দীর্ঘ ৩৬ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে শেষ পর্যন্ত বিশ্বকাপে আবারো মাঠে নামার জন্য মুখিয়ে আছেন কানাডা। আজ বুধবার বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় আহমেদ বিন আলি স্টেডিয়ামে বেলজিয়ামের বিপক্ষে ম্যাচের মাধ্যমে কাতারের যাত্রা শুরু করবে কনকাকাফ অঞ্চলের দলটি। অন্যদিকে বেলজিয়ামের স্বর্ণ যুগের প্রজন্মের সামনে শেষ সুযোগ বড় কোনো আসরের শিরোপা ঘরে তোলার।
বেলজিয়ামের কোচ রবার্তো মার্টিনেজও দীর্ঘদিন ধরে দলকে কোনো সাফল্য উপহার দিতে না পারায় চাপে আছেন। ইউরো ২০২০-এ কোয়ার্টার ফাইনালে ইতালির কাছে ২-১ গোলে হারের পর নেশন্স লিগে আগের আসরের ফাইনালের হারে সমর্থকরা বেশ হতাশ।
উয়েফা বাছাইর্বে অপেক্ষাকৃত সহজ গ্রুপের থেকে ৮ ম্যাচে ৬টি জয়সহ শীর্ষ দল হিসেবে বিশ্বকাপের মূল পর্ব নিশ্চিত করেছিল বেলজিয়াম। বাছাই পর্বের প্রতিটি ম্যাচেই তারা গড়ে তিনটি করে গোল করেছে। কিন্তু বড় টুর্নামেন্টের মূল আসরে সেই একই বেলজিয়ামকে আর খুঁজে পাওয়া যায়না।
ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে ইতালির বিপক্ষে তেমনই একটি হতাশাজনক ম্যাচ খেলেছিল বেলজিয়াম। এক্ষেত্রে ম্যাচ জয়ের কৌশল না জানার জন্য মার্টিনেজকে দায়ী করাই যায়। সম্প্রতি নেশন্স লিগে প্রতিবেশী নেদারল্যান্ডের কাছে হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে ম্যাচে হারটাও ছিল হতাশাজনক। এছাড়া বিশ্বকাপের সর্বশেষ প্রস্তুতি ম্যাচে মিশরের কাছে ২-১ গেলে হেরে বসেছে বেলজিয়াম। ফলে শেষ দুটি ম্যাচে হারের স্বাদ নিয়ে তারা কাতারে খেলতে এসেছে। এ দলের যোগ্যতা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। ম্যানচেস্টার সিটির সুপারস্টার কেভিন ডিব্রুইনার মতো খেলোয়াড় রয়েছেন দলে।
২০১৮ বিশ্বকাপে ১৬ গোল করে সর্বোচ্চ গোল দেয়া দেশের তালিকায় শীর্ষে ছিল বেলজিয়াম। মার্টিনেজের খেলার কৌশলে দলের আক্রমণভাগকে বেশ শক্তিশালী করা হয়েছে। মার্টিনেজের অধীনে খেলেই রোমেলু লুকাকু নিজের প্রতিভা বিকশিত করেছেন।
যদিও ইনজুরির কারণে প্রথম দুই ম্যাচ থেকে ছিটকে গেছেন এ তারকা ফরোয়ার্ড। তার স্থানে মিশি বাতশুয়াইর ওপর আস্থা রাখতে হচ্ছে মার্টিনেজকে। বেলজিয়ামের হয়ে সম্প্রতি বেশ ফর্মে আছেন চেলসির সাবেক এ স্ট্রাইকার। দেশের হয়ে প্রতি দুই ম্যাচে তার একটি করে গোল রয়েছে।
যদিও এ মুহূর্তে দলের মানসিকতায় কিছুটা হলেও ঘাটতি রয়েছে আর এ সুযোগটাকে কাজে লাগাতে চায় জন হার্ডম্যানের কানাডা। কনকাকাফ অঞ্চলের বাছাই পর্বে মেক্সিকো ও যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় ম্যাপেল লিফসরা বেশি গোল করেছে, কিন্তু হজম করেছে কম। এ পর্যায়ে এসে অভিজ্ঞতা ও তারুণ্যের মিশেলে গঠিত কানাডা এবারের আসরটিকে ২০২৬ সালে ঘরের মাঠের বিশ্বকাপ সামনে রেখে প্রস্তুতির একটি বড় মঞ্চ হিসেবে বিবেচনা করতে পারে।
বাছাই পর্বের শেষ অংশে ৭টি ম্যাচে কানাডা কোনো গোল হজম করেনি, এতেই তাদের রক্ষণভাগের যোগ্যতা প্রমাণিত হয়। কোনো ম্যাচেই তারা একাধিক গোলও হজম করেনি। যদিও কাতারের টিকিট পেতে তাদের বেশ কঠিন পথ পাড়ি দিতে হয়েছে। ৭টি ম্যাচের মাত্র দুটিতে জয়ী হয়েছিল তারা।
কনকাকাফ নেশন্স লিগের শেষ ম্যাচে হন্ডুরাসের কাছে তারা পরাজিত হয়। ওই ম্যাচে মূল একাদশে খেলতে পারেননি দুই অ্যাটাকার জোনাথন ডেভিড ও কাইল লারিন।
ভোরের আকাশ/নি