নাজনীন বেগম: নতুন বছরের ১ জানুয়ারি প্রাইমারি থেকে মাধ্যমিকে বই বিতরণ করার নিয়ম চালু আছে। কচি-কাঁচা শিশু-কিশোরদের মধ্যে এই পাঠ্যপুস্তক বিতরণ এক ধরনের বই উৎসবের মতোই। তবে ইতোমধ্যে কাগজের দাম বেড়ে যাওয়ায় মুদ্রণশিল্পের সংকটও দৃশ্যমান হচ্ছে। তা সত্তে¡ও সরকার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সময়মতো বই যাতে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে যায় সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রায়।
কিছু বিলম্ব হওয়ার আশঙ্কাও অমূলক নয়। তবে বেশি দেরি করবে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। আমাদের প্রত্যেকেরই প্রত্যাশা অপেক্ষমাণ উৎসাহী শিক্ষার্থীরা যেন তাদের পরম আকাক্সক্ষাকে বাস্তবের দরজায় স্বাগত জানাতে পারে। একটু দেরি হলেও অধৈর্য হওয়ার মতো কিছু না ঘটাই যেন স্বাভাবিক হয়।
২০০৯ সাল থেকে বন্ধ হয়ে যাওয়া প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষার পুনরায় সূচনা হচ্ছে চলতি বছরের ক্রান্তিলগ্নে। বৃত্তি পরীক্ষা ছিল মূলত মেধা ও মননের ভিত্তিতে কয়েকজনকে যাচাই-বাছাই করে একটি মানসম্মত পরীক্ষায় বসানো। শিক্ষার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে মেধাকে বিবেচনায় আনা ছাড়াও সদ্য বার্ষিক পরীক্ষার ফলও বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় আসত।
তীক্ষ্ণ মেধাবী ও সাধারণ মানের শিক্ষার্থীদের মান নির্ণয়ে বৃত্তির অর্থেরও হেরফের হওয়া সঙ্গত ছিল। অঞ্চলভিত্তিক বোর্ডবহিভর্‚ত এমন পরীক্ষায় অসাধারণ কৃতিত্বের জন্য মূল্যমান যা ধরা হতো সেখানে সাধারণরা পেত তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী। নির্দিষ্ট অঞ্চলকেন্দ্রিক এমন মানসম্মত পরীক্ষায় প্রাথমিক যাচাই-বাছাই হতো শিক্ষার্থীর চলমান শ্রেণির পরীক্ষার ফল অনুযায়ী।
অর্থাৎ সবাই এমন বৃত্তি পরীক্ষায় অংশও নিতে পারত না। সংশ্লিষ্ট শিক্ষকরাই মেধা ও মনন যাচাই আর নিকটতম পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের তালিকা তৈরি করতেন। কিন্তু ২০০৯ সাল থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দ্বিতীয়তম সরকারি মেয়াদে অনেক পরিবর্তন, রূপান্তর কিংবা যুগান্তরেরও চাহিদা ছিল কি না সেটাও সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের বিবেচ্য বিষয়। তবে বাস্তব প্রেক্ষাপট অনেক সময় সবকিছুকে ছাপিয়ে নতুনভাবে দৃশ্যমান হতে থাকে যা আলোচনায় এলেও সিদ্ধান্ত নেয়া কঠিনই বলা যেতে পারে। তেমনই ২০০৯ থেকে পঞ্চম শ্রেণির বৃত্তি পরীক্ষার জায়গায় নতুন চমক তৈরি হলো প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা। যার পুরো নিয়ন্ত্রণে কর্তৃপক্ষ হিসেবে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
