুষ দিশেহারা হয়ে আশ্রয়স্থল খুঁজছে। যাদের সামর্থ্য আছে তাদের কেউ কেউ বাড়িঘর ছেড়ে হোটেলে উঠেছে। কিন্তু অসহায় মানুষের যাওয়ার জায়গা নেই। নিরূপায় হয়ে বাসাবাড়ি ছেড়ে চলে যাচ্ছে অনেকে। খাবারের কোনও ব্যবস্থা নেই। আমরা খুব বিপদে আছি।’
তালতলার এলাকার গৃহিণী সানজিদা ইসলাম জানান, ‘সিলেটের অবস্থা ভয়াবহ। বিশুদ্ধ পানিসহ খাবারের সংকটে আছি। বাসার সব মালামাল পানিতে ডুবে আছে। পরিবারের সবাইকে রিয়ে খাটের ওপর বসে দিন কাটাচ্ছি।’
সদর উপজেলা, সিটি করপোরেশন, গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, কানাইঘাট ও জৈন্তাপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানি বেড়েছে সুরমা, পিয়াইন ও কুশিয়ারাসহ জেলার সব নদীর। হু হু করে পানি বাড়ায় আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন এলাকার বাসিন্দারা।
সিলেট সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, নগরের ৩১টি বিদ্যালয় ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্র ঘোষণা করা হয়েছে। সেখানে আশ্রয় প্রার্থীদের যাওয়ার জন্য জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে অবহিত করা হচ্ছে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্য অনুসারে, সকাল ৯টায় সুরমা নদীর পানি সিলেটের কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ১০৮ সেন্টিমিটার ওপরে ও সিলেট নগর পয়েন্টে ৭০ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছিল।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সিলেট সূত্রে জানা গেছে, সুরমা নদীর দুটি ও কুশিয়ারা নদীর একটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলার অন্য নদ-নদীর পানিও বাড়ছে।
এদিকে সিলেটে বন্যা মোকাবিলায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে এক বার্তায় আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এ তথ্য জানায়।
জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান বলেন, ‘বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রশাসন আন্তরিকভাবে কাজ করছে। যাদের বাড়িঘরে পানি উঠেছে, তাদের নিরাপদ স্থানে চলে যেতে বলা হচ্ছে। দুর্গতদের ত্রাণ সহায়তা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
সুনমাগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি :
নদনদীর পানি বেড়ে সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে সদরসহ জেলার প্রায় সব প্রান্তের ঘরবাড়িতে।
বন্যায় নিত্যপ্রয়োজনীয় সব ধরনের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন জেলার বাসিন্দারা। শহরসহ জেলার বিভিন্ন প্রান্তে সুপেয় পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত থেকে জেলা শহর বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন।
দুর্ভোগে নতুন মাত্রা যোগ করেছে মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক না থাকায়। জেলা শহরে বৃহস্পতিবার গভীর রাত থেকে নিরবচ্ছিন্ন মোবাইল নেটওয়ার্ক পাওয়া যাচ্ছে না।
বানভাসীদের মধ্যে যারা বাড়িতে আছেন, তারা শুকনো খাবার খেয়ে কাটাচ্ছেন। অন্যদিকে যাদের বাড়িতে থাকার মতো অবস্থা নেই, তারা মরিয়া আশ্রয়কেন্দ্রগুলোর দিকে যেতে।
সুনামগঞ্জের বন্যাদুর্গতদের সহায়তায়ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। বিভাগীয় কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) ড. মুহাম্মদ মোশাররফ হোসেন এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, ‘সেনাবাহিনীর দলটি এরই মধ্যে সুনামগঞ্জের উদ্দেশে রওনা হয়েছে। জেলার ছাতক, দোয়ারাবাজার, সদরসহ বন্যাদুর্গত অঞ্চলগুলোতে মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে অংশ নেবেন সেনাসদস্যরা।’
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সুনামগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘জেলার ৮০ শতাংশ অঞ্চল পানিতে ডুবে গেছে। শহরের প্রায় সব বাসাবাড়িতে পানি ঢুকেছে।’ শুক্রবার সকালে সুরমা পয়েন্টে বন্যার পানি বিপৎসীমার ১০৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল বলে তিনি জানান।
বিপৎসীমার ওপরে ধরলার পানি, বাড়ছে ব্রহ্মপুত্র-তিস্তারও :
ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে কুড়িগ্রামে ধরলা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। শুক্রবার সকালে ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানিও বাড়ছে।
তিস্তা নদীর পানি কাউনিয়া পয়েন্টে ৩৩ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৫ সেন্টিমিটার এবং নুনখাওয়া পয়েন্টে ৩০ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানান কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের কন্ট্রোল রুম।
এদিকে নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে নিম্নাঞ্চলে বন্যার পানি ঢুকতে শুরু করায় জেলা সদর, নাগেশ্বরী, ভুরুঙ্গামারীসহ চিলমারী উপজেলার শত শত পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। ধান, পাট ও শাকসবজিক্ষেত পানিতে নিমজ্জিত হওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন চাষিরা।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্ল্যাহ আল মামুন বলেন, ‘ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে কুড়িগ্রামে তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি বাড়ছে। তবে বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে ধরলার পানি। এতে করে জেলার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।’
