logo
আপডেট : ২১ নভেম্বর, ২০২২ ১৩:৩১
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী
আবাদি জমি রক্ষায় পরিকল্পিত শিল্পায়ন করতে হবে
নিজস্ব প্রতিবেদক

আবাদি জমি রক্ষায় পরিকল্পিত শিল্পায়ন করতে হবে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে আবাদি জমি রক্ষায় পরিকল্পিত শিল্পায়নের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে যুব ও নারীদের এ খাতে অবদান রাখার আহব্বান জানিয়েছেন।

 

তিনি বলেন, ‘যত্রতত্র কোনো শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা যাবে না। আবাদি জমি ও তিন ফসলি জমির কোনো ক্ষতি করা যাবে না। শিল্পায়নের মাধ্যমে উৎপাদন বাড়িয়ে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আনব।’ গতকাল সোমবার সকালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে সারা দেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলে (ইজেড) ৫০টি শিল্প ইউনিট, প্রকল্প ও সুযোগ-সুবিধা উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন।

 

প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে যোগদান করে বলেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ^ অর্থনৈতিক মন্দা সত্তে¡ও ৫০টি শিল্প ইউনিট ও অবকাঠামোর উদ্বোধন এবং ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করতে গিয়ে আজ আমি খুবই আনন্দিত।’

 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ে তোলার সময় বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশের মর্যাদা এনে দেন এবং আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশের মান ও মর্যাদা বিশে^ যেন আরো বৃদ্ধি পায় সে পদক্ষেপ নেয়।

 

তিনি বলেন, আমরা সঠিক পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়েছি বলেই ২০২১ সালে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। এটা ধরে রাখতে হবে। সেজন্য আমাদের ব্যাপক শিল্পায়ন দরকার। কৃষি ও শিল্প উৎপাদন বৃদ্ধিসহ আমাদের নতুর নতুন বাজার খুঁজে বের করতে হবে এবং জনগণের আর্থসামাজিক উন্নতি করে তাদের ক্রয়ক্ষমতা বাড়াতে হবে, যাতে নিজস্ব বাজার সৃষ্টি হয়।

 

সরকার সে কারণেই সারা দেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে এবং প্রথমবার ক্ষমতায় এসেই বেশ কয়েকটি ইপিজেড নির্মাণ করেছে। তিনি উত্তরবঙ্গে প্রথম নীলফামারির উত্তরা ইপিজেড প্রতিষ্ঠার কথা স্মরণ করেন বলেন, সারা দেশে ইতোমধ্যে ইপিজেড করতে ৯৭টি জায়গায় তার সরকার ঠিক করে রেখেছে। সেখানে পর্যায়ক্রমে বিনিয়োগ আসবে।

 

কোভিড-১৯ এর অর্থনৈতিক ধাক্কা বিশে^র মতো বাংলাদেশে লাগলেও তার সরকার সেটি সামলে নিয়ে অর্থনীতিকে গতিশীল রাখায় সচেষ্ট রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। বলেন, এরপর মরার ওপর খরার ঘা, রাশিয়া-উইউক্রের যুদ্ধ এবং স্যাংশন পাল্টা স্যাংশনের ফলে আমাদের ক্রয়ক্ষমতায় সীমাবদ্ধতা নেমে এসেছে। আমদানি পণ্যের দাম এবং পরিবহন খরচ বেড়ে গেছে।

 

ফলে অনেক দেশ মন্দায় ভুগছে। শিল্প মালিকদের এক্ষেত্রে এগিয়ে আসার আহŸান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘নিজের ইন্ডাস্ট্রি চালিয়ে অন্তত দেশের মানুষের চাহিদা পূরণের প্রচেষ্টা চালাবেন আপনারা। আওয়ামী লীগ সরকার আপনাদের অনেক সুযোগ-সুবিধা দিয়েছে। এখন আর হাওয়া ভবন নেই যে আপনাদের কোনো কাজ পেতে হলে সেখানে পাওনা ঘোচাতে অথবা এখানে ওখানে ছোটাছুটি করতে হবে। আমরা দেশকে নিয়মশৃঙ্খলার মধ্য নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছি।’

