শরীয়তপুর : পদ্মা সেতুর সুবাদে নানা উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে পাল্টে গেছে পদ্মা সেতুর দক্ষিণ প্রান্তের জেলা শরীয়তপুর। এরই মধ্যে নানা অবকাঠামো নির্মাণের মাধ্যমে নতুন আঙ্গিকে সেজেছে শরীয়তপুর জেলা পরিষদ।
জনপ্রতিনিধি ও অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানিয়েছেন, শরীয়তপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছাবেদুর রহমান খোকা সিকদার জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই জেলা পরিষদ শতভাগ ঘুষ ও দুর্নীতিমুক্ত হয়েছে। সব উন্নয়নমূলক কাজে স্বচ্ছতা ফিরে এসেছে।
ছয়টি উপজেলার ডাকবাংলো ও অন্যান্য অবকাঠামোসহ মোট ৪২২.৮২ একর জায়গা নিয়ে শরীয়তপুর জেলা পরিষদের অবস্থান। এর মধ্যে রয়েছে বাগান, বাড়ি, ভিটা, রাস্তা, পুকুর, খালসহ অন্যান্য অবকাঠামো। ৩.২১ একর জায়গায় জেলা পরিষদ ভবন ও ৪৬.৩৩ একর জায়গাজুড়ে আছে জেলা পরিষদ কোয়ার্টার।
পূর্বে এসব অবকাঠামো জরাজীর্ণ অবস্থায় থাকলেও বর্তমান সরকারের অধীনে গত পাঁচ বছরে নানা উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে পাল্টে গেছে শরীয়তপুর জেলা পরিষদের চিত্র। দৃষ্টিনন্দন জেলা পরিষদ ভবন ও কোয়ার্টার, আকর্ষণীয় গেট, চারপাশে গাইড ওয়াল নির্মাণ করা পুকুর, শে^তপাথরের নির্মিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুদর্শন ম্যুরাল, পরিষদ চত্বরে পানির ফোয়ারা, নানা ফুল ও ফলের বাগান দেখে মুগ্ধ হবে যে কেউ। ২০২০-২১ অর্থবছরে ভেদরগঞ্জ উপজেলায় প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে চারতলাবিশিষ্ট অত্যাধুনিক ডাকবাংলো।
দুই কোটি সাড়ে সাত লাখ টাকা ব্যয়ে সখিপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ আবুল হাসেম মিয়া অডিটোরিয়াম কাম-কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণ চলমান রয়েছে। ৪৩ কোটি টাকা ব্যয়ে শরীয়তপুর সদর ডাকবাংলোস্থলে অত্যাধুনিক মার্কেট নির্মাণ সমাপ্তির পথে। আট কোটি টাকা ব্যয়ে গোসাইরহাট শামসুর রহমান কলেজে অডিটোরিয়াম কাম-কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণ সমাপ্ত হয়েছে।
এ ছাড়াও শরীয়তপুর সদর, গোসাইরহাট, ভেদরগঞ্জ, ডামুড্যা ও জাজিরা উপজেলার বিভিন্ন সড়কের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ছয়টি যাত্রীছাউনি নির্মাণসহ জেলা পরিষদের নানা উন্নয়নের ছোঁয়ায় বর্তমান সরকারের প্রশংসায় পঞ্চমুখ জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয়রা।
জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য মো. হারুন অর রশীদ রাড়ী, অ্যাডভোকেট হাবিবুন নাহার নিপা ও জেলা আওয়ামী লীগ নেতা শফিকুল ইসলাম রাড়ীসহ অনেকেই বলেন, বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছাবেদুর রহমান খোকা সিকদার ও প্রধান নির্বাহী মো. শামীম হোসেনের নেতৃত্বে নানা উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে জেলা পরিষদ আজ নতুন রূপ ধারণ করেছে।
জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী মো. শামীম হোসেন বলেন, নানা উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে ফুলে-ফলে সজ্জিত হয়ে পুরোনো রূপ পাল্টিয়ে শরীয়তপুর জেলা পরিষদ একেবারেই আধুনিক রূপ ধারণ করেছে। বর্তমান সরকারের নানামুখী উন্নয়নমূলক পদক্ষেপে শরীয়তপুরও পিছিয়ে নেই। জেলা পরিষদের পাশাপাশি এর উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে ছয়টি উপজেলা সদরেও। বিভিন্ন সামাজিক অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি জনকল্যাণমূলক কাজ করে যাচ্ছে জেলা পরিষদ। এবারও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন ছাবেদুর রহমান খোকা সিকদার।
জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ছাবেদুর রহমান খোকা সিকদার বলেন, দীর্ঘদিন শরীয়তপুর ছিল অবহেলিত এক জনপদ।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকন্যা সাহসী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রচেষ্টায় স্বপ্নের পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন হওয়ার কারণেই দেশের দক্ষিণবঙ্গের ২১ জেলার মানুষের ভাগ্য পাল্টে গেছে। সেই সাথে দেশের সবচেয়ে অনুন্নত জেলা হিসেবে পরিচিত শরীয়তপুরের মানচিত্র পাল্টে গেছে। উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে জেলার সর্বত্র। উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে জেলা পরিষদেও।
এখানে বিভিন্ন কলকারখানা, শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে। অবহেলিত শরীয়তপুর অন্য ১০টি জেলার মতোই উন্নত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ছাবেদুর রহমান খোকা সিকদার।
ভোরের আকাশ/জেএস/