logo
আপডেট : ১৫ অক্টোবর, ২০২২ ১৭:৫১
ইতালির রোমে অনুষ্ঠিতব্য চতুর্থ গ্লোবাল মেন্টাল হেলথ সামিটে স্বাস্থ্যমন্ত্রী
মানসিক স্বাস্থ্য নিশ্চিতে নীতি ও কর্মকৌশল বাস্তবায়নে ব্যবস্থা নিচ্ছে সরকার
নিজস্ব প্রতিবেদক

মানসিক স্বাস্থ্য নিশ্চিতে নীতি ও কর্মকৌশল বাস্তবায়নে ব্যবস্থা নিচ্ছে সরকার

রোম, ইতালি: মানসিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে নীতি ও কর্মকৌশলের বাস্তবায়নে সরকার যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

 

ইতালিতে এক অনুষ্ঠানে মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য বিশেষ আইন, নীতি এবং কর্মকৌশল রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে বাংলাদেশের ৮টি বিভাগীয় শহরে নতুন ৮টি মানসিক স্বাস্থ্য হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ এবং জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে এনসিডি কর্নারে মানসিক স্বাস্থ্য সেবা দেবার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে সচেতনতা তৈরির জন্য স্কুল মেন্টাল হেলথ কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে।"

 

ইতালির রোমে অনুষ্ঠিত দু’দিন ব্যাপি (১৩-১৪ অক্টোবর) এই চতুর্থ গ্লোবাল মেন্টাল হেলথ সামিটে তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের সম্পদ সীমিত এবং মানসিক স্বাস্থ্যখাতে দক্ষ জনবলের সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও ই-মেন্টাল হেলথ, অ্যাপভিত্তিক মানসিক স্বাস্থ্য সেবাসহ নানা উদ্ভাবনী প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশের মানসিক স্বাস্থ্য সেবা বিকেন্দ্রীকরণের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এই প্রক্রিয়াসমূহকে আরো বেগবান করে প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবায় মানসিক স্বাস্থ্যকে অন্তর্ভূক্ত করতে ‘স্পেশাল ইনিশিয়েটিভ ফর মেন্টাল হেলথ’ কার্যক্রমে বাংলাদেশকে অন্তর্ভূক্ত করায় মন্ত্রী বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে ধন্যবাদ জানান।

 

এবারের সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য - ‘দক্ষতা, অধিকার এবং যত্ন’ । এই তিনটি বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে সকলের জন্য কমিউনিটিভিত্তিক মানসিক স্বাস্থ্য নিশ্চিত করার লক্ষ্য নিয়ে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে বিশ্বের ৫২টি রাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সংস্থা অংশগ্রহণ করে।

 

ইতালির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আমন্ত্রণে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এই সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নেন এবং কমিউনিটি মেন্টাল হেলথ শীর্ষক একটি কর্মশালায় তিনি বক্তব্য প্রদান করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে ইতালীর স্বাস্থ্যমন্ত্রী রবার্তো স্পেরেনজা বক্তব্য রাখেন।

 

 

স্বাস্থ্যমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে বাংলাদেশের জনসম্পৃক্ত স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বিস্ময়কর অর্জনের উদাহরণ দিয়ে কমিউনিটিভিত্তিক মানসিক স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন। গতকালের অনুষ্ঠিতব্য কান্ট্রি ইন্টারভেনশন পর্বে জাহিদ মালেক কমিউনিটি মেন্টাল হেলথ এবং ইনোভেশন এন্ড মেন্টাল হেলথের উপর তথ্য ও উপাত্তসহ বক্তব্য উপস্থাপন করেন।

 

 

স্বাস্থ্যমন্ত্রী কোভিড মোকাবিলা এবং কোভিড টিকাদানে বাংলাদেশের অনন্য সাফল্যের দৃষ্টান্ত উল্লেখ করে আশাবাদ ব্যক্ত করে এসময় বলেন, "গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃেত্বে দেশের স্বাস্থ্যখাতে এখন সুবাতাস বইছে। করোনা মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময়োচিত সিদ্ধান্তে আমরা দ্রুত সাফল্য অর্জন করেছি। এজন্য বিশ্বে বাংলাদেশ আলাদা করে পরিচিতি পেয়েছে৷ এই সাফল্যের ধারাবাহিকতায় মানসিক স্বাস্থ্যকেও সফলভাবে জনগণের দোরগোড়ায় নিয়ে যেতে বাংলাদেশ সক্ষম হবে।"

 

এছাড়া সম্মেলন শেষে মন্ত্রী বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি দলের সাথে এক সংক্ষিপ্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতের সামগ্রিক চিত্র তুলে ধরে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে দেশে দক্ষ জনবল সৃষ্টির জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহযোগিতা কামনা করেন। এসময় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি কোভিড মোকাবেলা ও সামগ্রিক স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে বাংলাদেশের অসাধারণ সাফল্যের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

 

 

মন্ত্রী বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধির সাথে আলোচনায় কমিউনিটি বেইজড মেন্টাল হেলথ সার্ভিস প্রদানে দেশের বিদ্যমান প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা অবকাঠামো যেমন ১৪০০০ কমিউনিটি ক্লিনিক, ৪০০০ ফ্যামিলি ওয়েলফেয়ার সেন্টার, ৫০০ উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালসহ অন্যান্য স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানকে সম্পৃক্ত করার কথা বলেন। তিনি কমিউনিটির মাধ্যমে মানসিক স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের জন্য ব্যক্তি নির্বাচন, তাঁদের প্রশিক্ষণ প্রদান, প্রশিক্ষণ মডিউল তৈরি, অর্থায়ন ইত্যাদির উপর গুরুত্বারোপ করেন এবং এসকল বিষয়ে তিনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহায়তা কামনা করেন। এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে প্রণীত মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক আইন, নীতিমালা ও কর্মকৌশলের কথাও উল্লেখ করেন।

 


এর আগে, ১২ অক্টোবর মন্ত্রীর নেতৃত্বে ৪ সদস্য বিশিষ্ট বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল রোমে পৌঁছালে ইতালীতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. শামীম আহসান মন্ত্রীকে বিমান বন্দরে স্বাগত জানান। মন্ত্রী রোমে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পন করেন এবং দূতাবাসের কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।

 

ভোরের আকাশ/আসা