logo
আপডেট : ২২ জুন, ২০২২ ১২:৫৭
বন্যা পরিস্থিতি
গাইবান্ধায় ১২৬ বিদ্যালয় বন্ধ, নতুন এলাকা প্লাবিত
রফিকুল ইসলাম রফিক, গাইবান্ধা

গাইবান্ধায় ১২৬ বিদ্যালয় বন্ধ, নতুন এলাকা প্লাবিত

পানি ওঠে যাওয়ায় গাইবান্ধার একটি স্কুল বন্ধ রয়েছে। ছবিটি মঙ্গলবার গাইবান্ধা সদর উপজেলা থেকে তোলা

গাইবান্ধায় নদনদীর পানি বেড়েই চলছে। উজানের ঢলে সবক’টি নদনদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার নিম্নাঞ্চলসহ নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। অনেক গ্রামীণ সড়ক

পানির নিচে ডুবে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। এরই মধ্যে সদর, সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি, সাঘাটা উপজেলার শতাধিক পরিবার ভাঙনে বাড়িঘর, ভিটামাটি সব হারিয়েছেন। এসব এলাকায় পানিবন্দি হয়েছে হাজারো মানুষ।

জেলার বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় বন্যার পানি ওঠায় ১২৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাময়িক পাঠদান বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে মাধ্যমিক উচ্চ বিদ্যালয়ের সংখ্যা ১৫ এবং চার উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ১১১। এছাড়া ফুলছড়ি উপজেলায় ৬২, সুন্দরগঞ্জে ২৫, গাইবান্ধা সদরে ১৬, সাঘাটায় আটটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে।

গাইবান্ধা জেলা মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয় সূত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে চার উপজেলায় আকস্মিক বন্যার পানি বিদ্যালয়ের মাঠ ও কক্ষে ঢুকেছে।

এরই মধ্যে ফুলছড়ি ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলার অবস্থা ভয়াবহ। সরকারি-বেসরকারি অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যার পানি ঢুকেছে। এছাড়া ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট পানির নিচে তলিয়ে গেছে। চার উপজেলায় অন্তত ৪০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়েছে পড়েছেন।

অনেক ইউনিয়নের সঙ্গে উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। উড়িয়া, গজারিয়া, ফুলছড়ি ফজলুপুর, এরেন্ডাবাড়ি ইউনিয়নের সড়ক পানির নিচে তলিয়ে গেছে। সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।

রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে পানি ওঠায় বাধ্য হয়ে সাময়িক পাঠদান বন্ধ রয়েছে। শিক্ষক ও অভিভাবকরা বলছেন, বর্ষা মৌসুমে উড়িয়ার কিছু অংশ অল্প বৃষ্টিতেই পানিবন্দি হয়ে যায়। বন্যার কারণে চারদিকে এখন শুধু পানি আর পানি। বিদ্যালয়ের কক্ষে পানি ঢুকেছে। এ অবস্থায় অনেক কোমলমতি শিক্ষার্থীর জীবন ঝুঁকিতে রয়েছে।

ফুলছড়ির চর খোলাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহীন সরকার বলেন, ‘উপজেলার সবক’টি ইউনিয়নে এখন বন্যার পানি। স্কুলের অফিস ও শ্রেণিকক্ষে পানি ঢুকেছে।

হাজারো মানুষ পানিবন্দি। চারদিকে বন্যার পানি। রাস্তাঘাট সব পানির নিচে। ঘরবাড়ি ডুবে যাচ্ছে। শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসতে পারছে না। বাধ্য হয়ে পাঠদান সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে।’

রতনপুর গ্রামের আজল মিয়া নামে এক অভিভাবক বলেন, ‘গ্রামের চারদিকে বন্যার পানি। বাড়িঘর পানির নিচে নদীতে ভেঙে যাচ্ছে। আমরা ঘর থেকে বের হতে পারছি না। পানিবন্দি হয়ে আছি। স্কুল ঘরে পানি উঠেছে। বাচ্চাদের কীভাবে স্কুলে পাঠাই।’

গাইবান্ধা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার হোসেন আলী মুঠোফোনে বলেন, ‘জেলায় চার উপজেলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানি প্রবেশ করায় পাঠদান সাময়িক বন্ধ রয়েছে। এতে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি হচ্ছে। বিদ্যালয় থেকে পানি নেমে গেলে আবার পাঠদান শুরু করা হবে।’

গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, ঘাঘট নদীর পানি বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে এবং ব্রক্ষপুত্র নদের পানি প্রবাহিত হচ্ছে বিপৎসীমার ১২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে। গত ২৪ ঘণ্টায় (মঙ্গলবার বিকেল ৩টা) ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ছয় সেন্টিমিটার ও ঘাঘট নদীর পানি ছয় সেন্টিমিটার বেড়েছে।