logo
আপডেট : ৫ জানুয়ারি, ২০২৩ ১৪:৪৩
দেশি বিদেশি পাখির কলরবে মুখর উকরি’র বিল
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

দেশি বিদেশি পাখির কলরবে মুখর উকরি’র বিল

বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে জলরাশি মাঝে মাঝে রয়েছে শাপলা, শালুক আর পদ্ম পাতা। আর সেই পদ্ম পাতার উপরে ভর করে মাছ শিকারে ব্যস্ত বক, রাঙা ময়ূরী, ছোট স্বরালী, সারশ, গাঙচিল, পানকৌড়ি, ককসহ নানা প্রজাতির দেশি-বিদেশী হাজারও পাখি। কখনও জলকেলি আবার কখন মুক্ত আকাশে উড়ে বেড়াচ্ছে দলবেঁধে।

 

আবার কখনও মাছ শিকারের জন্য থাকছে ওৎ পেতে। ভোর থেকে সন্ধ্যা অবধি পাখির এমন অবাধ বিচরণ ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী উকড়ি’র বিলে। শীতের শুরুতেই প্রতিবছর দূর দেশ থেকে ডানায় ভর করে এখানে আসে একটু আশ্রয় ও খাদ্যের আশায়। উকড়ি’র বিল এখন সেই পাখিদের নিরাপদ আশ্রয়।

 

এলাকাবাসীরা জানান, উকড়ি’র বিলের চারপাশে শাপলা, আর পদ্ম পাতা জন্ম নিয়েছে অনেক আগে। সেখানেই নিরাপদ আশ্রয় গড়ে তুলেছে পাখিরা। দিনভর বিলের বিভিন্ন প্রান্তে শামুক, মাছ শিকার করে তারা। পাখির কলকাকলিতে মুখর থাকে পুরো এলাকা। চারিদিকে ডানা ঝাপটানো উড়াউড়ির সঙ্গে পাখির কিচিরমিচির শব্দ মন কেড়েছে পাখি প্রেমিদের।

 

হাজার হাজার পাখি যখন শুরু করে চিচির-মিচির তখনই সৃষ্টি হয় ভিন্নতর নান্দনিক আবহ। তাই প্রতিদিন সেখানে ভীড় করেন নানা শ্রেণী পেশার মানুষ। সেখানে ঘুরার জন্য রয়েছে নৌকার ব্যবস্থাও। এসব পাখি দেখতে আসা মানুষরা যেমন খুশি তার চেয়ে বেশি গ্রামবাসীরা।

 

করিঞ্চা গ্রামের বাসিন্দা শরিফুল ইসলাম বলেন, আমাদের বিলে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হাজার হাজার পাখি উড়ে বেড়াই। দেখতে অনেক ভালো লাগে। পাখি যখন আকাশে ওড়ে তখন খুব ভালো লাগে দেখতে। শাপলা পাতার ফাঁকে ফাঁকে হাজার হাজার পাখি বসে থাকে। সারাদিন বিলে ঘুরে বেরাই।

 

একই গ্রামের আমিন হোসেন বলেন, এখানে বিলের পাখি দেখতে অনেকেই আসে। আগে পাখি শিকার করতে মানুষ আসত কিন্তু এখন বিলের ইজারাদার কবীর হোসেনের কঠোরতার কারণে কেউ এটা করতে পারে না। স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ির লোকজনও পাখি শিকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান করে। কোন উৎপাত না থাকার কারণে এখানে পাঁখিদের নিরাপদ আশ্রয় তৈরী হয়েছে।

 

পাখি দেখতে আসা কালীগঞ্জ থেকে মতিয়ার রহমান বলেন, পাখির প্রতি আমার আলাদা একটি ভালোবাসা কাজ করে। এখানে প্রচুর পরিমান দেশি বিদেশী পাখি আছে। শুনে দেখতে এসেছি। খুব ভালো লাগছে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি দেখে। এখানে পাখি দেখার জন্য নৌকার ব্যবস্থাও আছে। এখানকার ইজারাদার কবীর হোসেন খুব আন্তরিক।

 

এ ব্যাপারে ইজারাদার কবীর হোসেন বলেন করিঞ্চা গ্রামের এই বিলের আয়তন প্রায় ২২৫ একর। এখানে পাখি রয়েছে ২০ থেকে ২৫ প্রজাতির। পাখির দেখভাল করার জন্য আমাদের এখানে যারা কাজ করে তাদের বলা হয়েছে। কেউ যেন উৎপাত না করতে পারে সেজন্য আমরা সব সময় সচেতন থাকি। আসলে পাখির সাথে আমাদের একটা সম্পর্ক তৈরী হয়েছে। আগামীতে কেউ যেন পাখি শিকার করতে না পারে সেব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা প্রয়োজন।

 

ভোরের আকাশ/নি