ঢাকা: বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ পিএলসি (সিএসই)-এর যৌথ উদ্যোগে কর্পোরেট গভর্নেন্স বিষয়ে দিনব্যাপী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম ক্লাবে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সিএসইতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি সচিবদের নিয়ে এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
উদ্বোধনী অধিবেশনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিএসইর পরিচালক মেজর (অবঃ) এমদাদুল ইসলাম। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএসইসির কমিশনার ড. মিজানুর রহমান।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএসইসির এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ড. এটিএম তারিকুজ্জামান। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সিএসইর চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম।
স্বাগত বক্তব্যে মেজর (অবঃ) এমদাদুল ইসলাম বলেন, “বিএসইসির সহযোগিতায় কর্পোরেট গভর্নেন্সের ওপর এমন একটি সময়োপযোগী সম্মেলনের আয়োজন করতে পেরে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলিতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য কর্পোরেট গভর্নেন্স কোড প্রণয়ন করা হয়েছে, যার মূল উদ্দেশ্য হলো সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা। কর্পোরেট গভর্নেন্স কোডের যথাযথ পরিপালন পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতা বজায় রাখবে এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা বজায় রাখতে সাহায্য করবে।” তিনি উদাহরণ সহযোগে কোম্পানি সচিবের কর্মপরিধি, ধারণক্ষমতা ও অঙ্গীকার বিষয়ে আলোচনা করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে কর্পোরেট গভর্নেন্স ক্রাইসিস, কর্পোরেট ম্যানেজমেন্ট ও শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যকার দ্বন্দ্ব বিষয়ে বক্তব্য রাখেন। বিএসইসি সব ইস্যুয়ারের কার্যক্রমও পর্যবেক্ষণ করে। কর্পোরেট ক্রাইসিস হ্রাসকরণে বিএসইসি ১৫ বছর ধরে কাজ করছে। কোম্পানির বোর্ড, বোর্ড কমিটি এবং ইনভেস্টরদের মধ্যকার জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার দায়িত্ব পালন এবং নিরীক্ষক নিয়োগের বিষয়ও তদারক করে বিএসইসি।
প্রবন্ধে তারিকুজ্জামান বলেন, “আজকের সম্মেলনের উদ্দেশ্য কর্পোরেট গভর্নেন্স সম্পর্কে মাইন্ড সেট, কর্পোরেট কালচার ও এনভায়রনমেন্ট নির্ধারণ এবং সেই অনুসারে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।” এই বিষয়টি তিনি সবিস্তারে সচিত্র উপস্থাপন করেন। তিনি আরও বলেন, “কর্পোরেট গভর্নেন্স কোম্পানির গুরুত্ব বাড়ায় এবং এর সঙ্গে নতুন মূল্য যুক্ত করে। সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াই কর্পোরেট গভর্নেন্স যাতে আইনি বিধিমালা সন্নিবেশিত থাকে এবং যা স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থকে গুরুত্ব দেয়।”
সিএসই চেয়ারম্যান বলেন, “কর্পোরেট গভর্নেন্স হলো একটি কোম্পানিকে পরিচালনা করতে ব্যবহৃত নিয়ম, অনুশীলন এবং প্রক্রিয়াগুলির কাঠামো। একটি কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ হলো কর্পোরেট গভর্নেন্সকে প্রভাবিত করার প্রাথমিক শক্তি। ভালো কর্পোরেট গভর্নেন্স স্বচ্ছ নিয়ম ও নিয়ন্ত্রণ তৈরি করে, নেতৃত্বকে নির্দেশনা প্রদান করে এবং শেয়ারহোল্ডার, পরিচালক, ব্যবস্থাপনা এবং কর্মচারীদের স্বার্থকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করে। এটি বিনিয়োগকারীদের আস্থা তৈরি করতে সহায়তা করে। কর্পোরেট সুশাসন বিনিয়োগকারী এবং স্টেকহোল্ডারদেরকে একটি কোম্পানির দিকনির্দেশনা এবং ব্যবসায়িক সততা সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা প্রদান করতে পারে। এটি দীর্ঘমেয়াদী আর্থিক কার্যকারিতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে উপযুক্ত রিটার্ন পেতে সহায়তা করে। ভালো কর্পোরেট গভর্নেন্স শেয়ারের দাম বৃদ্ধিতেও সহায়তা করতে পারে। এটি আর্থিক ক্ষতি, অপচয়, ঝুঁকি এবং দুর্নীতির সম্ভাবনা কমাতে পারে। এটি স্থায়িত্ব এবং দীর্ঘমেয়াদী সাফল্যের জন্য একটি গেম প্ল্যান।”
ভোরের আকাশ/জেএস/