logo
আপডেট : ১৯ নভেম্বর, ২০২২ ১১:০৩
এবার স্বাভাবিক শীতের আশা
পুরোপুরি শীত নামবে মধ্য ডিসেম্বরে
শাহীন রহমান

পুরোপুরি শীত নামবে মধ্য ডিসেম্বরে

শাহীন রহমান: গত বছর শীতের আচরণ ছিল অনেকটা অস্বাভাবিক। পুরো ঋতুজুড়ে শীতের অনুভ‚তি ছিল না বলেই চলে। একটি শৈত্যপ্রবাহও বয়ে যায়নি। কিন্তু গতবারের তুলনায় এবারে শীত থাকবে স্বাভাবিক। ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ থেকে মাঝারি মাত্রায় শৈত্যপ্রবাহ শুরু হবে। এ ছাড়া পুরো শীতজুড়ে একাধিক শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহওয়াবিদরা। এই নভেম্বরে ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কাও রয়েছে।

 

প্রকৃতিতে এখন চলছে হেমন্তকাল। হেমন্তের শুরু থেকে দেশে বিভিন্ন এলাকায় হিমহিম ভাব শুরু হয়েছে। কোথাও কোথাও তাপমাত্রা নেমে আসছে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। গ্রামবাংলায় সকাল-সন্ধ্যায় শীতের আমেজ পাওয়া যাচ্ছে। তবে কাগজে-কলমে শীত আসতে এখনো বাকি প্রায় এক মাস। ঋতুবৈচিত্র্যের ধরন অনুযায়ী পৌষ মাস শীতকাল।

 

এই হিসেবে আগামী ১৬ ডিসেম্বর থেকে পুরোপুরি শীত নামার কথা। কিন্তু গ্রামবাংলায় ইতোমধ্যে শীতের আমেজ শুরু হয়েছে। শীতের হাত থেকে রক্ষা পেতে লেপ-কাঁথার ব্যবহার শুরু হয়েছে।

 

এর বিপরীতে ভিন্ন চিত্র রাজধানী ঢাকায়। এখানো রাতে ফ্যান চালিয়ে ঘুমাতে হচ্ছে। শীতের যে আমেজ তার ছিটেফোঁটাও নেই যান্ত্রিক এই শহরে। তবে তামপাত্রা কমে আসায় গরমের তীব্রতা বলতে গেলে এখন আর নেই। অনেকটা বসন্তের মতো স্বস্তি পাওয়া যাচ্ছে।

 

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে রাজধানীতে শীতের আমেজ পাওয়া যাবে। সেই সঙ্গে মধ্য ডিসেম্বর থেকেই পুরোপুরিভাবে শীত নামবে।

 

আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ আব্দুল মান্নান ভোরের আকাশকে বলেন, সাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে বাতাসের প্রবাহ একটু বেড়ে যাওয়ায় সকাল ও রাতে শীতের অনুভ‚তি হচ্ছে। লঘুচাপ কেটে গেলে শীতের অনুভ‚তি কমে আসবে।

 

এ ছাড়া দিনের বেলায় সূর্যের আলো থাকায় তাপমাত্রা বেশি থাকছে। সেই তুলনায় রাতের তাপমাত্রা কমে আসছে অনেক বেশি। তিনি বলেন, দিনের বেলায় তাপমাত্রা ২৮ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠে যাচ্ছে। কিন্তু রাতের বেলায় তা কোথাও কোথাও ১২ থেকে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে নেমে আসছে। এ কারণে সকালে এবং মাঝরাতে শীতের অনূভুতি পাওয়া যাচ্ছে। তবে স্বাভাবিক শীত নামতে আরও একটু দেরি হবে।

 

এদিকে সাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টির কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। এটি আরও ঘনীভ‚ত হয়ে নি¤œচাপে রূপ নিতে পারে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, এটি ভারতের উপক‚লে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এ কারণে লঘুচাপ বা নি¤œচাপের প্রভাবে এখানে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই। বড়জোর আকাশ মেঘলা থাকতে পারে। আবার কোথাও কোথাও গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টিপাত হতে পারে । তবে আবহাওয়াবিদরা ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না এখনই।

 

তারা জানান, এর প্রভাবে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হলে তখন তাপমাত্রা আরও একটুু বেড়ে যেতে পারে। তবে এর প্রভাব দেশে পড়ার সম্ভাবনা নেই।

 

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, কোনো এলাকার গড় তাপমাত্রা ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গেলে সেখানে সকাল এবং মাঝরাতে শীতের অনুভ‚তি সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে সর্বোচ্চ এবং সর্বনি¤œ তাপমাত্রার ব্যবধান কমে গেলে সেখানে তীব্র শীত নামে।

 

কিন্তু শুক্রবার পর্যন্ত দেশের অধিকাংশ স্থানের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়ানের ওপরে রয়েছে। এ ছাড়া এসব এলাকায় সর্বনি¤œ তাপমাত্রা রয়েছে ১৬ থেকে ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। এদিন দেশের সর্বনি¤œ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে সিলেটের শ্রীমঙ্গলে ১৪.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

 

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সৃষ্ট লঘুচাপটি ঘনীভূত হতে পারে। উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ বিহার এবং আশপাশের এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।

 

ভোরের আকাশ/নি