logo
আপডেট : ১৮ জানুয়ারি, ২০২৩ ১০:৩৪
পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি
মো. নুর হাসান, পঞ্চগড়

পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি

মো. নুর হাসান, পঞ্চগড়: ৬ ডিগ্রি তাপমাত্রায় কাঁপছে দেশের সর্বউত্তরের জেলা পঞ্চগড়। মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ আর তীব্র ঠান্ডায় নাস্তানাবুদ হয়ে পড়েছে জনজীবন। ঠান্ডা বাতাসের সঙ্গে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মতো ঝরছে কুয়াশা । হিমালয়ের কাছাকাছি হওয়ায় প্রতিবছর এখানে শীত বেশি থাকে। 

 

বুধবার সকাল নয়টায় জেলার তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে ৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। যা সারা দেশের মধ্যে এই মৌসুমে সর্বনিম্ন বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর।

 

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহ বলেন, গত কদিন থেকে তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা উঠানামা করছে। বুধবার সকাল ৯ টায় তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

 

টানা কয়েকদিনের তীব্র শীতে দুর্ভোগে পড়েছেন জেলার সাধারণ মানুষ। খুব প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের হচ্ছে না। অনেকে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।

 

বেশি বিপাকে পড়েছেন বিভিন্ন শ্রেণির খেটে খাওয়া মানুষ। তীব্র শীত উপেক্ষা করেও ভোরে কাজে যাচ্ছেন তারা।

 

জাফর নামে এক শ্রমিক বলেন, এবার প্রচুর ঠান্ডা শুরু হয়েছে। এই ঠান্ডার মধ্যেই সকালে কাজে যেতে হচ্ছে। কাজ না করলে খাবো কি?

 

সলেমান আলী নামে এক রিক্সা চালক বলেন, সকালে রিক্সা নিয়ে বের হয়েছি। তীব্র ঠান্ডার কারণে যাত্রীরা বের হয় না। আমাদের আয় কমে গেছে।

 

ঘন কুয়াশা থাকার কারণে দুর্ঘটনা এড়াতে সকাল দশটা পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন সড়কে যানবাহনগুলোকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে। রবিউল ইসলাম নামে এক মোটরসাইকেলের আরোহী বলেন, সকালে মোটরসাইকেল নিয়ে বের হয়েছি, ঘন কুয়াশার কারণে হেডলাইট জ্বালিয়ে দিয়েছি, তারপরেও সামনে কিছু দেখা যায় না।

 

অন্যদিকে, বাড়ছে শীতজনিত রোগ। জ্বর, সর্দি-কাঁশি, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ ঠান্ডাজনিত রোগ নিয়ে হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হচ্ছেন রোগীরা।

 

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের বহির্বিভাগে প্রতিদিন দুই থেকে আড়াই শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে। এদের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু।

 

ভজনপুর থেকে চিকিৎসা নিতে আসা সাদিয়া নামের এক শিশুর মা জানান, ঠান্ডার কারণে তার মেয়ের সর্দি-কাঁশি ও শ্বাসকষ্ট এজন্য তিনি তার মেয়েকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

 

পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের কনসালট্যান্ট (শিশু) ডা. মো. মনোয়ারুল ইসলাম বলেন, শীতের তীব্রতা বেশি থাকায় শিশুরা শীতজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। ফলে শিশু রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এদিকে যাদের অবস্থার উন্নতি হচ্ছে তাদের ছাড়পত্র দিয়ে বাড়িতে চিকিৎসা নিতে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

 

জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম বলেন, পঞ্চগড়ের শীতার্ত মানুষের জন্য এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে প্রায় ৪০ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিভিন্ন এলাকার শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করছে।

 

ভোরের আকাশ/আসা