পটুয়াখালী ওজোপাডিকো বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী এসএম আব্দুল করিমকে লাঞ্চিত করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে একই প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী মাঈন উদ্দিনকে আসামি করে পটুয়াখালীর বিজ্ঞ আদালতে মামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে, যার মামলা নং (১৫৩৯/২২)।
মামলা সূত্রে জানা যায়, পটুয়াখালী ওজোপাডিকো নির্বাহী প্রকৌশলী মাঈন উদ্দিন সদর পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের ১নম্বর লেনে নবনির্মিত দশতলা বিশিষ্ট পটুয়াখালী টাওয়ারসহ একাধিক বহুতল ভবনে অবৈধ ভাবে (১১ হাজার) কেভি বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার প্রতিবাদ করলে এ লাঞ্ছনার ঘটনা ঘটে।
ঘটনার দিন গত ৬ নভেম্বর দুপুর ১টা ১৫ মিনিটে আসামি নির্বাহী প্রকৌশলী মাঈন উদ্দিন পটুয়াখালী পুরান বাসস্ট্যান্ডে অবস্থিত ওজোপাডিকো অফিসে তার কক্ষে আসতে বলে।
ভুক্তভোগী সহকারী প্রকৌশলী এসএম আব্দুল করিম ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলীর রুমে ঢুকতেই বলে তুই ন্যায়-অন্যায় বিচার করার কে? আমি যা বলি তা তুই পালন করবি। এই কথার প্রতিবাদে ভুক্তভোগী আসামিকে বলে, আমি অন্যায়ভাবে কোনো বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে পারবো না।
একথা বলে তার কক্ষ থেকে বের হয়ে আফিসের বারান্দায় আসলে আসামি মাঈন উদ্দিন উত্তেজিত হয়ে খুনের উদ্দেশ্যে ভুক্তভোগীর বাম চোখের নীচে ঘুষি মেরে গুরুতর জখম করে এবং অফিসের বারান্দায় থাকা পরিত্যক্ত জি আই পাইপ দিয়ে মাথার বাম পার্শ্বের আঘাত করে। যার ফলে সহকারী প্রকৌশলী এসএম আব্দুল করিম গুরুতর জখম হয়ে ঘটনাস্থলে অচেতন হয়ে পড়ে।
ওই দিন ৬ নভেম্বর আব্দুল করিমকে গুরুতর অবস্থায় পটুয়াখালী ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী সহকারী প্রকৌশলী এসএম আব্দুল করিম বলেন, পটুয়াখালী ওজোপাডিকোর ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী মাঈন উদ্দিনের অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় আমি এই হামলার শিকার হয়েছি।
ইতোমধ্যে আমার ওপর হামলার সার্বিক বিষয়বস্তু নিয়ে ওজোপাডিকো খুলনার ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ মেইল যোগে পাঠিয়েছি। এবং এ ঘটনার সঠিক বিচার পেতে বিজ্ঞ আদালতের শরণাপন্ন হয়েছি। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী মাঈন উদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলার সাক্ষীদের বদলির হুমকি দেয়া হচ্ছে।
বাদী এ বিষয়ে বলেন, মামলার সাক্ষী একই প্রতিঠানের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. ইব্রাহিম সহ আমার একাধিক সহকর্মী। আমি গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারি সকল সাক্ষীদের বদলির জন্য ওজোপাডিকো লি. পটুয়াখালীর তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী বরাবর লিখিত নোট করেছে আসামি মাঈন উদ্দিন। আমি সহ আমার মামলার সাক্ষীরা সবাই বিষয়টি নিয়ে আতঙ্কিত রয়েছি। কখন যে কার কপালে কি আছে বলা যায় না।
এ বিষয়ে পটুয়াখালী ওজোপাডিকো ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী মাঈন উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি তাকে কোনো দিন অবৈধ সংযোগ দিতে বলিনি। বরং তিনি নিজেই সকল অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগের সঙ্গে জড়িত। তাছাড়া তার বিরুদ্ধে একাধিক ব্যক্তির লিখত অভিযোগ রয়েছে আমার কাছে।
মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, আমি জানতে পেরেছি সহকারী প্রকৌশলী এসএম আব্দুল করিম আমার বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে মামলা করেছে। যে ঘটনার বিবরণ দিয়ে আমার বিরুদ্ধে মামলা করছে তা সত্য নয়। বরং আমি তার অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় সে উল্টো আমার গায়ে হাত তুলেছে।
আমি এই ঘটনার বিস্তারিত, ওপর মহলকে অবগত করেছি। এদিকে ওজোপাডিকো খুলনার ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে সার্বিক বিষয় জানতে চাইলে তিনি মুঠোফোনে বলেন, আমরা এবিষয়ে অবগত আছি। তদন্ত ছাড়া কিছু বলতে পারছিনা। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানাতে পারবো।
ভোরের আকাশ/নি