৬ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্পে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে আফগানিস্তান। দেশটিতে ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা এক হাজার ছাড়িয়েছে। আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে অনেক মানুষের মৃত্যু হয়েছে মাটির তৈরি ঘরে চাপা পড়ে, যাদের এখনো চিহ্নিত করা যায়নি।

দক্ষিণ পূর্বের পাকতিকা প্রদেশের ভয়াবহ এই ভূমিকম্পের পর জাতিসংঘ জরুরী ভিত্তিতে খাদ্য সহায়তা এবং আশ্রয়ের ব্যবস্থা করার চেষ্টা চালাচ্ছে। ভারী বৃষ্টিপাত এবং এবং উদ্ধারকাজে ব্যবহৃত সরঞ্জামসহ অন্যান্য জিনিসের অভাবে উদ্ধার তৎপরতা ব্যাহত হচ্ছে।

যারা বেঁচে গেছেন এবং যারা উদ্ধার তৎপরতা চালাছেন, তারা বিবিসিকে বলেছেন, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলের কাছের গ্রামগুলো একবারে ধ্বংস হয়ে গেছে। রাস্তা, মোবাইল ফোনের টাওয়ার সব ভেঙ্গে পড়েছে।

তারা আশঙ্কা করছেন, মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। দুই দশকের মধ্যে ভয়াবহ এই ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি সামাল দেয়া তালেবানের জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এই ভূমিকম্পের কেন্দ্র ছিল দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় খোস্ত শহর থেকে ৪৪ কিলোমিটার দূরের একটি স্থানে। স্থানীয় সময় রাত দেড়টায় এই ভূমিকম্প আঘাত হানে, যখন বেশিরভাগ মানুষ ঘুমিয়ে ছিলেন।

ইউরোপিয়ান মেডিটেরিয়ান সিসমোলজিকাল সেন্টারের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানাচ্ছে, ভূমিকম্পটি আফগানিস্তান, পাকিস্তান এবং ভারতের ৫০০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে অনুভূত হয়েছে।

তারা বলছে, আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল এবং পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদেও ভূমিকম্প টের পাওয়া গেছে বলে স্থানীয় মানুষরা জানিয়েছেন।

ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভে জানাচ্ছে, ভূমিকম্পটি ছিল ৬.১ মাত্রার।

আফগানিস্তান এখন মানবিক এবং অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে রয়েছে। তালেবানের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা আবদুল কাহার বালখি বলেছেন, ‘এখন মানুষকে যেভাবে সাহায্য করা দরকার, তালেবান সরকারের এখন অর্থনৈতিক দিক থেকে সেভাবে সাহায্য করার সামর্থ্য নেই।’

সাহায্য সংস্থা, পার্শ্ববর্তী দেশ এবং বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলো সাহায্য করছে।

তিনি বলেছেন, ‘এই সহযোগিতা বড় আকারে দ্রুত করতে হবে, কারণ এই ভূমিকম্প ভয়ংকর যেটা কয়েক দশক পর হয়েছে।’

জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, আফগানিস্তানে দুর্যোগ মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাগুলো পুরো শক্তি নিয়ে কাজ করছে।

তিনি উল্লেখ করেছেন, স্বাস্থ্য বিষয়ক দল, চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহ, খাদ্য, এবং জরুরী আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা- এসব কর্মকাণ্ড চলছে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে।

বেশিরভাগ হতাহত হয়েছে পাকতিকা প্রদেশে গ্যায়ান এবং বারমাল জেলায়। সেখানে একটি পুরো গ্রাম ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।