ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাব কেটে গেছে। এখনো এর ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের কাজ চলছে। এ অবস্থায় আরেকটি ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা করছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। তারা জানায়, ডিসেম্বর নাগাদ বঙ্গোপসাগারে সৃষ্টি হতে পারে আরেকটি ঘূর্ণিঝড়। তবে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হওয়ার বিষয়ে তারা বিস্তারিত জানাতে পারেনি।
আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ আব্দুল মান্নান ভোরের আকাশকে বলেন, ডিসেম্বরের আগেই আরেকটি ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে এখনই এ বিষয়ে নিশ্চিত কিছু বলা যাচ্ছে না। দেশে ঘূর্ণিঝড়ের যে মৌসুম তাতে নভেম্বরে ঘূর্ণিঝড় হওয়ার নজির রয়েছে। এর আগে ৭০ সালে যে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হেনেছিল, তা ১২ নভেম্বরে এসেছিল। এছাড়া সিডর আঘাত হানে ৭ নভেম্বর। এখনই নিশ্চিত কিছু বলা না গেলেও আরেকটি ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা রয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
এদিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উত্তর ভারত মহাসাগরের ঘূর্ণিঝড় মৌসুমের সময়কালের কোনো সরকারি সীমা নেই। তবে ঘূর্ণিঝড় এপ্রিল থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে তৈরি হয়। মে থেকে নভেম্বরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। এ তারিখগুলো প্রথাগতভাবে প্রতি বছরের সময়সীমাকে সীমাবদ্ধ করে, যখন বেশিরভাগ গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড় উত্তর ভারত মহাসাগরে তৈরি হয়। তারা জানায়, এ অববাহিকার মধ্যে একটি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড়কে একটি নাম দেয়া হয়, যখন এটি ৬৫ ঘণ্টায় কিলোমিটার বাতাসের সঙ্গে ঘূর্ণিঝড়ের তীব্রতার সীমায় পৌঁছে যাবে বলে বিচার করা হয়।
এদিকে ডিসেম্বর নাগাদ আরেকটি ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার শঙ্কার কথা জানান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমানও। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার রাত ১টা ১০ মিনিটে ফোন কল করে জানান, এটা (ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং) ভালোভাবে মোকাবিলা করেছ, এজন্য ধন্যবাদ। কিন্তু ডিসেম্বর মাসে আরেকটা আসবে, সেটার বিষয়ে একইরকম সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
এদিকে ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগের তথ্য বলছে, দক্ষিণ থাইল্যান্ড এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি নিম্নচাপ আন্দামান সাগরের পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে আগামী ২ ডিসেম্বরের মধ্যে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে, যা দক্ষিণ-পূর্ব এবং সংলগ্ন পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করবে। বঙ্গোপসাগরেই সেটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। এরপর আরো উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমাগত শক্তি সঞ্চয় করবে। পরে ৪ ডিসেম্বর স্থানীয় সময় সকালে ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ-ঊড়িষ্যা উপকূলের মাঝামাঝি আছড়ে পড়তে পারে এটি। তবে ঘূর্ণিঝড়টি ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ-ঊড়িষ্যা উপকূলেই আছড়ে পড়বে কিনা, সেটি নিশ্চিত নয়। কারণ ঘূর্ণিঝড় যেকোনো সময় গতিপথ পালটাতে পারে। বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর এ বিষয়ে সতর্ক করেছে।