উন্নত দেশ গড়ার স্বপ্নে বাংলাদেশের অগ্রগতির ধারাবাহিকতায় নিষ্ঠার সঙ্গে দেশ ও মানুষের উন্নয়নের কাজে নিজেকে সমর্পণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার সফল নেতৃত্বের পাল্লাটি কেবলই ভারী হচ্ছে। আন্তর্জাতিক দুনিয়া মহামানবী হিসেবে তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ। বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থা, রাজনৈতিক নেতা ও গণমাধ্যম বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নানা উপাধিতে ভূষিত করেছেন। তার নেতৃত্বে উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে রোলমডেল হিসেবে অনুসরণের বিষয় বিশ্বময় ব্যাপক আলোচিত। আন্তর্জাতিক উন্নয়ন ও সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের চলমান অগ্রযাত্রার ভূয়সী প্রশংসা করে বলছেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশ দ্রুত সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিচক্ষণতা আর দূরদর্শিতা প্রমাণে শুধু দক্ষিণ এশিয়ারই নয়, বিশ্বের অন্যতম শক্তিধর ও জনপ্রিয় নেত্রী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছেন।
বলতে দ্বিধা নেই, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের মানুষ নিজেদের মেধা আর মননে দেশকে নিয়ে যাচ্ছে কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে। বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশ এখন উন্নয়ন আর অগ্রগতির রোলমডেল। বাংলাদেশের সফল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাফল্যের তালিকা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। বিশ্বের সৎ পাঁচজন সরকারপ্রধানের তালিকায় তৃতীয় স্থানে আছে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম। বিশ্বের ১০০ ক্ষমতাধর নারীর তালিকায় তার অবস্থান ৩৩তম। বিশ্বে ১০০ প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় শেখ হাসিনার নাম রয়েছে। লিডার্স ক্যাটাগরিতে শেখ হাসিনা ২৭ জনের মধ্যে ২১তম। একজন নারী হয়েও দক্ষিণ এশিয়ায় তার নেতৃত্ব ও রাজনৈতিক সাফল্য এখন বহুল আলোচিত। শুধু বাংলাদেশ বা উপমহাদেশে নয়, রাজনৈতিক নেতৃত্বগুণে সমগ্র দক্ষিণ এশিয়াতে একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে উঠে এসেছেন তিনি। এ অবস্থানে যেতে তাকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে শক্তিশালী নেতিবাচক চক্রের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয়েছে। সাম্রাজ্যবাদ ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে সাহসী ভূমিকা নিতে হয়েছে। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামতে হয়েছে।
দেখা গেছে, উন্নয়নশীল দেশগুলোর স্বার্থ রক্ষা করার জন্য শেখ হাসিনার ভূমিকা ও নেতৃত্ব এখন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত হচ্ছে। আঞ্চলিক শান্তি প্রতিষ্ঠায় তার সাফল্যের জন্য তিনি শান্তি পুরস্কার পেয়েছেন। জলবাছু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে সংগ্রামের জন্য তিনি পেয়েছেন ‘চ্যাম্পিয়ন অব দা আর্থ’ পদক। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিশ্বভারতী থেকে পেয়েছেন ‘ দেশিকোত্তম’ পদক। বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থা শেখ হাসিনাকে ‘বিশ্ব মানবতার বিবেক’, ‘ক্যারিসমেটিক লিডার’, ‘প্রাচ্যের নতুন তারকা’, ‘বিশ্বের নেতা’, ‘বিশ্বশান্তির দূত’, ‘নারী অধিকারের স্তম্ভ’, ‘মানবিক বিশ্বের প্রধান নেতা’, ‘বিশ্বমানবতার আলোকবর্তিকা’ প্রভৃতি উপাধিতে ভূষিত করেছে। এ ছাড়া কর্মদক্ষতা ও মহানুভবতার জন্য শেখ হাসিনা বিশ্ববাসীর কাছ থেকে অসংখ্য পদক ও সম্মাননা পেয়েছেন।