 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করবেন। ব্যবসার ক্ষেত্র প্রস্তুত এবং সুযোগ-সুবিধা আমরা করে দিচ্ছি। আপনারা প্রত্যেকেই দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করবেন, যত বেশি মানুষের কল্যাণে কাজ করবেন, আমরা তত বেশি আপনাদের সহযোগিতা করব। কিন্তু এমন কিছু করবেন না যাতে মানুষ কষ্ট পায় বা দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

 

তিনি বলেন, কৃষিজমি যেমন আমাদের বাঁচাতে হবে তেমনি শিল্পোৎপাদনও করতে হবে। সেজন্য যত্রতত্র যেন শিল্প গড়ে না ওঠে, সেদিকে আমাদের লক্ষ রাখতে হবে। ৫০টি শিল্প সুবিধার মধ্যে চট্টগ্রামের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগরে (বিএসএমএসএন) চারটি কারখানা এবং বেসরকারিভাবে পরিচালিত বিভিন্ন ইজেডে আটটি কারখানা খোলা হয়েছে।

 

ভ‚মিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান এমপি, চট্টগ্রাম-১ আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এবং বসুন্ধরা গ্রæপের ভাইস চেয়ারম্যান সাফওয়ান সোবহান চট্টগ্রামের বিএসএমএসএন প্রান্তে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের কর্মকাÐের ওপর একটি ভিডিও চিত্র প্রদর্শিত হয়।

 

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগরে চারটি কারখানার পাশাপাশি সিটি অর্থনৈতিক অঞ্চলের দুটি, মেঘনা অর্থনৈতিক অঞ্চলের সাতটি এবং শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চলের একটি শিল্পকারখানা নিয়ে মোট ১৪টি কারখানার বাণিজ্যিক উৎপাদনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। অর্থনৈতিক অঞ্চলের সড়ক, ভবন, বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোও উদ্বোধন করেন তিনি।

 

এছাড়া দুটি অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং বিভিন্ন অর্থনৈতিক অঞ্চলে নির্মাণাধীন ২৯টি কারখানার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন সরকারপ্রধান। প্রকল্প উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন একযোগে মোট ৮টি ভেন্যুতে হয়। ভেন্যুগুলো হচ্ছÑ গণভবন, ঢাকা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর (বিএসএমএসএন মিরসরাই, চট্টগ্রাম), শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চল (মৌলভীবাজার), কর্ণফুলী ড্রাইডক এসইজেড (আনোয়ারা, চট্টগ্রাম), মেঘনা ইন্ডাস্ট্রিয়াল অর্থনৈতিক অঞ্চল (সোনারগাঁ, নারায়ণগঞ্জ), জামালপুর অর্থনতিক অঞ্চল (জামালপুর সদর), সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক (সাবরাং, কক্সবাজার) ও হোসেন্দি অর্থনৈতিক অঞ্চল (গজারিয়া, মুন্সীগঞ্জ)।

 

বিশ^ব্যাপী খাদ্যাভাবের কারণে বাংলাদেশ উৎপাদন বাড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘মিরসরাই শিল্পাঞ্চলে যেসব ফসলি জমি রয়েছে, সেগুলো ফসলি হবে।’ জাপান ভ্রমণের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে সরকারপ্রধান বলেন, একপাশে ইন্ডাস্ট্রি; আরেক পাশে পুরো ধানক্ষেত। আমি ধানক্ষেতে নিজে নেমে দেখে এসেছি। আমাদের দেশেও সেভাবে হতে পারে।

 

আমরা সেটাই চাই। তিনি মালিক পক্ষের উদ্দেশে বলেন, আপনার যদি শ্রমিকদের আবাসনের ব্যবস্থা করে দেন। তারা ভালো থাকলে তাদের কাছ থেকে অধিক কাজ পাবেন এবং উৎপাদনশীলতা বাড়বে।

 

তাদের দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলতে ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে ক্রমান্বয়ে অর্থনৈতিক অঞ্চলের উন্নয়ন করে দেয়া হচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন দেশ বিনিয়োগের জন্য আসছে। আমরা একেকটা দেশের জন্য একেকটা খÐে জমি দিয়ে দিচ্ছি। তারা নিজেদের মতো করে তাদের দেশ থেকে যেসব কোম্পানি আসবে তারা নিয়ন্ত্রণ করবে। তাদের মাধ্যমে উৎপাদন বাড়বে এবং সেইসঙ্গে আমাদের দেশের যা প্রয়োজন, তা-ও মিটাবে এবং বিদেশে রপ্তানিও করবে।

