আল থুমামা স্টেডিয়ামে গ্রুপের শেষ ম্যাচে আজ কানাডার বিপক্ষে মরক্কোর একটাই প্রত্যাশা থাকবে জয়ী হয়ে কাতার বিশ্বকাপের নকআউট পর্বের টিকিট নিশ্চিত করা।
ইতোমধ্যে দুই ম্যাচ হেরে গ্রুপ-এফ থেকে বিদায় নিয়েছে কানাডা। আজকের ম্যাচটি তাদের কাছে শুধুই নিয়ম রক্ষার। কিন্তু উত্তর আমেরিকান দলটি এই ম্যাচের মাধ্যমে অন্তত বিশ্বকাপে ফিরে আসার যোগ্যতাটা আরো একবার প্রমাণ করতে চাইবে।
গ্রুপ এফের শীর্ষে থাকা তিন দল ক্রোয়েশিয়া, মরক্কো ও বেলজিয়ামের সুযোগ আছে পরের রাউন্ডে যাওয়ার। তবে দুই ম্যাচে চার পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে থাকা মরক্কো যদি জয়ী হয় বা অন্তত ড্র করে তবে আফ্রিকান দলটির জন্য নকআউট পর্ব সহজ হয়ে যাবে।
তবে এক্ষেত্রে দিনের আরেক ম্যাচে বেলজিয়ামকে ক্রোয়েশিয়ার কাছে হারতে বা ড্র করতে হবে। আর যদি মরক্কো হেরে যায় তবে হিসাব কিছুটা জটিল হয়ে যাবে। তখন ক্রোয়েশিয়াকে অন্তত দুই গোলের ব্যবধানে বেলজিয়ামের কাছে হারতে হবে। আর বেলজিয়াম হেরে গেলে ক্রোয়েশিয়া ও মরক্কোই যাবে পরের রাউন্ডে।
আবার মরক্কো যদি চার গোল কিংবা তার বেশি ব্যবধানে হারে তবে পরের ম্যাচটি ড্র হলেও তাদের বিদায় নিশ্চিত হয়ে যাবে। সহজ হিসাব হচ্ছে মরক্কোকে তাদের কাজটুকু সারতে হবে। দুই ম্যাচে চার পয়েন্ট পাওয়ার পরও পরের রাউন্ডে না যাওয়াটা তাদের জন্য দুর্ভাগ্যেরই হবে।
বিশেষ করে আগের ম্যাচে বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ের দ্বিতীয় স্থানে থাকা বেলজিয়ামকে ২-০ গোলে হারিয়ে মরক্কোনরা যেভাবে নিজেদের অবস্থানের জানান দিয়েছে, তাতে তাদের নকআউট পর্বে খেলাটা প্রাপ্য। ক্রোয়েশিয়ার সঙ্গেও প্রথম ম্যাচে গোলশূন্য ড্র করে বিশ্বকাপ শুরু করেছিল অ্যাটলাস লায়ন্সরা।
এ পর্যন্ত পুরো বিশ্বকাপে কোচ ওয়ালিদ রেগ্রাগুইয়ের মরক্কো বিস্ময়কর দল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। বড় দুই দলকে যেভাবে তারা প্রতিরোধ করেছে, তাতে যে কোনো প্রতিপক্ষই তাদের নিয়ে ভাবতে শুরু করেছে। তবে শেষ ১৬-তে প্রতিপক্ষ হিসেবে তাদের স্পেন কিংবা জার্মানির মোকাবিলা করার সম্ভাবনাই বেশি।
কানাডাও গতিময় ফুটবল উপহার দিয়ে সমর্থকদের মন জয় করেছে। যদিও ইতোমধ্যেই বিশ্বকাপ থেকে তারা বিদায় নিয়েছে। কিন্তু সমর্থকদের মনে তাদের প্রিয় দলের খেলা অনেক দিন মনে থাকবে। ক্রোয়েশিয়ার কাছে রক্ষণভাগের দুর্বলতায় ৪-১ গোল হেরে গেলেও বেলজিয়ামের সঙ্গে শুরুটা ভালোই করেছিল জন হার্ডম্যানের দল।
দারুণভাবে বেলজিয়ানদের রুখে দিয়ে ১-০ গোলের হার নিয়ে তারা মাঠ ছাড়ে। যদিও তারকা স্ট্রাইকার আলফোনসো ডেভিস পেনাল্টি মিস না করলে ম্যাচের ভাগ্য অন্যরকমও হতে পারত। ক্রোয়েটদের বিরুদ্ধে গোলরক্ষক মিলান বোয়ানের দক্ষতায় ছয় থেকে সাত গোল হজম করেনি কানাডা।
শেষ পর্যন্ত তাদের নামের পাশে বিশ্বকাপের গোল যোগ হয়েছে। পাঁচবারের প্রচেষ্টায় তারা ক্রোয়েটদের পোস্টে বল পাঠাতে সক্ষম হয়। এখন তাদের ২০২৬ ঘরের মাঠের বিশ্বকাপ নিয়ে মনোযোগী হতে হবে।
১৯৮৬ সালের পর বিশ্বকাপের মূল পর্বে খেলতে আসা কানাডা ওই আসরের মতো কোনো পয়েন্ট না নিয়ে বিদায়ের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে।
কিন্তু আগামী বিশ্বকাপে শক্তিশালী একটি তারুণ্যনির্ভর দল নিয়ে ঘরের মাঠে যে কোনো দলের মোকাবিলা করার আগাম চ্যালেঞ্জটা তারা কাতারে রেখে যাচ্ছে। এ বছর ম্যাপল লিফসরা যে গ্রুপে পড়েছে, সেখানে গত আসরের দ্বিতীয় ও তৃতীয় দল রয়েছে। এটাও তাদের জন্য একটি দুর্ভাগ্য ছিল।
শেষ ম্যাচে হার্ডম্যান কিছু কিছু ক্ষেত্রে হয়তোবা অলআউট ফুটবল খেলার সাহস দেখাবেন, যেহেতু তাদের আর হারানোর কিছু নেই। ৩৯ বছর বয়সী আটিবা হাচিনসেনর স্থানে হয়তোবা মূল একাদশে আসতে পারে দুই ম্যাচে বদলি বেঞ্চে থাকা ইসমায়েল কোনে। ক্রোয়েটদের বিরুদ্ধে জুনিয়র হোইলেটের জায়গায় খেলতে নামা বাইল লারিন নিজেকে খুব একটা মেলে ধরতে পারেননি।
সে কারণে আবারো হোইলেটের ফিরে আসার আভাস রয়েছে। জোনথান ডেভিডের সঙ্গে ডেভিসই আক্রমণভাগ সামলানোর দায়িত্বে থাকছেন। মরক্কোর গোলরক্ষক ইয়াসিন বুনু অসুস্থ বোধ করায় শেষ মুহূর্তে বাদ পড়েছিলেন। প্রথম ম্যাচে ইনজুরিতে পড়া ফুল-ব্যাক মুনির মোহাম্মদ ফিটনেস দেখিয়ে দলে ফিরেছেন।
ভোরের আকাশ/নি