উন্নত, ভ্রাতৃত্ব ও সৌহার্দ্যপূর্ন এশিয়া গড়ার আহ্বান জানিয়ে প্রশংসিত হয়েছেন তিনি। নানা চ্যালেঞ্জ ও সংঘাতে জর্জরিত বর্তমান বিশ্ব কাঠামোতে কীভাবে শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং সমতার ভিত্তিতে উন্নয়নকে এগিয়ে নেয়া যায়, সে বিষয়ে নিজের ভাবনাকে তিনি ‘দ্য ফিউচার অব এশিয়া’ সম্মেলনে তুলে ধরে বলেছেন- ‘মানবতা আর শুভ শক্তির জয় হবেই। বিশ্ব আজ অনেক প্রত্যাশা নিয়ে তাকিয়ে আছে আমাদের দিকে, এই উদীয়মান এশিয়ার দিকে। উদ্ভাবনে, অনুপ্রেরণায় বিশ্বকে শান্তি আর সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিতে এশিয়াকেই নেতৃত্ব দিতে হবে।’
এই সম্মেলনে তিনি আরো বলেন, বৃহত্তর ঐক্যের স্বার্থে বিশ্বের শক্তিশালী অর্থনীতির দেশগুলোকে আরও উদ্ভাবনী অনুশীলনের মধ্য দিয়ে যেতে হবে। সবার জন্য লাভজনক হয়, সব মানুষের যাতে মঙ্গল হয়- তেমন একটি কৌশল নির্ধারণ করতে হবে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে, যা গড়ে উঠবে পারস্পরিক আস্থা ও সম্মান এবং ঐক্যবদ্ধ উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির চেতনা নিয়ে।’ আঞ্চলিক রাজনীতির বাইরে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতেও তিনি নিজের আধিপত্য বজায় রেখেছেন। বিশ্বে শান্তি ও মানবতা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রেও তিনি অনন্য নজির স্থাপন করেছেন। তিনি অধিকারবঞ্চিত অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে পৃথিবীর বুকে তৈরি করেছেন এক নতুন দৃষ্টান্ত।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, দক্ষিণ এশিয়ায় অন্যান্য নারী নেত্রী যা পারেননি বাংলাদেশে শেখ হাসিনা তা পেরেছেন। তিনি পিতার ঘাতকদের বিচার এবং দণ্ড নিশ্চিত করেছেন, যার দৃষ্টান্ত ইতিহাসে প্রায় বিরল। তিনি দুস্তর বাধা অতিক্রম করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেছেন। বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বিপদ ঘনিয়েছিল আইএসের মুখোশ ধারণ করে একদল ধর্মান্ধ সন্ত্রাসীর সন্ত্রাস সৃষ্টি। ব্লগার হত্যা থেকে শুরু করে, রেস্টুরেন্টে, ঈদগাহে হামলা, সংখ্যালঘু হত্যা ইত্যাদি দ্বারা বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ধ্বংস করার ভয়াবহ চেষ্টা হয়েছিল। হাসিনা সরকার তা দমন করেছে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মোড়লদের রক্তচক্ষুকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বঙ্গবন্ধুর খুনি ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকাজ সম্পন্ন করা, নিজ টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণ, অনুন্নত দেশকে মধ্যআয়ের দেশে রূপান্তর, নারীর ক্ষমতায়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, কৃষি, তথ্যপ্রযুক্তিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে যুগান্তকারী উন্নয়ন বিপ্লব ঘটিয়ে বিশ্ববাসীকে তাক লাগিয়ে এদেশকে উন্নয়নের রোলমডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
দূরদৃষ্টিসম্পন্ন, সৎ-সাহসী নেতৃত্বের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘নারীর অধিকার ও ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ার স্তম্ভ’ বলে আখ্যায়িত করেছেন কানাডার আন্তর্জাতিক উন্নয়নমন্ত্রী মেরি ক্লড বিবেউ। তিনি বলেন, প্রথমত নারীর ক্ষমতায়নে তার সরকার মেয়েদের শিক্ষাকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে, যা নারীর ক্ষমতায়নে খুবই ক্ষমতাশালী একটি উপাদান। বিশ্বখ্যাত ফোর্বস সাময়িকী বিশ্বের একশ ক্ষমতাধর নারীর তালিকায় ২৬তম স্থানে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর এশিয়া অঞ্চলে তার অবস্থান দ্বিতীয়। আবার দক্ষিণ এশিয়াভিত্তিক বিখ্যাত সংবাদপত্র ‘উরংংফধংয’ তাদের সমীক্ষায় শেখ হাসিনাকে ‘দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় চমৎকার ব্যক্তিত্ব’ হিসেবে অভিহিত করেছে। এতে বলা হয়, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে তিনি সম্প্রতি সারাবিশ্বে ভূয়সী প্রশংসায় সিক্ত হন। শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশ যদি রোহিঙ্গাদের পাশে না দাঁড়াত তাহলে এর নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া শুধু এশিয়ার রাজনীতিতে নয় বরং গোটা বিশ্বে পড়ত। শেখ হাসিনা নিজের দূরদর্শিতা, বিচক্ষণতা আর নেতৃত্ব দিয়ে এ যাত্রায় সবাইকে বাঁচিয়ে দিয়েছেন। এখানেই তার বিশাল নেতৃত্বের কৃতিত্ব। বর্তমান বিশ্বে এশিয়ার সবচেয়ে ক্ষমতাধর রাজনৈতিক নেত্রী হচ্ছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
