logo
আপডেট : ২৫ জুন, ২০২২ ১৯:৪১
দেশে দেশে পদ্মা সেতু উদ্বোধন উদযাপন
কূটনৈতিক প্রতিবেদক

দেশে দেশে পদ্মা সেতু উদ্বোধন উদযাপন

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের ৮১টি মিশনে বাংলাদেশের স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠান জাঁকজমকপূর্ণ ভাবে উদযাপন করা হয়েছে।

 

এ উপলক্ষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় উক্ত অনুষ্ঠানটি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে ও ফেসবুক পেজ-এ সরাসরি লাইভ সম্প্রচার করছে। মিশনগুলোর অভিন্ন ওয়েবসাইটেও একযোগে লাইভ সম্প্রচার করছে।

 

শনিবার (২৫ জুন) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, এর ফলে সারাবিশ্বের প্রতিটি কোণে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সম্প্রচার সম্ভব হয়েছে যা মন্ত্রণালয় এর ডিজিটাল সক্ষমতার একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। এর মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশের আরও একটি ডিজিটাল পদচিহ্ন সারা বিশ্বে অংকিত হয়েছে।

 

ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাস ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্যে জাতির দীর্ঘ প্রতীক্ষিত স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উদযাপন করেছে। এ উপলক্ষে শুক্রবার রাতে দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে বাংলাদেশে পদ্মা সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের আগে এক আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়।

 

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. সহিদুল ইসলাম বলেন, পদ্মা সেতু আমাদের অহংকার। এটি আমাদের গৌরব ও আত্মমর্যাদার প্রতীক। দেশ-বিদেশে সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী ও বিচক্ষণ সিদ্ধান্ত ও নেতৃত্বের পাশাপাশি দৃঢ় সংকল্প ও মনোবলের কারণে দেশের বৃহত্তম অবকাঠামো প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছে।

 

বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট জুনাইদ আহমেদ বলেন, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ দেশের জন্য বিশাল গৌরবের ব্যাপার। গত কয়েক বছরে দেশের যোগাযোগ খাতে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে এবং পদ্মা সেতু এই খাতকে আরও শক্তিশালী করেছে। পদ্মা সেতু বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশের মর্যাদা অর্জনের পাশাপাশি উচ্চ আয়ের দেশে পরিণত করায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।

 

নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলে পদ্মা সেতুর শুভ উদ্বোধনের ঐতিহাসিক মুহূর্ত উদযাপন করা হয়। এর জন্য কনস্যুলেটে বাংলাদেশ সময়ের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে এক বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

 

নিউইয়র্কে বসবাসকারী বীর মুক্তযোদ্ধা, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিসহ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশির অংশগ্রহণে কনস্যুলেটে এক আনন্দঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। কনসাল জেনারেল ড. মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম পদ্মা সেতু নির্মাণে প্রবাসীদের অবদানের কথা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন।

 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক পদ্মা সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচার দেখালো ব্রুনাইয়ে বাংলাদেশ হাইকমিশন। প্রবাসী বাংলাদেশের নাগরিকেদের সক্রিয় অংশগ্রহণে এক বর্ণাঢ্য অনুষ্টান আয়োজন করে ব্রুনাইস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস। অনুষ্ঠানের শুরু হয় পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত ও বিশেষ প্রার্থনার মধ্য দিয়ে। এরপর পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক প্রেরিত বানী পাঠ করে শোনান হাইকমিশনের কর্মকর্তারা। লাইভ সম্প্রচার শুরুর পূর্বে আগত বাংলাদেশের নাগরিকদের উদ্দীপিত ও বিমোহিত করতে পদ্মা সেতুর উপর নির্মিত ‘থিম সং’ শোনানো হয়।

 

ব্রুনাইয়ে বাংলাদেশ হাইকমিশন জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্যবহুল ও আবেগঘন বক্তৃতা সবাইকে অনুপ্রানিত ও দেশ প্রেমের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করে। প্লাক উন্মোচন করে পদ্মা সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের সময় সবাই হাততালি দিয়ে স্বাগত জানান এবং নিজস্ব অর্থায়নে এরকম একটি ঐতিহাসিক, জটিল ও সুন্দর স্থাপত্য নির্মানের জন্য সবাই প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। পরিশেষে উপস্থিত সবাই মিলে একটি কেক কাটার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের পরিসমাপ্তি ঘটে। বাংলাদেশের অপ্রতিরোধ্য অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় এই পদ্মা সেতু বিশেষ সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে সবাই মন্তব্য করেন

 

ভিয়েতনামের বাংলাদেশ দূতাবাসেও পদ্মা সেতুর শুভ উদ্বোধন উদযাপন করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সামিনা নাজ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী ও বলিষ্ঠ পদক্ষেপ এবং যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণের ফলে বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ সম্ভব হয়েছে। এ সেতু নির্মাণের ফলে রাজধানীর সঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার নিরবচ্ছিন্ন, সাশ্রয়ী ও দ্রুত যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হলো। এই সেতুর ফলে সার্বিকভাবে দেশের উৎপাদন ১ দশমিক ২৩ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। প্রতিবছর ০.৮৪ শতাংশ হারে দারিদ্র্য নিরসনের মাধ্যমে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে এ সেতু অনন্য অবদান রাখবে।