আমরা যারা আগে পঞ্চম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার পর ফলের দিক থেকে এগিয়ে থাকতাম, শেষ অবধি তারাই বৃত্তি পরীক্ষার জন্য নির্বাচিতও হতো। তবে নতুন যে শিক্ষা পদ্ধতি ২০০৯ সাল থেকে শুভ সূচনা করা হয় তা ভিন্নমাত্রার তো বটেই, বরং বৃত্তি পরীক্ষা দেয়ার সুযোগও থাকেনি। পিইসি যাকে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা হিসেবে নির্ধারণ করা হয়। আর এই প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে পরীক্ষায় অংশ নিতে গেলে সরকার অনুমোদিত কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী হওয়াও বাঞ্ছনীয় ছিল।
তবে ২০২২ সাল থেকে এমন পরীক্ষা পদ্ধতি আর না থাকার ইঙ্গিত দিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। ২০০৯ সালেই প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় ফলের আশাতীত সংবাদ সারা দেশকে মাতিয়েও দেয়। পরীক্ষায় গড় পাসের হার ছিল প্রায়ই ৮৯%। পদ্ধতি হিসেবে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমি কর্তৃক প্রণীত অভিন্ন প্রশ্নের মাধ্যমে সারা দেশে একই সময়ে এ পরীক্ষার আয়োজন করাও ছিল নিয়মমাফিক ব্যবস্থাপনা।
অন্যান্য স্কুল সার্টিফিকেট যেমনÑ জেএসসি কিংবা এসএসসি, এমনকি এইচএসসি পরীক্ষাও বাংলাদেশ শিক্ষা বোর্ড নিয়ন্ত্রণ করলেও প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী ও সমমানের পরীক্ষাগুলোর দায়িত্বে থাকে খোদ মন্ত্রণালয়। ২০০৯ সালের নতুন এই পদ্ধতি নিয়ে কর্তৃপক্ষ বিশেষভাবে উল্লেখ করেন- গুটিকয়েক বৃত্তি পরীক্ষার জন্য বাছাই করা শিক্ষার্থীদের অপেক্ষাকৃত বেশি যতœ নেয়া জরুরি হয়ে যায়। সঙ্গত কারণে বাকি শিক্ষার্থীরা কিছুটা অবহেলিত অবশ্যই হয়। তাই সবাইকে এককাতারে নিয়ে এসে সমান নজরদারি করলে আরো ভালো ফল আশাই করা যায়।
সেখানেও বৃত্তি দেয়ার নিয়ম চালু রাখা হয়। কারণ, এমন সব পাবলিক পরীক্ষায় যারা আশানুরূপ কৃতিত্ব দেখাবে, তাদের মধ্য থেকেই প্রথম ৫০ হাজারকে সারা দেশে বৃত্তি দেয়ার ব্যবস্থা চালু রাখাও ছিল নতুন এই ফল কার্যক্রমের মেধা ও মনন যাচাইয়ের সোপান। ২০১১ সালে অনুষ্ঠিত এই প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় পাসের হার বেড়ে দাঁড়ায় ৯৭.২৬%। আশাতীত ফল। তেমন পরীক্ষা পদ্ধতি নতুনভাবে সংশোধন করা সময় ও যুগের নবতর কার্যক্রম।
