জ্যৈষ্ঠ শেষে আষাঢ় এলেও উপকূলীয় নদ-নদীতে দেখা নেই ইলিশের। জেলেরা বলছেন, মূলত জ্যৈষ্ঠ মাস থেকেই ইলিশের মৌসুম শুরু হয়। অথচ গেল দুই-তিন বছর ধরে সমুদ্রঘেঁষা পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীর নদ-নদীতে এই সময়ে ইলিশ মিলছে না।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, জলবায়ু পরিবর্তন ও নিষিদ্ধ জাল ব্যবহার করে মাছ শিকার করার কারণে দিন দিন নদ-নদীতে ইলিশ কমছে।
আর মৎস্য বিভাগের মতে, ইলিশ মৌসুম কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে। তবে খুব শিগগিরই জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়বে বলে আশা করছেন তারা।
স্থানীয় জেলেরা জানান, মৌসুমের শুরু থেকে উপকূলীয় নদ-নদীতে ইলিশের আকাল চলছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার আগুনমুখা, বুড়াগৌরাঙ্গ, রাবনাবাদ ও দাড়ছিড়া নদীতে ইলিশ একেবারেই কম ধরা পড়ছে। দেখা মিলছে না কাক্সিক্ষত ইলিশের। এ পরিস্থিতিতে নদীতে যাওয়ার আগ্রহ হারাচ্ছেন জেলেরা।
উপজেলার চরমোন্তাজ, চালিতাবুনিয়া, মৌডুবি, কোড়ালিয়া, নিজকাটাসহ মৎস্য আহরণের কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, জেলেদের অনেকেই নৌকা-ট্রলার নিয়ে ঘাটে অলস সময় পার করছেন।
ট্রলার নিয়ে উপজেলার চরমোন্তাজ স্লুইস ঘাটে অলস সময় পার করা জেলে মাসুম মিয়া বলেন, ‘জাইল্ল্যারা (জেলে) এইবার শ্যাষ। নদীতে কোনো মাছ নাই। হারাদিন জাল হালাইয়া রাখলেও একটা মাছ পাওয়া যায় না।’
জেলেদের ভাষ্য, বছরের ৩৬৫ দিনের মধ্যে কয়েক ধাপে ১৪৭ দিন ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ে হাজারও জেলের অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড ভেঙে গেছে।
জেলেরা সরকারি যে চাল পায়, তাও অপ্রতুল। অনেকে তা-ও পান না। ফলে তাদের জীবন কাটে চরম দুর্দশায়। এর মধ্যে এখন নদ-নদীতেও ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে জেলেদের দুঃখ-কষ্ট যেন শেষই হচ্ছে না।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ইলিশের চলাচল পথ এবং জীবনচক্রে অল্পস্বল্প প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা
মো. আনোয়ারুল ইসলাম বাবুল বলেন, ‘প্রজননকালীন সময়ে ইলিশ সাগরে অবস্থান করে এবং মৌসুম কিছুটা পরিবর্তন হওয়ায় নদ-নদীতেও ইলিশ কম ধরা পড়ছে। তারা আশা করছেন, বৃষ্টিবর্ষা শুরু হলেই শিগগিরই নদ-নদীতে ঝাঁকে ঝাঁকে মাছের দেখা মিলবে।’