logo
আপডেট : ৩ ডিসেম্বর, ২০২২ ১৮:২৭
এইডস আক্রান্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর সুরক্ষায় ১১ দাবি
নিজস্ব প্রতিবেদক

এইডস আক্রান্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর সুরক্ষায় ১১ দাবি

এইচআইভি/এইডস এ আক্রান্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর সুরক্ষায় পিএলএইচআইভি জনগোষ্ঠীর সঠিক সংখ্যা নির্ধারণ করে প্রত্যেককে চিকিৎসার আওতায় নিয়ে আসা, ওষুধের পাশাপাশি তাদের অন্যান্য চিকিৎসা সেবা সহজলভ্য ও বৈষম্যহীন করাসহ ১১ দাবি জানানো হয়েছে।


শনিবার সকালে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের জাহেদ হাসান মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে এ দাবি জানানো হয়। এইচআইভি/এইডস এ আক্রান্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর (কমিউনিটি ফোরাম অব বাংলাদেশ) আয়োজনে এই মিডিয়া এ্যাডভোকেসি গোলটেবিল বৈঠক অনুিষ্ঠত হয়। আলোচ্য অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ হেলথ রিপোটার্স ফোরোমের (বিভিন্ন ইলেকট্রনিক, প্রিন্ট ও অনলাইন মিডিয়ার) সাংবাদিকবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।

 

জাতীয় পিএলএইচআইভি নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক হাফিজউদ্দিন মুন্না ১১ দফা দাবি উত্থাপন করেন এবং সেই দাবি বাস্তবায়নে সরকার ও সংশ্লিষ্ট জনদের প্রতি আহ্বান জানান।

 

অন্য দাবি গুলো হচ্ছে- সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের আরো দায়িত্বশীল আচরণ, পিএলএইচআইভিদের সঙ্গে যে কোনো ধরনের হয়রানি ও বৈষম্যমূলক আচরণ পরিহার করা, তাদের জন্য বৃত্তিমূলক ও মানানসই কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা ব্যবস্থা করা, তাদেরকে সামাজিক সুরক্ষা বেষ্টনীর আওতায় নিয়ে আসা, নতুনভাবে আক্রান্ত ব্যক্তিদের কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করা, তাদের জন্য সহজ শর্তে লোনের ব্যবস্থা করা, প্রত্যেকটি ‘কেএপি’ জনগোষ্ঠীকে এইচআইভি সচেতনতামূলক কার্যক্রমে যুক্ত করা, অভিবাসীগণ বিদেশ যাওয়ার পূর্বেই এইচআইভি সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দেওয়া ও সর্বোপরি আক্রান্ত ব্যক্তিকে একজন মানুষ হিসেবে পূর্ণ মর্যাদা দেওয়া।

 

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও সিনিয়র সাংবাদিক মনজুরুল আহসান বুলবুল। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদ জাতীয় এইডস/এসটিডি প্রোগ্রামের সহকারী পরিচালক মাহবুবুর রহমান, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ওয়েজ আর্নার ওয়েলফেয়ার বোর্ডের উপ পরিচালক জাহিদ অনোয়ার, ইউএনএইডস, বাংলাদেশ এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. সায়মা খান, উইএনওডিসি এর ন্যাশনাল প্রোগ্রাম অফিসার আবু তাহের ও বাংলাদেশ হেলথ রিপোটার্স ফোরোমের সভাপতি এম এম রাশেদ রাব্বি।

 

এছাড়াও এইচআইভি/এইডস এ আক্রান্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। আলোচ্য অনুষ্ঠানে কিনোট স্পিকার হিসেবে মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ওকাপ ও কনভেনর কমিউনিটি ফোরাম অব বাংলাদেশ এর চেয়ারপারসন শাকিরুল ইসলাম ।

 

প্রতি বছর ২৫ নভেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত সিক্সটিন ডেইস অব এ্যাকটিভিজম দিবস পালিত হয় । এই বছর ওকাপ ও কয়েকটি সমমনা সংস্থা বাংলাদেশে সিক্সটিন ডেইস অব এ্যাকটিভিজম এর আওতায় নারীর প্রতি সহিংসতা দিবস, বিশ্ব এইডস দিবস ও আন্তজার্তিক মানবাধিকার দিবস উদযাপন করছে। এই গোলটেবিল বৈঠক আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য ছিলো বিভিন্ন ইলেকট্রনিক, প্রিন্ট ও অনলাইন মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দের মধ্যে আলোচ্য দিবসগুলো নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করা যাতে করে তারা লেখনীর মাধ্যমে এইচআইভি-এইডস এ ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বৈষম্য ও অসমতা দূর করতে ভূমিকা রাখতে পারে। পাশাপাশি সরকারের বিভিন্ন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও নীতিনির্ধারনী পর্যায়ে উল্লেখিত বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহনে ভূমিকা রাখতে পারে।

 

সভাপতির বক্তব্যে মনজুরুল আহসান বুলবুল সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকবৃন্দকে নিয়ে একটি ক্লোজ ওয়ার্র্কিং গ্রুপ করার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি জাতীয় নীতিগত কোন পরিবর্তন প্রয়োজন হলে দ্রুত সেটি নিয়ে কাজ করার আহ্বান জানান। পাশাপাশি সরকারের বিভিন্ন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর যাতে একসাথে যৌথভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করে সে অনুযায়ী কর্মপরিকল্পনা তৈরী ও বাস্তবায়নে জোর দেন।

 

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মাহবুবুর রহমান বলেন, এইচআইভি/এইডস এ আক্রান্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়টি শুধু তারা দেখে। সামাজিক সুরক্ষা ও মানবাধিকারসহ অন্যান্য বিষয়গুলো দেখভালের জন্য সংশিষ্ট অন্যান্য মন্ত্রনালয়কে এগিয়ে আসতে হবে।

 

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জাহিদ অনোয়ার বলেন, যে সরকার ইতোমধ্যে প্রবাসীদের জন্য বিভিন্ন সুরক্ষামূলক উদ্যোগ গ্রহন করেছে। তিনি এইচআইভি আক্রান্ত অভিবাসীদের স্বাস্থ্য বীমার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করার দাবী মন্ত্রনালয় বরাবর লিখিতভাবে জানানোর অনুরোধ করেন।

 

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ড. সায়মা খান উল্লেখ করেন যে মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার দেশসমূহে এইচআইভি আক্রান্তের হার বেশি। বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর প্রচুর মানুষ মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার দেশসমূহে কাজের জন্য যায়। এটি একটি বড় ঝুঁকির বিষয়।

 

ভোরের আকাশ/আসা