 

তিনি বলেন, এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ১ কোটি মানুষের কর্মসংস্থান হবে এবং এখান থেকে ৪০ বিলিয়ন ডলার সমমূল্যের পণ্য উৎপাদন এবং রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা আমরা নির্ধারণ করেছি।

 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোয় ইতোমধ্যে ২৯টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান বানিজ্যিক উৎপাদন করছে এবং ৬১টি শিল্প নির্মাণাধীন রয়েছে। এ পর্যন্ত অর্থনৈতিক অঞ্চলে প্রায় ৪৫ হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে এবং বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোয় বিনিয়োগ হয়েছে প্রায় ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এছাড়া সব অর্থনৈতিক অঞ্চলে শিল্প নির্মাণে প্রস্তাবিত বিনিয়োগের পরিমান প্রায় ২৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

 

শিল্পায়নের জন্য যা প্রয়োজন তার ব্যবস্থা করার কথা উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমাদের দেশে গ্যাস খুঁজে বের করার এবং বিদেশ থেকে ক্রয়ের চেষ্টা করছি, যাতে গ্যাস সংকটে না পড়তে হয়।’ তিনি বলেন, বেসরকারি খাতে শিল্পায়নের জন্য জায়গা দিয়ে সুযোগ করে দেয়া হয়েছে।

 

শিল্পায়ন এক এলাকাভিত্তিক নয়, দেশব্যাপী করা হচ্ছে। শিল্পায়ন করতে গিয়ে তিন ফসলের জমি নষ্ট করা যাবে না। যারা জমি দেবে তাদের পরিবারের সদস্যদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। তিনি এ সময় অহেতুক চাকরির পেছনে না ছুটে সরকার প্রদত্ত সুযোগ-সুবিধা নিয়ে যুব সমাজকে উদ্যোক্তা হওয়ার এবং নিজের এবং অপরের জন্য কর্মসংস্থানে এগিয়ে আসায় তার আহŸান পুনর্ব্যক্ত করেন।

 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতু হওয়ার পর দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগ দ্রæত হয়েছে। ঢাকা থেকে আরো অল্প সময়ের মধ্যে যাতে রেলে চট্টগ্রামে পৌঁছানো যায়, সেজন্য নতুন রেললাইনের চিন্তা করছি। এটা আমরা কবর। পাশাপাশি মিরসরাই থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত মেরিন ড্রাইভ নির্মাণ এবং চার লেনের রাস্তা ৬ লেন করার ওপরও তিনি গুরুত্বারোপ করেন।

 

তিনি বলেন, কক্সবাজারে আমরা আন্তর্জাতিক মানের এয়ারপোর্ট করে দিচ্ছি। চট্টগ্রাম কর্ণফুলী টানেল করে দিচ্ছি। এপারের মানুষ ওপারে যেতে আর অসুবিধা হবে না। শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার একটানা প্রায় ১৪ বছর সরকার পরিচালনায় আছে বলেই উন্নয়ন আজ দৃশ্যমান হয়েছে এবং এর সুফল জনগণ পাচ্ছে। বিশে^ বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের ‘রোলমডেল’ হিসেবে আত্মপ্রকাশের মাধ্যমে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করেছে। মাথাপিছু আয় বর্তমানে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৮২৪ মার্কিন ডলারে।

 

২০২৩ সালেই ভারত থেকে জ্বালানি তেল আমদানি শুরু হবে : আগামী বছর পাইপলাইনের মাধ্যমে ভারত থেকে জ্বালানি তেল আমদানি শুরু হবে বলে আশাবাদ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ পাইপলাইনের মাধ্যমে ভারত থেকে তেল আমদানি করতে চায়। আশা করছি, আগামী বছর তা শুরু করা যাবে।’

 

গতকাল গণভবনে আসাম বিধানসভার স্পিকার বিশ্বজিৎ দাইমারী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা বলেন। বিশ্বজিৎ চার সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলোর ৩২ সদস্যের বিধায়কের প্রতিনিধি হিসেবে দলটি বাংলাদেশ সফর করছে। সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। ১৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ ভারত-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন (আইবিএফপিএল) প্রকল্পের লক্ষ্য ভারত থেকে বাংলাদেশে তেল পণ্য রপ্তানি করা।

