logo
আপডেট : ১৮ জুন, ২০২২ ১৮:৫০
পাঁচ দিনে যাবে টেস্ট?
ক্রীড়া প্রতিবেদক

পাঁচ দিনে যাবে টেস্ট?

অ্যান্টিগা টেস্টের দুদিন শেষেই রেজাল্ট যেন চোখের সামনে ভাসছে অনেকের। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ করতে পেরেছে মাত্র ১০৩ রান। জবাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দারুণ লড়াই করে তুলেছে ২৬৫ রান। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ২ উইকেটে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৫০ রান। এখনো ১১২ রানে পিছিয়ে বাংলাদেশ। ইনিংস হার এড়াতে ১১২ রান টপকাতে হবে বাংলাদেশ। টপকালেও কত রানের লিড দিতে পারবে বাংলাদেশ, তা নিয়ে আছে যথেষ্ট সংশয়। সব মিলিয়ে অ্যান্টিগা টেস্ট বড়জোড় গড়াতে পারে চতুর্থ দিনে। বাংলাদেশের সামনে সম্ভাব্য হার, যদি দ্বিতীয় ইনিংসে বাকি আট ব্যাটার অবিশ^াস্য কিছু না করে।

তারপরও ক্যারিবীয়দের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্ট পঞ্চম দিনে যাবে বলে বিশ^াস বাংলাদেশ দলের পেসার খালেদ আহমেদের এবং এ টেস্টে তিনি জয়ই আশা করছেন দলের হয়। বিরূপ কন্ডিশনে এমন আশা করাটা বোকামি। যদিও টেস্টের রোমাঞ্চ ছড়িয়ে থাকে সেশনে সেশনে। ম্যাচের দুদিন মোটে গড়িয়েছে। দুই ইনিংসের বেশি হয়ে গেছে এতেই। শেষ দিন এখনো অনেক দূরের পথ। প্রথম ইনিংসের যা বাস্তবতা, তাতে বাংলাদেশের সামনে ইনিংস পরাজয়ের চোখরাঙানি আছে এখনো। অ্যান্টিগা টেস্টের শুক্রবার দ্বিতীয় দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের রান ২ উইকেটে ৫০। ইনিংস পরাজয় এড়াতে প্রয়োজন আরো ১১২ রান। ৮ উইকেট হাতে নিয়ে এ ব্যবধান ঘুচিয়ে দিতে পারারই কথা। তবে প্রথম ইনিংসের অভিজ্ঞতা তো এখনো তরতাজা! প্রথম ইনিংসে প্রথম দিন প্রথম সেশনেই ৪৬ রানে ৬ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। পরে অলআউট হয় ১০৩ রানে। উইকেটে যদিও শুরুর সেই আর্দ্রতা এখন আর নেই, সহজ হয়ে এসেছে অনেকটাই। তবে বাংলাদেশের ব্যাটিংয়েরও ভরসা নেই। সাম্প্রতিক সময়ে হুট করে ধস নেমেছে প্রায় প্রতি টেস্টেই।

দ্বিতীয় দিন শেষ বিকেলে তামিম ইকবাল (২২) ও তিনে ‘প্রমোশন’ পাওয়া মেহেদী হাসান মিরাজের (২) মিরাজের বিদায়ের পর অবশ্য বাকি সময়টা নিরাপদে কাটিয়ে দিয়েছেন মাহমুদুল হাসান জয় (৬০ বলে ১৮*) ও নাজমুল হোসেন শান্ত (২৩ বলে ৮*)। প্রথম ইনিংসে ১৫ ওভারের মধ্যে ৬ উইকেট হারিয়েছিল বাংলাদেশ। এবার ২০ ওভারে স্রেফ ২ উইকেট হারানোয় হয়তো বড় কিছু আশা করার সাহস পাচ্ছে দল। দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে সৈয়দ খালেদ আহমেদের কণ্ঠে সেই সাহসের প্রতিধ্বনি। তিনি বলেন, ‘আমরা খেলব জেতার জন্য, ইনশাআল্লাহ। চেষ্টা থাকবে ব্যাটসম্যানরা স্কোরবোর্ডে যত রান দেবে খেলাটা যেন পাঁচ দিনে গিয়ে শেষ হয়। এটাই থাকবে চাওয়া।’ এ সাহসটুকু বাংলাদেশ দেখাতে পারছে খালেদ ও অন্য বোলারদের সৌজন্যে। প্রথম ইনিংসে ১০৩ রানের পুঁজি নিয়েও দুর্দান্ত বোলিং করেছেন বোলাররা। খালেদ নিজে আউট করেছেন উইন্ডিজের সর্বোচ্চ রান করা দুই ব্যাটসম্যান ক্রেইগ ব্রাথওয়েট (৯৪) ও জার্মেইন ব্ল্যাকউডকে (৬৩)। ২ উইকেট নিয়েছেন আরেক পেসার এবাদত হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান একটি। দলের সফলতম বোলার ছিলেন মিরাজ। দেশের বাইরে গত কয়েক টেস্টেই অসাধারন বোলিং করতে থাকা অফ-স্পিনার এবারো নিয়েছেন ৫৯ রানে ৪ উইকেট। অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের শিকার একটি। উইন্ডিজ অলআউট হয়েছে ২৬৫ রানে।

টেস্টে কোনো দলকে প্রথম ইনিংস ২৬৫ রানে থামিয়ে দেওয়া যথেষ্ট বড় সাফল্যই বলা যায়। তবে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস এত কমে শেষ হয়েছে বলেই হয়তো বোলিং সাফল্যের পরও একটু আক্ষেপ করলেন খালেদ। দল এখন তাকিয়ে ব্যাটসম্যানদের দিকে। তিনি বলেন, ‘উনি (অধিনায়ক সাকিব) বলেছিলেন আরো কমে ওদের অলআউট করতে। আমরা চেষ্টা করেছি। হয়তো ১০-২০ রান বেশি হয়েছে। তবে যা হয়েছে, ভালো হয়েছে। উইকেট এখন খুবই ভালো। বোলারদের জন্য অতটা সহায়তা নেই। আমাদের ব্যাটসম্যানরা আশা করি, ভালো খেলবে।’ দ্বিতীয় দিন শেষে বাংলাদেশের হয়ে অপরাজিত আছেন ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় ও নাজমুল হোসেন শান্ত। ওপেনার তামিম ইকবাল ৩১ বলে ২২ রান করে বিদায় নেন জোশেপের বলে উইকেটের পেছনে ডি সিলভার গ্লাভসে ক্যাচ দিয়ে। হুট করে তিনে ব্যাট করতে নামা মেহেদী হাসান মিরাজ এমন সিদ্ধান্তের প্রতিফলন ঘটাতে পারেননি। ৬ বলে মাত্র ২ রান করে তিনিও জোশেফের শিকার। ক্যাচ দেন মায়ার্সের হাতে। জয় ও শান্ত ছাড়া স্বীকৃত ব্যাটার এখন সাকিব, মুমিনুল, লিটন ও সোহান। ম্যাচের রেজাল্ট নিজেদের দিকে নিতে হলে বড় জুটির বিকল্প নাই। সেক্ষেত্রে ক্রিজে মনোযোগ বাড়াতে হবে সাকিবদের। না হলে পাচ দিন নয়, চতুর্থ দিনেই শেষ হয়ে যেতে পারে টেস্ট। বাংলাদেশের কপালে জুটতে পারে হারের লজ্জা।