মো. ফিরোজ, (বাউফল) পটুয়াখালী: বাউফলের বিভিন্ন এলাকায় শীতের পাখি শিকার করা হচ্ছে। বিশেষ করে তেঁতুলিয়া ও লোহালিয়া নদীর তীরবর্তী এলাকাগুলোতে অতিথি পাখি শিকার বেশি করা হচ্ছে। শিকারকৃত এসব অতিথি পাখি দিয়ে গ্রামের যুবকরা পিকনিকের আয়োজন করছেন।
অতিথি পাখি শিকার করে তার মাংস দিয়ে পিকনিকের ছবি ১৩ জানুয়ারি ফেসবুকে পোস্ট করেছেন বাউফলের কেশবপুর ইউনিয়নের এক যুবক। ওই পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘আমরা শীতের দিনে পশু (পাখি) শিকার করে পিকনিক খাইতেছি।’ সেখানে কয়েকটি জীবিত শীতের পাখি ও তার মাংসের ছবি সংযুক্ত করে দেয়া হয়েছে।
অনেকেই এ পোস্ট নিয়ে নেতিবাচক কমেন্ট করেছেন। কয়েকজন আবার লিখেছেন, অতিথি পাখি শিকার করা অপরাধ, তার পরে আবার ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়ে অনেক বড় অপরাধ করা হয়েছে। শীত মৌসুমে বিভিন্ন দেশ থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় অতিথি পাখি আসে আশ্রয় নিতে। সেখানে এসব অতিথি পাখি শিকার করা হচ্ছে নির্বিচারে।
নদীবেষ্টিত বাউফলের চন্দ্রদ্বীপ, কালাইয়া, নাজিরপুর, কেশবপুর, ধুলিয়া, কাছিপাড়া এলাকায় অতিথি পাখির আগমন বেশি থাকে। আর এ সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছে কিছু অসাধু মানুষ। তারা টোপ ফেলে কিংবা জাল ফেলে পাখি শিকার করে। আবার এসব পাখি ফেরি করে বিক্রি করে।
বাউফলে সেভ দ্য বার্ডের পরিচালক এমএ বশার বলেন, অতিথি পাখি শিকার, বেচা-বিক্রি আইনে নিষিদ্ধ করা হলেও তা মানা হচ্ছে না। বিশেষ করে এই শীত মৌসুমে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অতিথি পাখি নিধনরোধে কোনো ধরনের পদক্ষেপ না নেয়ায় মূলত কিছু লোক পাখি শিকারে উৎসাহিত হচ্ছে। তাদের উচিত বিভিন্ন প্রচারের মাধ্যমে অতিথি পাখি শিকার অনুৎসাহিত করা।
এ ব্যাপারে বন ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের খুলনা অঞ্চলের মফিজুর রহমান চৌধুরীর বলেন, শীতের তীব্রতা থেকে বাঁচতে উত্তর মেরু, সাইবেরিয়া, ইউরোপ, এশিয়ার কিছু অঞ্চল, হিমালয়ের আশপাশের কিছু অঞ্চলের পাখিরা ঝাঁকে ঝাঁকে বাংলাদেশে চলে আসে। আবার বসন্তের সময় মানে মার্চ-এপ্রিলের দিকে শীতপ্রধান ওইসব দেশে বরফ গলতে শুরু করে, কিছু কিছু গাছপালা জন্মাতে শুরু করে। তখন অতিথি পাখিরা নিজ দেশে ফিরে যায়।
তাই আমাদের উচিত এসব আতিথি পাখির নিরাপত্তা বিধান করা এবং শিকারিদের অনুৎসাহিত করা।
ভোরের আকাশ/নি