 

সাক্ষাৎকালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনাকালে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দুই দেশের সীমান্ত লাইনের বিভিন্ন অংশে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বর্ডার হাটগুলো আবারো চালু হবে।’ প্রধানমন্ত্রী এ সফরের জন্য প্রতিনিধি দলকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশ সবসময়ই প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্কের উন্নতি চায়।’

 

ভারতের সঙ্গে ছিটমহল বিনিময়ের প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘দুই প্রতিবেশী দেশ আলোচনার মাধ্যমে অনেক বিরোধের সমাধান করেছে।’ আঞ্চলিক সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, প্রতিবেশী নেপাল, ভুটান এবং ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসাম ও ত্রিপুরা পারস্পরিক সুবিধার জন্য চট্টগ্রাম বিমান ও সমুদ্রবন্দর এবং সৈয়দপুর বিমানবন্দর ব্যবহার করতে পারে।

 

শেখ হাসিনা ১৯৬৫ সালের যুদ্ধের সময় বন্ধ হয়ে যাওয়া কানেক্টিভিটি রুটের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘রুটগুলো পর্যায়ক্রমে চালু করা হচ্ছে।’ প্রধানমন্ত্রী ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধা ও উদ্বাস্তুদের আশ্রয় দেয়ায় ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য এবং পশ্চিমবঙ্গের অবদানের কথা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন।

 

অর্থনৈতিক অঞ্চল উদ্বোধন : জামালপুরে ৩৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪৭৬.০৪ একর জমিজুড়ে গড়ে ওঠা অর্থনৈতিক অঞ্চলের ভার্চুয়ালি উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে গতকাল সকালে গণভবন থেকে একযোগে দেশের ৮টি অর্থনৈতিক অঞ্চল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে উন্মুক্ত হয় জামালপুরের অর্থনৈতিক অঞ্চলও।

 

জামালপুর সদর উপজেলার দিগপাইত ইউনিয়নে অর্থনৈতিক অঞ্চলের ভেতরে অস্থায়ী একটি তাঁবু ঘরে এক ভার্চুয়ালি সংযোগের মাধ্যমে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সদর আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ ইঞ্জিনিয়ার মো. মোজাফফর হোসেন সিআইপি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক শ্রাবস্তী রায়, পুলিশ সুপার মো. নাছির উদ্দীন আহমেদ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিটুস লরেন্স চিরান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক মো. ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরীসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতারা।

 

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যমতে, দেশের গড় দারিদ্র্যের হার ২০। তবে জামালপুর জেলার ২৩ লাখ ৮৪ হাজার জনগোষ্ঠীর মধ্যে ৫২.৫ শতাংশ মানুষ এখনো দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, অপেক্ষাকৃত অনগ্রসর ও দারিদ্র্যপীড়িত জামালপুরের অর্থনৈতিক কার্যক্রম বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখবে এ অর্থনৈতিক অঞ্চল।

 

জামালপুর অর্থনৈতিক অঞ্চলে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ বা বেজার কাছ থেকে ইতোমধ্যেই ৮৮ একর জমি নিয়েছে ১১টি প্রতিষ্ঠান। এখানে বিসিক ও বিটাক ছাড়া আরো ৯টি প্রতিষ্ঠান প্রায় ৩৫০ কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাব করেছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৩টি প্রতিষ্ঠান কৃষিভিত্তিক কারখানা তৈরি করবে।

 

অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো মেডিকেল এবং সার্জিক্যাল আইটেম, ওভেন ব্যাগশিল্প, পিভিসি ফ্লেক্স ব্যানার উৎপাদন শিল্প তৈরি করবে। এ প্রতিষ্ঠানে প্রাথমিকভাবে ৩ হাজার ৬৭৫ জনের কর্মসংস্থান হবে বলে বেজা সূত্রে জানা গেছে। এছাড়া এখানে পাট ও পাটজাত পণ্য, তৈরি পোশাক, ফার্মাসিউটিক্যালস, মসলাজাত পণ্য, চামড়া, সিরামিকসহ উৎপাদিত হবে বিভিন্ন পণ্যও। পুরো অর্থনৈতিক অঞ্চল চালু হলে প্রত্যক্ষভাবে ৩২ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে।

 

ভোরের আকাশ/নি