নেত্রকোনায় পানিবন্দি ২ লাখ মানুষ :
ভারী বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোনার কলমাকান্দা, দুর্গাপুর ও বারহাট্টা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ডুবে গেছে বসতরঘর, ভেসে গেছে তিন সহস্রাধিক পুকুর ও ঘেরের মাছ।
কলমাকান্দা উপজেলার পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ। এই উপজেলার আটটি ইউনিয়নের তিন শতাধিক গ্রামের রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন প্রায় দুই লাখ মানুষ।
জেলা প্রশাসন সূত্র ও স্থানীয়রা জানায়, কলমাকান্দা উপজেলা সদরসহ বড়খাপন, পোগলা, খারনৈ, লেঙ্গুরা, নাজিরপুর ও রংছাতি ইউনিয়নের পরিস্থিতি সবচেয়ে বেশি খারাপ। এছাড়া দুর্গাপুর উপজেলাসহ কুল্লাগড়া, গাওকান্দিয়া
ইউনিয়নে বাড়িঘর, দোকান-পাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন দফতর বন্যার পানিতে প্লাবিত। দুই উপজেলার সঙ্গে প্রায় সবগুলো ইউনিয়নের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে।
নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র জানায়, ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোনার কংস, মোমেশ্বরী, ধনু, উব্দাখালিসহ ছোট-বড় সব নদ-নদীর পানি বাড়ছে।
জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, ‘বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে বন্যাকবলিত প্রতিটি উপজেলায় ২০ মেট্রিক টন করে চাল ও নগদ দুই লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে শুকনো খাবারসহ ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত থাকবে।’
ঝুঁকিতে সিলেটের কুমারগাঁও উপকেন্দ্র :
বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের ফেসবুক পেজে গতকাল শুক্রবার বলা হয়েছে, ‘গতকাল থেকে সিলেট ও সুনামগঞ্জ অঞ্চলে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। পাহাড়ি ঢল ও বন্যার পানি ছাতক ও সুনামগঞ্জ গ্রিড উপকেন্দ্রে প্রবেশ করায় নিরাপত্তার স্বার্থে উক্ত গ্রিড উপকেন্দ্র বন্ধ রাখা হয়েছে। উপকেন্দ্র বন্ধ থাকায় ওই এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ আছে।
অব্যাহত বৃষ্টিপাতের ফলে সিলেটের কুমারগাঁও উপকেন্দ্র ঝুঁকির মধ্যে আছে। যেকোনো সময় এই উপকেন্দ্রও বন্ধ করা প্রয়োজন হতে পারে। ফেঞ্চুগঞ্জ, বিবিয়ানা, বিয়ানীবাজার ও শ্রীমঙ্গল এলাকায় বন্যার পানি মারাত্বক না হওয়ার ফলে ওইসব এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক আছে। বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি এবং স্থাপনার দূর্ঘটনা এড়ানোর লক্ষ্যে যাবতীয় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সম্মানিত বিদ্যুৎ গ্রাহকদের সাময়িক অসুবিধার জন্য বিদ্যুৎ বিভাগ দুঃখ প্রকাশ করছে। বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ামাত্র বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা হবে। এ বিষয়ে প্রকৌশলী ও বিদ্যুৎ কর্মীগণ সর্বদা তৎপর রয়েছে’।
আরেকটি স্ট্যাটাসে বলা হয়েছে, ‘ছাতকে পিজিসিবি'র গ্রিড উপকেন্দ্র এবং সংলগ্ন এলাকায় বিতরণ সংস্থার বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রগুলো পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হয়েছে। ফলে ছাতক থেকে সুনামগঞ্জে বিদ্যুৎ সঞ্চালন বন্ধ রয়েছে। পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জেও বহু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে দুর্ঘটনা এড়াতে ছাতক ও সুনামগঞ্জ জেলা সহ সংলগ্ন এলাকাসমূহে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে।
সিলেট সদরে কুমারগাঁও গ্রিড উপকেন্দ্রের সুইচইয়ার্ড প্লাবিত হয়েছে। পানি আরও বাড়লে সিলেটও বিদ্যুৎ বন্ধের ঝুঁকিতে পড়বে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সম্মানিত বিদ্যুৎ গ্রাহকদের সাময়িক অসুবিধার জন্য বিদ্যুৎ বিভাগ দুঃখ প্রকাশ করছে। বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ামাত্র বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করতে পিজিসিবি, বিউবো এবং পবিস'র প্রকৌশলী সহ সর্বস্তরের কর্মীগণ প্রস্তুত রয়েছেন’।
বাংলাদেশ হাই-টেক পার্কে আশ্রয়কেন্দ্র :
এদিকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক শুক্রবার তাঁর নিজের ফেরিফাইড ফেসবুক পেজে লিখেছেন, ‘সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি হয়েছে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের আওতাধীন বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ এর বাস্তবায়িত সিলেট হাইটেক পার্কে সিলেটে বন্যা কবলিত এলাকার দুই হাজার মানুষ প্রায় এক হাজার গবাদিপশু ও প্রয়োজনীয় মালামালসহ আশ্রয় গ্রহণ করেছে’।
তিনি আরো লিখেছেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে তাদের তিন বেলা থাকা এবং খাবার ব্যবস্থা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ইতিমধ্যে প্রকল্প পরিচালককে নির্দেশনা প্রদান করেছি।
আসুন আমরা যার যার অবস্থান থেকে সিলেটে বন্যা কবলিত মানুষের সাহায্যে এগিয়ে আসি। মহান আল্লাহ আমাদেরকে এই প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করার তৌফিক দান করুন। আমিন।
সদয় অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, আমাদের সিলেট হাইটেক পার্কের প্রশাসনিক ভবনসহ সবগুলো ভবনে বন্যা কবলিত মানুষদের থাকার জন্য আশ্রয় দেওয়া হয়েছে এবং যারা আশ্রয় গ্রহণ করতে চান তাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।’