logo
আপডেট : ১৪ নভেম্বর, ২০২২ ১১:০৯
উখিয়ার বাতাসে দুর্গন্ধ, স্বাস্থ্যঝুঁকিতে এলাকাবাসী
এইচ এম ফরিদুল আলম শাহীন, কক্সবাজার

উখিয়ার বাতাসে দুর্গন্ধ, স্বাস্থ্যঝুঁকিতে এলাকাবাসী

এইচ এম ফরিদুল আলম শাহীন, কক্সবাজার: টেকনাফের উখিয়ায় ১৩ লাখ রোহিঙ্গা ও এনজিও কর্মীর ব্যবহৃত বর্জ্যে হাট-বাজার, রাস্তাঘাট, নালা-নর্দমা ও জলাশয় ভরাট হয়ে জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। রোহিঙ্গাদের পরিত্যক্ত বর্জ্যে বাতাসে দুর্গন্ধ, অপরিচ্ছন্ন উখিয়া, টেকনাফের মানুষ রয়েছেন স্বাস্থ্যঝুঁকিতে। রোহিঙ্গাদের পেছনে হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করা হলেও স্থানীয়দের জন্য উখিয়াতে নেই স্কিট স্টেয়ার লোডার বা আবর্জনা বহনকারী আধুনিক ট্রাক।

 


ফলে ময়লা-আবর্জনার স্ত‚প যত্রতত্র ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। আর নেই বর্জ্য শোধনাগার। দুর্গন্ধে পরিবেশ বিষাক্ত হয়ে উঠছে। পরিবেশবাদী সংগঠনের দাবি, উখিয়া-টেকনাফ রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকার বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করা প্রয়োজন এবং নির্ধারিত ডাম্পিং ব্যবস্থা সুরক্ষিত করা না গেলে বিষাক্ত দূষণের ফলে স্থানীয়দের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়ে উঠতে পারে।

 


ময়লা ফেলার নির্ধারিত স্থান না থাকায় এবং সচেতনতার অভাবে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের পাশে যত্রতত্র ময়লা ফেলা হচ্ছে। উখিয়ার হোটেল-রেস্তোরাঁ ও বয়লার মুরগির আবর্জনা বাজারসংলগ্ন খালি জমিতে প্রতিদিন এনে ফেলা হচ্ছে। তখন উখিয়ার প্রবেশমুখে দুর্গন্ধের জন্য হাঁটাচলা মুশকিল হয়ে পড়ে। উখিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকদের লেখনী ও দাবির পরিপ্রেক্ষিতে অবশেষে উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় রাজাপালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরীর প্রচেষ্টায় ময়লা-আবর্জনা অপসারণ করা হলেও তা স্থায়ী কোনো সমাধান নয়। কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের পাশে ময়লা ফেলা কিছুতেই বন্ধ করা যাচ্ছে না।

 


স্থানীয়দের অভিযোগ, ময়লা-আবর্জনা অপসারণ কার্যক্রম চলমান না থাকায় বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দিকে নজর না দেয়ায় কিছুতেই উন্নতি হচ্ছে না। গড়ে উঠছে না সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। উখিয়ায় রোহিঙ্গা আসায় দ্রæত অট্টালিকা-বাড়িঘর নির্মাণের ফলে বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার নির্দিষ্ট স্থানে জমাকৃত আবর্জনা, বাজার ও স্টেশনগুলোর হোটেলের ময়লার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় এই অসহনীয় অবস্থার তৈরি হয়েছে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান হোছাইন সজীব।

 

ময়লা-আবর্জনা ডাম্পিংয়ের নির্ধারিত স্থান ঠিক করে দিয়ে তা অপসারণের দায়িত্ব নিতে হবে প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের। এমনটিই মনে করছেন সুশীল সমাজ।

 

উখিয়া-টেকনাফের চেয়ে কোটবাজারের অবস্থা খুবই খারাপ। রাস্তার ধারে ময়লা দেখতে খারাপ দেখায়। জনপ্রতিধিরা এগুলো দেখে না। আমরা সাধারণ জনগণ ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে তাদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করি। মানুষের প্রতি তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য কি এগুলোর মধ্যে পড়ে না? মানুষকেও সচেতন হতে হবে।

 

তিনি আরও বলেন, অপসারিত বর্জ্য দিয়ে কম্পোস্ট প্লান্ট তৈরির পরিকল্পনা করা যেতে পারে। প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি এবং এনজিওর সমন্বয়ে ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করতে ঠিকাদারদের দিয়ে তা করা যেতে পারে। সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার বিকল্প নেই।

 

কম্পোষ্ট প্লান্ট স্থাপনে বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে চুক্তিও করা যেতে পারে। কিন্তু আমরা তার কিছুই করছি না। ফলে জনদুর্ভোগ দিন দিন বাড়ছে।

 

স্থানীয় সংসদ সদস্য শাহিনা আক্তার জানিয়েছেন, রোহিঙ্গাদের কারণে উখিয়া-টেকনাফের সাড়ে ৬ লাখ মানুষ বহুমাত্রিক সমস্যায় জর্জরিত। রোহিঙ্গাদের দখল, দূষণ ও পরিত্যক্ত বর্জ্যে সীমাহীন সমস্যায় পড়েছেন স্থানীয় লোকজন। সুতরাং এ অবস্থা থেকে একমাত্র পথ হচ্ছে যত দ্রত সম্ভব রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন।

 

ভোরের আকাশ/নি