চোখ রাঙাচ্ছিল ইনিংস ব্যবধানে হার। সেখান থেকে সাকিব-সোহানের দৃঢ় প্রত্যয়ী ব্যাটিং সে লজ্জা থেকে দেয় মুক্তি। তবে মুক্তি মেলেনি হার থেকে। অ্যান্টিগা টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে বড় ব্যবধানেই হেরেছে বাংলাদেশ। ৮৪ রানের টার্গেটে খেলতে নামা ক্যারিবীয়রা জিতেছে ৭ উইকেটের ব্যবধানে।
দুই টেস্ট ম্যাচ সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আগামী ২৪ জুন গ্রস আইলেটে শুরু হবে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট। সেই টেস্ট জিততে পারলে সিরিজ অন্তত ড্র করতে পারবে বাংলাদেশ।
অ্যান্টিগা টেস্টের রেজাল্ট কী হতে পারে, তা ম্যাচের দুইদিন পরই পরিস্কার হয়েছিল। তৃতীয় দিন শেষে নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল প্রায়। রোববার চতুর্থ দিনে আনুষ্ঠানিকতা সারতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সময় নিল মাত্র সাত ওভার। বাজে হারে ক্যারিবীয় সফর শুরু হলো সাকিবদের।
প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ অল আউট হয়েছিল মাত্র ১০৩ রানে। জবাবে ২৬৫ রান করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দ্বিতীয় ইনিংসেও বাজে অবস্থা ছিল বাংলাদেশের। এক পর্যায়ে মনে হচ্ছিল ইনিংস ব্যবধানে হেরে যাবে সফরকারীরা। তবে সপ্তম উইকেটে সাকিব ও সোহানের জুটি সেই লজ্জা থেকে মুক্তি দেয়। বাংলাদেশ করতে পারে ২৪৫ রান।
এতে মাত্র ৮৪ রানের জয়ের টার্গেট পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শনিবার তৃতীয় দিন শেষে এ লক্ষ্যে খেলতে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ করে ৩ উইকেটে ৪৯ রান। চতুর্থ দিনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দরকার ছিল মাত্র ৩৫ রান, হাতে ছিল সাত উইকেট। ওয়েস্ট ইন্ডিজ লক্ষ্যে পৌঁছে যায় এদিন কোন উইকেট না হারিয়ে, ৮৮/৩।
২৮ রানে জন ক্যাম্বেল ও ১৭ রানে জার্মেই ব্লাকউড ছিলেন অপরাজিত। চতুর্থ দিনের শুরুতে দুজনই ছিলেন সাবলিল। দিনের প্রথম ওভারে খালেদ আহমেদ দেন চার রান। পরের ওভারে ইবাদত হজম করেন দুটি বাউন্ডারি। সব মিলিয়ে এই ওভারে আসে ১০ রান। পরের ওভারে খালেদ দেন মাত্র এক রান। পঞ্চম ওভারে ইবাদত দেন ছয় রান। জয়ের জন্য দরকার তখন ১৪ রান। চতুর্থ ওভারে খালেদ হজম করেন দুই বাউন্ডারি। জয় থেকে তখন ওয়েস্ট ইন্ডিজ দূরে মাত্র ৬ রানের।
ষষ্ঠ ওভারে বোলার পরিবর্তন। আসেন স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ। ওভারটি নেন তিনি মেডেন। কিন্তু পরের ওভারেই খেলা শেষ। বল করতে আসেন পার্ট টাইম বোলার নাজমুল হোসেন শান্ত। দ্বিতীয় বলে ক্যাম্বেলের বাউন্ডারি। শেষ বলে ছক্কা হাকিয়ে জয় নিশ্চিত করেন তিনি।
৬৭ বলে ৫৮ রানে অপরাজিত থাকেন ক্যাম্বেল। ৫৩ বলে ২৬ রানে অপর অপরাজিত ব্যাটার জার্মেই ব্লাকউড। এই ইনিংসে বল হাতে বাংলাদেশের হয়ে খালেদ আহমেদ নেন তিন উইকেট। বাকিরা পাননি উইকেটের দেখা।
অ্যান্টিগা টেস্টে বাংলাদেশকে ভুগিয়েছে আসলে বাজে ব্যাটিং। প্রথম ইনিংসে ছয় ব্যাটার রানের খাতা খুলতে পারেননি। ব্যতিক্রম ছিলেন সাকিব। নতুন করে অধিনায়কত্বের টেস্টের প্রথম ইনিংসেই হাঁকান ফিফটি। ৬৭ বলে করেন ৫১ রান। এছাড়া তামিমের ২৯ রান বাদ দিলে আর কেউ গড়তে পারেননি প্রতিরোধ।
দ্বিতীয় ইনিংসে চোখ রাঙাচ্ছিল ইনিংস হার। দলীয় ১০৯ রানে ছয় উইকেট পতনের পর মনে হচ্ছিল ম্যাচ শেষ হয়ে যাবে তৃতীয় দিনেই। তবে সপ্তম উইকেট জুটিতে দাঁড়িয়ে যান সেই সাকিব। তার সঙ্গে যোগ্য সঙ্গ দেন কিপার ব্যাটার নুরুল হাসান সোহান। দুজনই পান ফিফটির দেখা। এই জুটিতে ১২৩ রানের সুবাদে লিড নেয় বাংলাদেশ।
দলীয় ২৩২ রানের মাথায় সাকিব বিদায় নেন রোচের বলে ব্রাথওয়েটের হাতে ক্যাচ দিয়ে। ৯৯ বলে তার রান ৬৩। দলীয় স্কোরে ছয় রান যোগ হওয়ার পর বিদায় নেন সোহানও। ১৪৭ বলে সর্বোচ্চ ৬৪ রান আসে তার ব্যাট থেকে। এই দুজনের বিদায়ের পর টেল এন্ডাররা গেছেন আর এসেছেন। ২৪৫ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশের ইনিংস।