তবে গত দুই বছরের করোনা সংক্রমণও পুরো শিক্ষা ব্যবস্থাপনার ওপর যে তীক্ষ্ণ আঁচড় বসায়, তার ক্ষতবিক্ষত পালাক্রম কোনো এক সিদ্ধান্তে দূরীভ‚ত হবে তা যেমন অকল্পনীয়, একইভাবে আশঙ্কাজনকও বটে। বর্তমানে বৃত্তি পরীক্ষার প্রচলন হলে পঞ্চম শ্রেণির কৃতিত্বের মান কীভাবে নির্ধারণ হবে সেটাও আলোছায়ায়। যেমন বলা হচ্ছে সারা বছরের মূল্যায়ন পদ্ধতি ছাড়াও কিছু প্রতিবেদন জমা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মান নিরূপণ করাও বর্তমান সময়ের নবতর কর্মপরিকল্পনা।
কিন্তু প্রশ্ন থেকেই যায়, পরীক্ষাবহির্ভূত এমন সব পদ্ধতি কতখানি মান যাচাই কিংবা বিশ্জবনীন হবে, তাও ধারণা করা মুশকিল। তথ্যপ্রযুক্তির স¤প্রসারিত বিশে^ কোনো দেশ আর আন্তর্জাতিক বলয় থেকে বিচ্ছিন্ন কিংবা বিযুক্ত নয়। আমাদের দেশের প্রচুর শিক্ষার্থী কোনো এক সময় দেশের বাইরে শিক্ষাক্রমে যুক্ত হওয়া বহু সময় থেকে চলে আসা এক অবধারিত পাঠক্রম। সুতরাং দেশের শিক্ষা কার্যক্রমেও থাকতে হবে বিশ^ পরিসরের জ্ঞান-বিজ্ঞান, আর্থ-সামাজিক পরিমন্ডল সবই।
এর অন্যথা হলে আমাদের দেশের প্রচুর মেধাবী শিক্ষার্থী বিদেশে পড়তে যাওয়া থেকে ক্রমান্বয়ে ঝরে পড়ার আশঙ্কা থেকেই যাবে। বর্তমানে প্রাথমিক সমাপনী কিংবা পরবর্তীতে জেএসসি পরীক্ষাও একেবারে বাদ দেয়া কতখানি যুক্তিসঙ্গত তা শুধু সময়ের ওপর ছেড়ে দিলেই চলবে না। বরং অভিজ্ঞ, বিশেষজ্ঞ শিক্ষকমন্ডলীর পরামর্শ নেয়া বাঞ্ছনীয় ও সচেতন দায়বদ্ধতাও। জাতির মেরুদন্ড শিক্ষা কার্যক্রম করোনার চরম সংকটকালে যে দুর্গতির আবর্তে পড়েছে, সেখান থেকে এখন অবধি বের হওয়াও কঠিন এক সময়ের মুখোমুখি।
কারণ, প্রায়ই দেড় বছর শিক্ষা কার্যক্রমের ওপর যে ব্যবচ্ছেদ টানা হয়, গত ১ বছরেও তার সুরাহা হয়নি। বর্তমানে আমরা করোনা নয়, বরং অন্যমাত্রার দুঃসময় পার করার চরম সন্ধিক্ষণে। করোনাকালের ক্ষতির হিসাব করতেই লেগে গেল ২ বছরের অধিক সময়। ২০২২ সালের মাঝপথেই বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা যে মাত্রায় তার বিপন্ন অবস্থান জানান দিচ্ছে, কালক্রমে তা কতখানি মারাত্মক হবে সেটাও আন্দাজ করা মুশকিল। অর্থনীতি যদি হুমকির মুখে পড়ে তাহলে সার্বিক পরিস্থিতি প্রতিক‚লের হাওয়ায় দোদুল্যমান হতেও সময় লাগে না।
