বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো পরিবহন সেক্টরে প্রশিক্ষকদের ঘাটতি মেটানোর জন্য তৈরি করা হচ্ছে নারী পরিবহন প্রশিক্ষক। এ কাজটি হাতে নিয়েছে ড্রাইভার্স টেকনিক্যাল কোম্পানি লিমিটেড পূর্বাচল ঢাকা নামের প্রতিষ্ঠানটি। প্রাথমিকভাবে ১০০ নারী প্রশিক্ষক তৈরির কার্যক্রম হাতে নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

তারই ধারাবাহিকতায় প্রশিক্ষক কাজী আতাহিয়ার চমৎকার প্রশিক্ষণে ১০ দিনের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম প্রথম দিন অনুষ্ঠিত হয় শুক্রবার। অনুষ্ঠানটি দেশের বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নারীরা অংশগ্রহণ করেন, পরিবহনে নারী হয়রানি প্রতিরোধকল্পে এই প্রশিক্ষকরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

সরকারি বিভিন্ন টেকনিক্যাল প্রতিষ্ঠানগুলোতে নারীরা প্রশিক্ষক হিসেবে কর্মরত হবে, বড় বড় পরিবহন কোম্পানিতে প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করার যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে এই নারীদের, নারীদের স্বাবলম্বী হিসেবে গড়ে তুলতে নারী উন্নয়নে যথেষ্ট অবদান রাখবে এই প্রশিক্ষণটি। পরিবহন সেক্টরে গুণগত পরিবর্তন আনাই এই প্রশিক্ষণের মূল লক্ষ্য।

কর্মশালার প্রথম দিনের দ্বিতীয় পর্যায়ে ছিলো প্রশিক্ষণার্থীদে বিনোদন পর্ব। এতে প্রশিক্ষণার্থীরা গান, কবিতা আবৃত্তি, গল্প বলাসহ নিজের স্মৃতিকথা উপস্থাপন করেন। প্রথম দিনের তৃতীয় পর্যায়ে সমাপণী অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থী ছাড়াও প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নীলিমা আখতার,

বিশেষ অতিথি মো. আনিসুর রহমান যুগ্ম সচিব সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, শিরিন আক্তার জাহান, পুলিশ সুপার এন্ট্রিটেরিয়ালিজম ইউনিট বাংলাদেশ পুলিশ, ওসমান আলী সাধারণ সম্পাদক বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন, মো. নুর আলম প্রতিষ্ঠাতা নাইশা এন্টারপ্রাইজ, প্রশিক্ষক কাজী আতাহিয়া, ডিটিসি প্রজেক্টের নারী পরিচালক সোনিয়া সিমরানসহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ।

ড্রাইভার্স টেকনিক্যাল কোম্পানি লিমিটেড এর চেয়ারম্যান নুর নবী শিমুর সভাপতিত্বে বক্তারা নারীদের অগ্রগতি ও উন্নয়নের বিষয়গুলো তুলে ধরেন। প্রধান অতিথি নীলিমা আখতার তার বক্তব্যে বলেন- ‘আমাদের দেশে অবহেলিত নারী জনগোষ্ঠীকে একটি ভালো জায়গায় দেখতে চাই আমরা, আমরা চাই নারীরা পুরুষের পাশাপাশি অধিকার নিয়ে কাজ করবেন, নারীরা এখন সবকিছুতে পুরুষের পাশাপাশি সমান তালে কাজ করে যাচ্ছেন তাই এই পরিবহন সেক্টরেও নারীদের অবদান রাখা উচিত।’

শিরিন আক্তার জাহান বলেন, ‘নারীরা পরিবহনে প্রতিনিয়ত নিগ্রহের শিকার হচ্ছেন। আমরা আইন প্রয়োগ করলেও সাধারণ মানুষের সচেতনতার অভাবে সে আইনের প্রয়োগ যথাযথ পালন হচ্ছে না। কাজেই এসব মানুষের মধ্যে আরো বেশি বেশি প্রচারণার দরকার। এমন কোন সেক্টর নেই যেখানে নারী পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষভাবে জড়িত নেই। জাতি গঠনে নারীর ভূমিকা অনস্বীকার্য। সরকার তাই এমন একটি সেক্টরে নারীকে অগ্রসর হতে উৎসাহিত করেছেন, যা এতোদিন অবহেলিত ছিলো। আমরা খুবই আশাবাদী এমন একটি প্রজেক্ট শুরু করার জন্য। এজন্য ডিটিসিএল কে অভিবাদন জানাই। 

অনুষ্ঠানে আগত অতিথিরা সবাই এক কথায় বলছেন, যে এরকম একটা প্রজেক্ট আরো আগে করা দরকার ছিল, দেরিতে হলেও ড্রাইভার্স টেকনিক্যাল কোম্পানি লিমিটেড কাজটি শুরু করেছে তাই ধন্যবাদ জানাই। এবং আমরা নিজেদের জায়গা থেকে সার্বিক সহযোগিতা করব নারীদের এই প্রজেক্টটির সফল বাস্তবায়নে। সব শেষে প্রশিক্ষণার্থীদের তৈরি কেক কেটে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা হয়।