সময়টা বর্ষাকাল। এই রোদ তো এই বৃষ্টি। আর একবার বৃষ্টিতে ভিজলেই তা শুকাতে যত ঝামেলা। বাড়িতে তো হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহারের সুযোগ পাচ্ছেন কিন্তু অফিসে! পথেই যদি ভিজে যান তখনই বাঁধবে সমস্যা।
পরিবেশের এই বিরূপ প্রভাব আমাদের ত্বক ও চুলে পড়েই। তাই পরিবেশ বদলের সঙ্গে সঙ্গে চুলেরও যত্ন নেওয়া চাই। যত আগে থেকে যত্ন নেওয়া যায় ততটাই ভালো ফল পাওয়া যায়।
অনেকেই বিরূপ পরিবেশের কারণে চুলে ক্ষতি হওয়ার পর যত্ন নিতে শুরু করেন। তখন এই ক্ষতি মেরামতে বেশি সময় আরো যত্ন দরকার হয়। আর কে না জানে প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ উত্তম। তাই এখন থেকেই শুরু করুন বৃষ্টির জন্য চুলকে প্রস্তুত করার।
আবহাওয়া অনুযায়ী চুলের যত্নের জন্য দৈনন্দিন একটি রুটিন করে নিতে পারেন। রুটিন ধরে যত্ন নিলে ধাপে ধাপে চুলের উন্নতি হয়। চুল মজবুত ও টেকসই হয়।
রোদ-বৃষ্টিকে প্রতিরোধ
রোদ ও বৃষ্টিকে ভয় নয়, জয় করতে হবে। বাইরে রোদ থাকলে বেরোনোর আগে চুলে ইউভিএফ-সমৃদ্ধ সান প্রটেক্টর ক্রিম ব্যবহার করতে হবে। ত্রিশ বা তারও অধিক ইউভিএফ ক্ষমতাসম্পন্ন সান প্রটেক্টর ক্রিম চুলের সুরক্ষায় বেশি কাজ করে। রোদে গেলে চুল ঢেকে রাখাই ভালো। এতে রোদ ও ধুলা-ময়লা থেকে দূরে থাকা যায়। এ ছাড়া রোদ-বৃষ্টিতে ছাতা ব্যবহার, ক্যাপ, ওড়না বা স্কার্ফ ব্যবহার করলেও চুল ভালো থাকবে।
বৃষ্টি থেকে দূরে
বৃষ্টির পানিতে এক ধরনের এসিড থাকে। এ ছাড়া বৃষ্টি শুরুর প্রথম দিকের পানিতে বাতাসের ধুলা-ময়লা মিশে থাকে। এমন পানিতে চুল ভিজলে মাথার ত্বক ও চুলের ক্ষতি হয়। মাথার ত্বকে স্যাঁতসেঁতে ভাব হয়। এ থেকে জন্ম নিতে পারে ক্ষতিকর ছত্রাক। পরবর্তী সময়ে চুলের গোড়া নরম হয়ে যায়। চুল পড়তে শুরু করে। খুশকির সংক্রমণ হয়।
মাথার ত্বক ও চুলের যত্ন
এই সময় বৃষ্টিতে ভিজে ও রোদে ঘেমে মাথার ত্বকে ময়লা জন্মায় বেশি। এ ছাড়া বাতাসের ধুলা-ময়লার সংস্পর্শে চুল ও মাথার ত্বক আরো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ জন্য নিয়মিত চুল ও মাথার ত্বক পরিষ্কার করতে হবে। প্রতিদিন বাইরে বেরোনোর আগে ঠান্ডা পানিতে গোসল করতে হবে।
এক দিন পরপর শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হবে। এ সময় নিম, অ্যালোভেরার মতো প্রাকৃতিক উপাদানসমৃদ্ধ শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহার করতে পারলে ভালো ফল পাওয়া যাবে। মাথার ত্বক ও চুল পরিষ্কারের পাশাপাশি মাসে দু’বার ম্যাসাজ করাও ভালো। এতে মাথার ত্বকে রক্তসঞ্চালন বাড়ে, ফলিকলস বা চুলের গোড়া শক্ত হয়।
পর্যাপ্ত পানি পান
চুল ও ত্বকের জন্য পানি খুব উপকারী। শরীর পানিশূন্যতায় ভুগলে ত্বক ও চুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পানির অভাবে ত্বকের সঙ্গে চুলও শুষ্ক হয়ে পড়ে। এ জন্য ঘুম থেকে উঠেই প্রথমে এক গ্লাস পানি পান করুন। দিন-রাত মিলিয়ে দুই থেকে আড়াই লিটার পানি পান করা জরুরি। ফলের শরবত, জুস ও রসালো ফলও খেতে পারেন।
ডিম ও লেবুর প্যাক
একটি ডিমের সাদা অংশ, দুই টেবিল চামচ জলপাই তেল, এক কাপ কাঁচা দুধ ও এক টেবিল চামচ লেবুর রস মিশিয়ে নিন। এই মাস্ক ১৫-২০ মিনিট চুলে লাগিয়ে শ্যাম্পু করে ফেলুন। বৃষ্টিভেজা চুলের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করবে এই প্যাক।