logo
আপডেট : ২৯ নভেম্বর, ২০২২ ১২:১৯
যুক্তরাষ্ট্রকে হারিয়ে নকআউট চায় ইরান
ক্রীড়া ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রকে হারিয়ে নকআউট চায় ইরান

নাটকীয় ম্যাচে ওয়েলসকে হারিয়ে হঠাৎ করে বিশ্বকাপের উত্তেজনা বাড়িয়ে দেয়া ইরান আজ মঙ্গলবার আল থুমামা স্টেডিয়ামে গ্রুপ-বির শেষ ম্যাচে যুক্তরাষ্ট্রের মোকাবিলা করবে। ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত ১টায়। জয় পেলেই নকআউট পর্ব নিশ্চিত হয় যাবে ইরানের।

 

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে বিধ্বস্ত দলটির কোনো রূপই রব পেজের ওয়েলসের সঙ্গে দেখা যায়নি। বিপরীতে ওয়েলসের সঙ্গে ১-১ গোলের ড্রয়ের মাধ্যমে টুর্নামেন্ট শুরু করা স্টার্স অ্যান্ড স্ট্রাইপসরা থ্রি লায়ন্সদের সঙ্গে সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে না পেরে গোলশূন্য ড্রয়ের মাধ্যমে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হয়।

 

এসবই গ্রুপ-বির লড়াইয়েকে জমাট করে তুলেছে। চারটি দলের সামনেই গ্রুপ এর শেষ ম্যাচে নিজেদের এগিয়ে নিয়ে নকআউট পর্ব নিশ্চিত করার সুযোগ আছে। শীর্ষে থাকা ইংল্যান্ডের সংগ্রহে রয়েছে ৪ পয়েন্ট, দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইরানের ৩, পরের দুই দল যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েলসের কাছে রয়েছে যথাক্রমে ২ ও ১ পয়েন্ট।

 

বায়ার লেভারকুজেনের স্ট্রাইকার সারডার আজমুনকে পেয়ে কার্লোস কুইরোজের ইরান সবদিক থেকেই যেন আত্মবিশ^াসী হয়ে উঠেছে। তারই ধারাবাহিকতায় তারা গ্যারেথ বেলের ওয়েলসকে মাঠে দাঁড়াতেই দেয়নি। একের পর এক আক্রমণ করে শেষ পর্যন্ত ২-০ গোলের জয় নিশ্চিত করে।

 

যোগ্য দল হিসেবেই তারা ওয়েলসের বিপক্ষে পূর্ণ ৩ পয়েন্ট অর্জণ করেছে। ইংল্যান্ডের কাছে প্রথম ম্যাচে ৬-২ গোলের হার কোনো প্রভাবই ফেলেনি দ্বিতীয় ম্যাচে। ২৭ বছর বয়সি আজমুনের সঙ্গে মেহদি টারেমি মিলে মাঠে একের পর এক আক্রমণ চালিয়েছে।

 

অথচ কাফ ইনজুরির কারণে অক্টোবরের শুরু থেকে ক্লাবের হয়ে খেলতে পারেননি আজমুন। শেষ ম্যাচে তাকে তিনবার মাঠে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। দেশের হয়ে ৪০ গোল আজমুনকে শেষ পর্যন্ত ৬৮ মিনিটে মাঠ থেকে উঠিয়ে নিতে বাধ্য হন কুইরোজ। অবশ্য আজমুনকে ছাড়াই ইনজুরি টাইমে ২ গোল দেয় ইরান। ২ ম্যাচে ৩ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ-বির দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইরান জানে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে জয় ইতিহাসে প্রথমবারের মতো তাদের নকআউট পর্বে পৌঁছে দেবে। তাছাড়া ওয়েলস যদি ইংল্যান্ডকে হারাতে না পারে, তবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অন্তত ড্র করলেই চলবে।

 

একই গ্রুপে ইরানের সঙ্গে থাকা এশিয়ান দল জাপান ও সৌদি আরব বিশ্বকাপের প্রথম সপ্তাহেই বড় অঘটনের জন্ম দিয়েছে। প্রথমবারের মতো নকআউট পর্বে পা রেখে ইরানও তাদের সঙ্গে ইতিহাস রচনা করতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বিষয়টা কিছুটা হলেও ভিন্ন।

 

প্রথম দুই ম্যাচের কোনোটিতেই ৩ পয়েন্ট আদায় করতে না পারা গ্রেগ বারহল্টারের দল একটি বিষয় অন্তত প্রমাণ করেছে, আন্তর্জাতিক ফুটবলে নতুন এক শক্তি হিসেবে তারা যেকোনো দলকে প্রতিহত করতে প্রস্তুত। ইউরোপের বিভিন্ন লিগে প্রায় এক দশকেরও বেশি সময় যুক্তরাষ্ট্রের কোনো খেলোয়াড় খেলার সুযোগ পায়নি।

 

কিন্তু ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে যেভাবে সমান তালে পুরো দল লড়াই করেছে, তাতে অন্তত ১০ জন খেলোয়াড়কে বিশ্বের যেকোনো শীর্ষ দল অনায়াসেই ডাকতে পারেÑ এমনটাই প্রমাণিত হয়েছে। শুধু বাজে ফিনিশিংয়ের জন্য ১৯৫০ সালের পর প্রথমবারের মতো থ্রি লায়ন্সের বিপক্ষে জয়টা পাওয়া হয়নি।

 

ইংলিশ তরুণ বুকায়ো সাকার থেকে দৃষ্টি বারবারই ওয়েস্টন ম্যাককিনির দিকে। ক্রিস্টিয়ান পুলিসিচও বেশ কয়েকবার ইংলিশ গোলরক্ষক জর্ডান পিকফোর্ডকে পরীক্ষায় ফেলেছেন। ইংলিশ প্রতিপক্ষে বিষয়টি সবচেয়ে বেশি যা নজড়ে পড়েছে, তা হলো যুক্তরাষ্ট্রের খেলোয়াড়দের তীক্ষèতা ও গতিময়তা।

 

ফুলব্যাক সার্জিনো ডেস্ট ও ফুলহ্যামের এন্টোনি রবিনসন দুই উইং থেকে দ্রুত গতিতে বল জোগান দেয়ার চেষ্টা করেছেন। অন্যদিকে মধ্যমাঠে জুড বেলিংহাম ও ম্যাসন মাউন্টকে একাই খোলস বন্দি করে রেখেছিলেন টাইলার অ্যাডামস। যুক্তরাষ্ট্র যদি শেষ পর্যন্ত নকআউট পর্বে যায়, তবে তা সেখানকার দলগুলোর জন্য দুশ্চিন্তার বিষয় হতে পারে।

 

দ্বিতীয় হলুদ কার্ডের জন্য ব্রাইটনের সাবেক মিডফিল্ডার আলিরেজা জাহানবখস শেষ ম্যাচে খেলতে পারছেন না। ওয়েলসের সঙ্গে ৬৮ মিনিট পর্যন্ত ফিটনেস সমস্যায় ধুঁকতে থাকা তারকা স্ট্রাইকার আজমুনের খেলা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। তবে প্রথম ম্যাচে মাথায় বাজেভাবে আঘাত লাগা ৩০ বছর বয়সি আলিরেজা বেইরানভান্ড কালকের ম্যাচে দলে ফিরছেন বলে কুইরোজ নিশ্চিত করেছেন।

 

ভোরের আকাশ/নি