logo
আপডেট : ৮ নভেম্বর, ২০২২ ১৯:২০
পাকিস্তানের সামনে ৯২ বিশ্বকাপ অনুপ্রেরণা
ক্রীড়া প্রতিবেদক

পাকিস্তানের সামনে ৯২ বিশ্বকাপ অনুপ্রেরণা

গ্রুপ পর্বে অনেক নাটকীয়তার পর টি- টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ওঠা পাকিস্তানের চোখ এখন ফাইনালে। আজ প্রথম সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে অষ্টম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনাল নিশ্চিত করতে চায় তারা। আর সে জন্য ১৯৯২ সালের বিশ^কাপের স্মৃতিকে সামনে আনছে তারা।

 

বুধবার সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে (এসসিজি) অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টায়।

 

ইমরান খানের বুদ্ধিদীপ্ত অধিনায়কত্বে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ১৯৯২ বিশ্বকাপ জিতেছিলো পাকিস্তান। সে আসরের মত আবারও সামনে একই চিত্র। বাদ পড়তে পড়তে সেমিফাইনাল। এবারও সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি পাকিস্তান।

 

১৯৯২ আসরে কোন রকমে সেমিফাইনালে উঠেছিল পাকিস্তান। টুর্নামেন্ট থেকে বাদ পড়তে-পড়তে ভাগ্যের সহায়তায় কোনভাবে শেষ চারে জায়গা করে নিয়েছিলো উপমহাদেশের দলটি। ইনজামাম-উল-হকের দুর্দান্ত নৈপুন্যে ফাইনালে ওঠা পাকিস্তান শেষ পর্যন্ত ১৯৯২ আসরের শিরোপা জিতেছিল।

 

অষ্টম সেমিফাইনালে ওঠা অপর দুই দল ইংল্যান্ড-ভারত বৃহস্পতিবার অ্যাডিলেডে মুখোমুখি হবে।

 

গুরুত্বপুর্ন ম্যাচের আগে পাকিস্তান কোচ ম্যাথু হেইডেন বলেছেন, ‘এটি (১৯৯২ বিশ্বকাপ) সরাসরি প্রভাব ফেলছে না। তবে গুরুত্বপূর্ন বিষয় হচ্ছে মিডিয়ার কল্যানে ক্রিকেট ভক্তদের একটি অংশ, খেলোয়াড়, সাপোর্ট স্টাফ, আমরা সবাই এই মিশনের গুরুত্ব এবং তাৎপর্য বুঝতে পারি। এবং ‘৯২’ আসর পাকিস্তান ক্রিকেটের জন্য স্মরণীয় একটি দিন ছিল।’

 

তিনি আরও বলেন, ‘সে বারের টুর্নামেন্টেও সেমির আগ পর্যন্ত পাকিস্তান দল ছিল অগোছালো, আহামরি কোন পারফরম্যান্সও ছিলনা। চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে এবং তারপর হঠাৎ করে ঘুড়ে দাঁড়ায় পাকিস্তান। তারা বিপজ্জনক এবং শক্তিশালী হয়ে উঠে। পাকিস্তানের জন্য সে বারের আসরটিও ছিল এবারের আসরের মতই।’

 

হেইডেন আরও জানান, ‘মূলত একজন ভক্ত এবং অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার হিসাবে আমি এতটুকু বলতে পারি-পাকিস্তান ক্রিকেটের পেস বোলিং আক্রমণ এবং ব্যাটিং লাইন-আপে আমাদের সত্যিই কিছু দেখার আছে।’

 

জয়ের অবস্থায় থেকেও নিজেদের প্রথম ম্যাচে চিরপ্রতিন্দ্বন্দি ভারতের কাছে হারতে হয়েছিলো পাকিস্তানকে। পরের ম্যাচে জিম্বাবুয়ের কাছে হার মানে তারা। পরপর দু’টি ম্যাচ হেরে সেমিফাইনালের পথ কঠিন হয়ে পড়ে পাকদের। দক্ষিণ আফ্রিকা এবং নেদারল্যান্ডসকে হারানোর জন্য সেমির লড়াইয়ে ফিরে তারা। কিন্তু নেদারল্যান্ডসের কাছে দক্ষিণ আফ্রিকা হারে পাকিস্তানের জন্য বড় সুযোগ তৈরি হয়।

 

বাংলাদেশের বিপক্ষে অনানুষ্ঠানিক কোয়ার্টার ফাইনালে পরিণত হওয়া ম্যাচটি ৫ উইকেটে জিতে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে পাকিস্তান।

 

হেইডেন বলেন, ‘যে কোন দিন যে কোন কিছু ঘটতে পারে। ঐ নির্দিষ্ট দিনেই নেদারল্যান্ডস হারিয়েছিলো দক্ষিণ আফ্রিকাকে। এটি আমাদের জন্য এই টুর্নামেন্টে একটি উল্লেখযোগ্য মুহূর্ত ছিল এবং সেই সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোটা আমাদের দলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত ছিল।’

 

তবে নিউজিল্যান্ড কেন টুর্নামেন্টের সেরা দল ইতোমধ্যেই তারা সেটা প্রমান করেছে। যদিও গ্রুপ পর্বে ইংল্যান্ডের কাছে ম্যাচ হেরেছিলো তারা। সকল পজিশনে সামর্থ্যবান ক্রিকেটার রয়েছে তাদের। কেন উইলিয়ামসনের মতো একজন সত্যিকারের শান্ত এবং ভদ্রলোকের নেতৃত্বে ক্রিকেট খেলছে তারা।’

 

সত্যিকারর্থে নিউজিল্যান্ড জানে কিভাবে ফাইনালে যেতে হয়। ২০১৫ ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ এবং ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি বাদে আইসিসির প্রতিটি ইভেন্টের ফাইনাল খেলেছে নিউজিল্যান্ড। ২০১৫ এবং ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলেছে কিউইরা। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত ফাইনালে হেরে যায় তারা। ২০২১ সালে প্রথম টেস্ট বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলেছে আইসিসি ট্রফি জয়ের খড়া কাটিয়েছে নিউজিল্যান্ড। ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আবারও ফাইনাল খেলে নিউজজিল্যান্ড। অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে যায়। এখন ১৯৯২ বিশ্বকাপের ক্ষত মুছে ফেলার সময় তাদের।

 

যদিও আইসিসি টুর্নামেন্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ডের রেকর্ড ভালো নয়। ২৮বারের মোকাবেলায় ১৭ জয় আছে পাকিস্তানের।

 

ভোরের আকাশ/আসা