logo
আপডেট : ৭ ডিসেম্বর, ২০২২ ২০:৩০
ডেডলাইন ১০ ডিসেম্বর
বিকল্প ভেন্যু প্রস্তাবে সাড়া দেবে না আ.লীগ
নিখিল মানখিন

বিকল্প ভেন্যু প্রস্তাবে সাড়া দেবে না আ.লীগ

নিখিল মানখিন: আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় সম্মেলনের জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অনুমতিপ্রাপ্ত সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও তুরাগের তীর ব্যতীত অন্য জায়গার প্রস্তাব পেলে বিবেচনা করে দেখবে বলে জানিয়ে রেখেছে বিএনপি। কিন্তু বিএনপির এমন প্রস্তাবে আওয়ামী লীগ সাড়া দেবে না বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। বুধবার পল্টনে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা আওয়ামী লীগকে আরো ক্ষুব্ধ করে তুলেছে।

 

আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশ। তবে সমাবেশের ভেন্যু নিয়ে এখনো মুখোমুখি অবস্থানে বিএনপি ও সরকার। দলটির মহাসমাবেশের জন্য ডিএমপির পক্ষ থেকে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান নির্ধারণ করা হলেও নাখোশ বিএনপি। তবে তারা নিজেদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করতে চায়। পরে রোববার কিছুটা নমনীয় হয়েছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও তুরাগের তীর ছাড়া বিকল্প ভেন্যুর প্রস্তাব এলে ভেবে দেখবে বলে জানিয়েছে দলটি। অর্থাৎ ঘুরেফিরে দ্বিমত রয়েই যাচ্ছে বিএনপির কথাবার্তায়। তবে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই বিএনপিকে সমাবেশ করতে হবে বলে মঙ্গলবার স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে ডিএমপি।

 

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা বলছেন, আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় সম্মেলন ইস্যুতে বিএনপির প্রতি পর্যাপ্ত আন্তরিকতা ও সহযোগিতা দেখিয়ে আসছে দলটি। আমাদের সহযোগিতার মনোভাব ও উদারতাকে তারা (বিএনপি) নেতিবাচকভাবে নিয়েছে, অসম্মান দেখিয়েছে। রাজধানীতে জাতীয় পর্যায়ের যেকোনো সম্মেলনের জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যান যে সবচেয়ে নিরাপদ ও উত্তম ভেন্যু, তা শুধু দেশবাসী নন, বিএনপি নেতাকর্মীরাও প্রকাশ্যে না হলেও মনে মনে স্বীকার করবেন। সম্মেলন নয়, অযৌক্তিক অজুহাত দেখিয়ে দেশের শান্তিপূর্ণ পরিবেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে চায় বিএনপি। ঢাকার সমাবেশে লাখো মানুষ জমায়েত ঘটানোর ঘোষণা দিয়ে আসছেন বিএনপির নেতারা। লাখো মানুষের সমাবেশের জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বিষয়টি বিএনপির এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। রাজধানীর মতো ব্যস্ততম নগরীর রাস্তাঘাটে লাখো মানুষ নিয়ে সমাবেশ করার জন্য কোনো দলকেই অনুমতি দিতে পারে না সরকার। মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের। বিএনপির প্রতি যথেষ্ট উদারতা দেখিয়েছি। বিএনপির বিকল্প ভেন্যুর প্রস্তাবের ব্যাপারে আওয়ামী লীগের করার কিছু নেই। বিএনপিকে অনেক সুযোগ দেয়া হয়েছে। তারা নিজেরাই নিজেদের কপাল পুড়িয়েছে বলে জানান দলটির নীতিনির্ধারকরা।

 

আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা বলেন, আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির সমাবেশ আয়োজনে আন্তরিকভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে যাচ্ছেন তারা। রাজধানীতে জনসমাবেশ করার জন্য বর্তমানে সবচেয়ে উত্তম স্থানটি হলো সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। এ স্থানটি এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই বিএনপির। দিয়েছে সমাবেশের জায়গা। সমাবেশের দিন ঢাকা মহানগর এলাকায় কোনো কর্মসূচি রাখা হয়নি। আর পরিবহন ধর্মঘট না ডাকার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তাদের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নির্বিঘ্নে সমাবেশ করতে দেয়ার জন্য ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলন দুদিন এগিয়ে আনা হয়েছে। একই সঙ্গে ৬ ডিসেম্বর ছাত্রলীগের সম্মেলন শেষ হওয়ার দুদিনের মধ্যেই সম্মেলন মঞ্চ ও প্যান্ডেল সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

 

আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন ভোরের আকাশকে বলেন, ঢাকায় বিএনপির সম্মেলন আয়োজনে যে ধরনের সহযোগিতা দেখিয়ে আসছে, তা দেশবাসী প্রত্যক্ষ করছে। বিএনপির বিকল্প ভেন্যুর প্রস্তাবের বিষয়টি এখন দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর হাতে। গোয়েন্দা রিপোর্ট পর্যালোচনা করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই বিএনপিকে সমাবেশ করতে হবে বলে ইতোমধ্যে জানিয়ে দিয়েছে ডিএমপি। এখানে আওয়ামী লীগের করার কিছুই নেই। বিএনপির প্রতি অনেক উদারতা দেখানো হয়েছে বলে জানান দেলোয়ার হোসেন।

 

আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী ভোরের আকাশকে বলেন, বিকল্প ভেন্যুর বিষয়টি আওয়ামী লীগের হাতে নেই। বিএনপির সম্মেলন আয়োজনে আমরা সর্বোচ্চ উদারতা দেখিয়েছি। তারা নিজেরাই নিজেদের কপাল পুড়িয়েছে। তিনি আরো বলেন, বুধবার পল্টনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধিয়ে আগামী ১০ ডিসেম্বর সম্মেলনের নামে তারা কী করতে চায়, তা ইতোমধ্যে প্রকাশ করেছে বিএনপি।

 

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক মির্জা আজম ভোরের আকাশকে বলেন, আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় সম্মেলন ইস্যুতে বিএনপির প্রতি পর্যাপ্ত আন্তরিকতা ও সহযোগিতা দেখিয়ে আসছে আওয়ামী লীগ। আমাদের সহযোগিতার মনোভাব ও উদারতাকে তারা (বিএনপি) নেতিবাচকভাবে নিয়েছে, অসম্মান দেখিয়েছে। রাজধানীতে জাতীয় পর্যায়ের যেকোনো সম্মেলনের জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যান যে সবচেয়ে নিরাপদ ও উত্তম ভেন্যু, তা শুধু দেশবাসী নন, বিএনপির নেতাকর্মীরাও প্রকাশ্যে না হলেও মনে মনে স্বীকার করবেন। সম্মেলন নয়, অযৌক্তিক অজুহাত দেখিয়ে দেশের শান্তিপূর্ণ পরিবেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে চায় বিএনপি। বিএনপির প্রতি যথেষ্ট উদারতা দেখিয়েছি। বিএনপির বিকল্প ভেন্যুর প্রস্তাবের ব্যাপারে আওয়ামী লীগের করার কিছু নেই বলে জানান মির্জা আজম।