এশিয়ার চীন, হংকং, মিয়ানমার এবং বাংলাদেশের পাঁচজন রাজনৈতিক নারীনেত্রীর কর্মকাণ্ড তুলে ধরে স্বনামধন্য ও আন্তর্জাতিক টিভি চ্যানেল ডিসকভারি ডিকোড ‘এশিয়ান ফাইভ মোস্ট পাওয়ার ফুল উইমেন ইন পলিটিক্স’ শীর্ষক সচিত্র প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করেছে, এশিয়ার নারীনেত্রীদের মধ্যে শেখ হাসিনাকে তালিকার প্রথমেই স্থান দেয়া হয়েছে। আর এশিয়ার অন্য ক্ষমতাধর রাজনৈতিক নেত্রীরা হলেন- অং সান সু চি, মুলয়ানি ইন্দ্রাবতী, পেং লিছুয়ান ও ক্যারি লাম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একজন ‘সমস্যার সমাধানদাতা’ বা ‘প্রবলেম-সলভার’ হিসেবে প্রশংসিত হয়েছেন। বিশেষ করে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা শরণার্থী ইস্যুতে মানবিক অবদানের জন্য শেখ হাসিনা বিশ্ব নেতা এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছেন। জাপানভিত্তিক সংবাদপত্র নিক্কেই এশিয়ান রিভিউ এক প্রতিবেদনে বলেছে, শেখ হাসিনা অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও কঠোর কর্তৃত্ব দিয়ে নিজের দেশের বিরোধী পক্ষকে যেমন উড়িয়ে দিয়েছেন, তেমনি পূর্ব ও পশ্চিম উভয় বিশ্বে নিজের অবস্থান আরও দৃঢ় করে নিয়েছেন।
ফরেন পলিসির ওই তালিকার ‘প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা’ বিভাগে উঠে এসেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম, এটি তৈরি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী সাময়িকী ‘দ্য ফরেন পলিসি’। গত ১০ বছরে বিশ্বের সামগ্রিক পরিস্থিতির বিবেচনায় ১০টি বিভাগে ১০ জন করে সেরা ব্যক্তিত্বকে নিয়ে তৈরি করা হয়েছে ১০০ জনের ওই তালিকা। মিয়ানমারে গণহত্যা ও নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের বসবাসের সুযোগ করে দেয়ার জন্য ফরেন পলিসির ওই তালিকার ‘প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা’ বিভাগে উঠে এসেছে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর নাম। সেখানে তার অবস্থান নবম। দ্য ফরেন পলিসির করা ‘প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা’ বিভাগে সবার ওপরে আছেন দুই দশক ধরে ইরানের কুদস ফোর্সের কমান্ডার কাশেম সুলেয়মানি।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দক্ষিণ এশিয়ায় সম্মানিত ও জনপ্রিয় নেতা বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের লোকসভার স্পিকার সুমিত্রা মহাজন। ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জন’বিষয়ক দক্ষিণ এশীয় স্পিকারদের শীর্ষ সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। শেখ হাসিনা একজন মানবতাবাদী সুলেখকও বটে। অত্যন্ত ধর্মপ্রাণ, সংস্কৃতিমনা, অসাম্প্রদায়িক ও উদার ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গির অধিকারী, বিশ্বের দীর্ঘস্থায়ী নারী সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা শশব্যস্ততার মধ্যেও ১১টি বই লিখেছেন।
তার প্রকাশিত বইগুলো- ১. শেখ মুজিব আমার পিতা, ২. দারিদ্র্য বিমোচন, কিছু ভাবনা, ৩. ওরা টোকাই কেন?, ৪. বাংলাদেশে স্বৈরতন্ত্রের জন্ম, ৫. আমার স্বপ্ন, আমার সংগ্রাম, ৬. আমরা জনগণের কথা বলতে এসেছি, ৭. সামরিকতন্ত্র বনাম গণতন্ত্র, ৮.সাদাকালো, ৯. সবুজ মাঠ পেরিয়ে, ১০. মাইলস টু গো, ১১. দ্য কোয়েস্ট ফর ভিশন ২০২১।