আর আমরা জানি করোনা জাতির মেরুদন্ড শিক্ষা কর্মযোগকে কতখানি বিপর্যস্ত করেছে। তার লোকসান ইতোমধ্যে গোনাও শুরু হয়ে গেছে। প্রায় দেড় বছর প্রাতিষ্ঠানিক আঙিনা বিচ্ছিন্ন। প্রযুক্তির মাধ্যমে পাঠদান ও গ্রহণ কতখানি ফলপ্রসূ হয়েছে সে হিসাব তো মিলবারই নয়, মিলেওনি। যতদিন যাবে শিক্ষা কার্যক্রমের কঠিন সময় ততই তার স্বরূপ উদ্ঘাটনে পিছিয়েও থাকবে না। তারপরও মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় আমরা যেভাবে শত্রুর মোকাবিলা করেছি, এখনো বিপরীত স্রোতকে সামলাতে যা যা দরকার সবটা করাই যেন পরিস্থিতির চাহিদা।
শিক্ষা কার্যক্রমের ওপর নিত্যনতুন ব্যবস্থা আরোপ করার চেয়েও চলমান ব্যবস্থাপনাকে কতখানি সংহত, যৌক্তিক এবং শিক্ষাবান্ধব করা যাবে, সে বিষয়ে যথার্থ ভাবনাকে আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিভিন্নভাবে খতিয়েও দেখতে হবে। শিক্ষা শুধু শিরদাঁড়া উঁচু করাই নয়, বরং আগামীর বাংলাদেশ তৈরির অবধারিত প্রেক্ষাপটও বটে। যা দেশকে বিশ্ব কাতারে নিয়ে যেতে পেছনের দিকে মোটেও তাকাবে না। সেখানে কোনো অসংহত বিধি ব্যবস্থা কিংবা জাতি গঠনের যৌক্তিক উপকরণের ওপর অনাকাক্সিক্ষত চাপ তৈরি করা দেশের জন্য কতখানি মঙ্গল হবে, তাও বিবেচনাসাপেক্ষ।
বাংলাদেশ অবকাঠামো উন্নয়নে নজরকাড়া নিঃসন্দেহে। কিন্তু জ্ঞানচর্চার বহুমাত্রিক পাদপীঠকে সুসংবদ্ধ, যৌক্তিক ও উপযোগী করার লক্ষ্যে কেবল কার্যক্রমই নয়, বরং বিশ^মানের পাঠক্রমও সন্নিবেশিত করা যুগের দাবি। কারণ, কচি-কাঁচা কোমলমতি শিশু-কিশোররা নরম মৃত্তিকার মতো স্পর্শকাতর-ই শুধু নয়, বরং যেভাবে তৈরি করা হবে সেভাবেই গড়ে ওঠাটাও নিয়ম-সংস্কারের অপরিহার্য বিধি। সেখানে সামান্য ভুলত্রæটিতে পুরো ব্যবস্থাপনা যেন দুর্ভাবনার শিকার না হয়।
শৈশব থেকে কৈশোর কিংবা পরবর্তীতে যৌবনের স্বর্ণদ্বারেও শিক্ষা গ্রহণ যেন সংশ্লিষ্টদের শুধু আনন্দের খোরাকই হবে না, জীবন গড়ারও মূল হাতিয়ার হিসেবে বিবেচিত হওয়া বাঞ্ছনীয়। শিক্ষায়, জ্ঞানচর্চায়, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে বিশ্বের আমরা গৌরবান্বিত জাতি হিসেবে পরিচিত। আমাদের মাতৃভাষাও চিরায়ত বাংলার সমৃদ্ধ বৈভব। আমরা অস্তিত্ব সংকটের মহাসমুদ্র পাড়ি দেয়া লড়াকু দেশপ্রেমিক বাঙালি, লড়াই করেছি ভাষার জন্য। আমাদের শিক্ষার ঐতিহ্যও আবহমান কালের। যুগ যুগ ধরে চলে আসা বাঙালির চিরায়ত ঐতিহ্য লালন ও ধারণে আমরা এখনো স্বকীয় বৈশিষ্ট্যে নিজেদের এগিয়ে নিচ্ছি।
শিক্ষার অবকাঠামোগত ব্যবস্থাপনাও আমাদের আজন্ম লালিত স্বপ্ন। স্কুল, কলেজের সংখ্যাই শুধু বৃদ্ধি পাচ্ছে না, বরং সারা বাংলাদেশে সরকারি-বেসরকারি বিশ্ব বিদ্যালয়ের সংখ্যাও এখন আর হাতে গোনার অবস্থায় নেই। আমাদের আছে বিশ্ব মানের বহুমাত্রিক শিক্ষাবিদ, বিশেষজ্ঞ জাতি গড়ার কারিগর। নিজেরাই তৈরি করতে পারি বিশ্ব মানের সমৃদ্ধ শিক্ষা পাঠক্রম যা শুধু দেশের মান বাড়াবে না, বেশি করে মানসম্মত সুনাগরিক বিশ্বেও নজরকাড়া হবে। হয়েছেও তাই।
