ঢাকা ও চট্রগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে এবং ডেঙ্গু ও অন্যান্য মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে সরকারের সবধরনের প্রস্তুতি আছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম। এছাড়া যেকোনো দূর্যোগ মোকাবেলা করার সার্মথ্য সরকারের আছে বলেও জানান মন্ত্রী।
রবিবার (১৯ জুন) স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত ঢাকা ও চট্রগ্রাম মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে গৃহীত কার্যক্রমের পর্যালোচনা এবং ডেঙ্গু ও অন্যান্য মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে ৩য় আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
সভায় কর্পোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম, দক্ষিণ সিটি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, চট্রগ্রাম সিটি মেয়র মোঃ রেজাউল করিম চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক জুয়েনা আজিজ, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া স্থানীয় সরকার বিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, ঢাকা ও চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ঢাকা দুই সিটি ও চট্রগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বিভাগ ও সংস্থার কর্মকর্তাগণ অংশগ্রহণ করেন।
মন্ত্রী বলেন, ঢাকা ও চট্রগ্রাম দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুটি শহর। তাই এই দুই মহানগরীর সমস্যা সমাধানে বিশেষ নজর দিয়ে কাজ করা হয়। জলাবদ্ধতা নিরসনে চট্রগ্রাম ও ঢাকা দুই সিটি কর্পোরেশনের অধীন খালগুলো খনন/পুনঃখনন করা হয়েছে।
অনেক খাল দখল হয়েছিলো সেগুলো সিটি কর্পোরেশনের মেয়ররা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী দখলমুক্ত করে পানি চলাচলের উপযোগী করে তুলেছে। যার সুফল নগরবাসী পাওয়া শুরু করেছে।
আগের তুলনায় এখন জলাবদ্ধতা অনেক কমেছে। এপ্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ঢাকা ওয়াসার নিকট থেকে পাওয়া খালের পাশাপাশি দুই সিটি কর্পোরেশন অনেকগুলো খাল দখল মুক্ত করেছে।
অনেক বড় বড় ভবন, মার্কেট, বাস-ট্রাক ইসটেন্ড উচ্ছেদ করা হয়েছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন সাড়ে ছয় একর এবং ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন প্রায় পঁচিশ একর জমি উদ্ধার করেছে। অবৈধ দখল অভিযান এখনো চলমান রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, উত্তর সিটি কর্পোরেশনের নতুন ওয়ার্ড ও নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা ও অবকাঠামো উন্নয়নে ইতোমধ্যে চার হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে প্রকল্প পাশ করা হয়েছে এবং কাজ চলমান রয়েছে। দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনও নতুন প্রকল্প নেয়া হচ্ছে। আমি আশা করি সমস্যা দ্রুত সমাধান হবে।
ডেঙ্গু নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ডেঙ্গুর বিষয়ে বছরের প্রথম থেকেই কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়। এবারও সেটি করা হয়েছে। আমাদের সকল প্রস্তুতি উভয় মেয়র নিয়ে রেখেছেন। যেসমস্ত কীটনাষক, ঔষধ, যন্ত্রপাতি এবং জনবল দরকার তা তাদের কাছে মজুদ আছে।
সারাবিশ্বে বর্তমানে ডেঙ্গু আক্রান্তদের তথ্য তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, সিঙ্গাপুরে ১১ হাজার ৬৭৪ জন, মালয়েশিয়ায় ১৩ হাজার ৬৫১ জন, ইন্দোনেশিয়ায় ২২ হাজার ৩৩১ জন, থাইল্যান্ডে আছে ১ হাজার ৫৮৪ জন, ফিলিপাইনে ৩৬ হাজার ৯৩৮ জন, ভারতে ৮ হাজার ২৭৮ জন।
আর আমাদের দেশে ৭৩০ জন। সার্বিক পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে আমরা এসব দেশ থেকে অনেক ভালো অবস্থানে আছি। তবে এর মানে এই না যে আমরা বসে থাকবো। আমাদের সব প্রস্তুত নেয়া আছে। মানুষকে সচেতন করতে মিডিয়াতে প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
সিলেট-সুনামগঞ্জে ভয়াবহ বন্যা সম্পর্কে মো. তাজুল ইসলাম জানান, বন্যা এতো ভয়ংকর রুপ নিবে এটা সংশ্লিষ্ট কোনো সংস্থা পূর্বাভাস দিতে পারেনি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী বন্যাদূর্গত এলাকায় মানুষের নিকট খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও পানি বিশ্দ্ধুকরণ ট্যাবলেট এবং অন্যান্য জরুরী সেবা পৌঁছে দেয়া হচ্ছে।
ইএস/