শিক্ষার প্রাতিষ্ঠানিক ও জ্ঞানচর্চার বলয়ের জন্য যা যা দরকার কোনোটাই আমাদের ঘাটতি নেই। বরং প্রয়োজন একসঙ্গে মিলেমিশে সবার জন্য যা মঙ্গলজনক তা করা। বিশ^জনীন অপার সমারোহ যেন আমাদের ঘিরে রাখে, তেমন মানসম্মত বিদ্যাচর্চাও অত্যন্ত জরুরি।
সুতরাং প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা বাদ দেয়ার বিষয়েও আরো বিশিষ্ট ও বিজ্ঞজনদের পরামর্শ নেয়া বিশেষ দায়বদ্ধতা। পঞ্চম শ্রেণিতে বৃত্তির কর্মপরিকল্পনা হাতে নেয়াও এক বিশেষ কার্যক্রম। আগে (২০০৮ পর্যন্ত) বৃত্তির সঙ্গে সমাপনী পরীক্ষাও (বার্ষিক) সম্পৃক্ত ছিল। শুধু মূল্যায়ন পদ্ধতি কিংবা প্রতিবেদন জমা নেয়ার মধ্যে শিক্ষক ও অভিভাবকের পক্ষপাতিত্বও কতখানি এড়ানো যাবে, তাও বিবেচনায় আসা সঙ্গত।
তবে বৃত্তি পরীক্ষার জন্য কতজনকে সুযোগ দেয়া যেতে পারে সেটারও একটা চিরায়ত বিধি ব্যবস্থা আছে। আগে তো বার্ষিক পরীক্ষার ফলের ওপর বৃত্তির উপযোগী শিক্ষার্থীর মান যাচাই করে তাকে অনুমোদন দেয়া হতো। সেক্ষেত্রে কতজন তারও একটা আইনানুগ সংখ্যা আছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, যোগ্য পরীক্ষার্থীদের যথাযথ সুযোগ দেয়া। সেটা নির্ধারণ করাও খুব সহজ হবে নাÑ যদি নতুন কোনো বিধিমালা প্রণীত না হয়।
শুধু পঞ্চম শ্রেণি নয় পরবর্তীতে অষ্টম শ্রেণিতেও বৃত্তি দেয়ার নিয়ম পুনরায় প্রচলন হচ্ছে। সেখানেও শিক্ষার্থী বাছাইয়ে জটিলতা তৈরি হবে কি না তাও নির্দ্বিধায় বলা মুশকিল। কারণ, শুধু সারা বছরের সংশ্লিষ্ট শিক্ষক কর্তৃক মূল্যায়নই নয়, বরং জমাকৃত প্রতিবেদনও মান যাচাইয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে। মূল্যায়ন এবং প্রতিবেদন করোনার চরম দুঃসময়ে শিক্ষার্থীর জ্ঞান ও বিদ্যাচর্চার মাপকাঠি ছিল। যা শুধু প্রশ্নবিদ্ধই নয়, এখন অবধি এ নিয়ে তর্ক-বিতর্কেরও শেষ পরিশেষ নেই।
সবসময়ই বলা হয়েছে, নতুন এমন সব পদ্ধতি শিক্ষার্থীদের মান যাচাইয়ে যথেষ্ট নয়। কেননা, এতে পক্ষপাতিত্বের সুযোগ যেমন থাকে, তেমনি প্রতিবেদন নিজেই লিখছে কি না তাও প্রমাণসাপেক্ষ। যা আদৌ সম্ভব কি না সে ভার সংশ্লিষ্টদের ওপর। তবে শিক্ষাজীবন ও জ্ঞানচর্চার প্রাথমিক স্তর যদি দুর্বলতার শিকার হয়, তবে পরবর্তীতে তেমন দুঃসময় কাটানো অত সহজ হবে কি না তাও প্রশ্নবিদ্ধ। জাতির আগামীর ভবিষ্যৎ কোন্ পথে...
ভোরের আকাশ/নি