নগর ও জেলা যুবলীগের সম্মেলনকে ঘিরে খুলনা নগরীর অধিকাংশ বিলবোর্ড ছেয়ে গেছে প্যানা-পোস্টারে। এখন চলছে তোরণ নির্মাণের তোড়জোড়। আবার কেউ কেউ পদ পেতে ছুটছেন সংগঠনের নীতি নির্ধারণীদের দ্বারে দ্বারে। সব মিলিয়ে খুলনা জেলা যুবলীগে নতুন এক চমকের অপেক্ষা করছেন তৃণমূলের কর্মীরা। খুলনা জুড়ে এখন চলছে উৎসবের আমেজ।
আগামী মঙ্গলবার খুলনা নগরীর শেখ রাসেল টেনিস কমপ্লেক্স চত্বরে খুলনা মহানগর ও জেলা আওয়ামী যুবলীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলন ঘিরে ক্ষমতাসীন দলের যুবসংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। পদ প্রত্যাশীদের প্রচার-প্রচারণায় নগরীর অধিকাংশ বিলবোর্ড ছেয়ে গেছে প্যানা-পোস্টারে। এখন চলছে তোরণ নির্মাণের তোড়জোড়।
কেউ কেউ পদ পেতে ছুটছেন সংগঠনের নীতি নির্ধারকদের দ্বারে দ্বারে। সব মিলিয়ে খুলনা জেলা যুবলীগে নতুন চমকের অপেক্ষা করছেন তৃণমূলের কর্মীরা। প্রায় দুবছরেরও বেশি আগে তোড়জোড় শুরু হলেও শেষ পর্যন্ত আর সম্মেলন হয়নি খুলনা নগর ও জেলা যুবলীগের। এমন কি নেতৃত্ব প্রত্যাশীদের জীবন বৃত্তান্ত নেয়া হলেও চ‚ড়ান্ত সিদ্ধান্ত মেলেনি। ওই সময়ে মহানগর কমিটিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক একক প্রার্থী হলেও জেলায় দুটি পদ চেয়েছেন ১৭ জন।
নগর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে একক প্রার্থী যথাক্রমে বর্তমান আহবায়ক সফিকুর রহমান পলাশ ও বর্তমান যুগ্ম আহবায়ক শেখ শাহজালাল হোসেন সুজন। ফলে আসন্ন সম্মেলনে নগর নেতৃত্ব অনেকটা নিশ্চিত হলেও জেলায় চমকের সম্ভাবনা রয়েছে। এমন কী জীবন বৃত্তান্ত জমা দেয়ার বাইরের কেউ জেলার নেতৃত্বে আসা অসম্ভব নয় বলে ধারণা করছেন কেউ কেউ।
খুলনা জুড়ে উৎসবের আমেজ : জেলায় সভাপতি পদে ৬ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ১১ জন জীবনবৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন। সভাপতি পদপ্রত্যাশীরা হলেন বর্তমান যুবনেতা অজিত বিশ্বাস, যুবনেতা সরদার জাকির হোসেন, খুলনা জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান চৌধুরী রায়হান ফরিদ, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হাদীউজ্জামান হাদী, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আরাফাত হোসেন পল্টু ও জসিম উদ্দিন বাবু।
সাধারণ সম্পাদক প্রত্যাশী ১১ জনের মধ্যে রয়েছেন- যুবনেতা এবিএম মনিরুজ্জামান, মাহফুজুর রহমান সোহাগ, সাবেক ছাত্রনেতা দেব দুলাল বাড়ই বাপ্পী, তসলিম হুসাইন তাজ, মো. মুশফিকুর রহমান সাগর, মো. আবু সাঈদ খান, বর্তমান যুবনেতা জলিল তালুকদার, মো. কামরুজ্জামান মোল্লা, হারুন আর রশিদ, আব্দুল্লাহ আল মামুন ও ছাত্রলীগ জেলা সভাপতি মো. পারভেজ হাওলাদার।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংগঠনটির এক প্রভাবশালী নেতা জানান, জেলায় ১৭ জনের নাম এসেছে। সেগুলোর বিবেচনা করা হচ্ছে। আবার সংগঠনের জন্য অপরিহার্য, কিন্তু জীবনবৃত্তান্ত জমা দেননি তাদের বিষয়গুলোও মাথায় রাখা হচ্ছে। এক্ষেত্রে পদ-পদবির ক্ষেত্রে রদবদল করা হলেও সংগঠনের সেই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
জেলা যুবলীগের বর্তমান নেতা সভাপতি পদ প্রত্যাশী অজিত বিশ্বাস বলেন, দীর্ঘদিন সম্মেলন না হওয়ায় আমাদের কাজ বাধাগ্রস্ত হয়েছে। দায়িত্ব পেলে ত্যাগী নেতাকর্মীদের নিয়ে সংগঠনকে তৃণমূল পর্যায়ে নিয়ে যেতে চাই।
সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হাদীউজ্জামান হাদী বলেন, ছাত্র রাজনীতি থেকে জনপ্রতিনিধি হয়ে দায়িত্ব পালন করেছি। দলের জন্য সিদ্ধান্তের বাইরে যাইনি। যুব সংগঠন গড়তে কাজ সংগঠন গড়তে কাজ করার সুযোগ চাই।
সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী মাহফুজুর রহমান সোহাগ বলেন, কারা সংগঠনের জন্য কাজ করছেন, কর্মীরা ভালো জানেন। নেতৃত্ব পেলে যুবলীগকে আরো শক্তিশালী সংগঠনে পরিণত করা হবে।
খুলনা কমিটির সাবেক সভাপতি আরাফাত হোসেন পল্টু বলেন, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি থেকে বিদায় নিয়েও যুবলীগ ও দলের জন্য কাজ করছি। আগামীতেও কাজ করে যেতে চাই।
২০০৩ সালের ২৫ মে জেলা যুবলীগের সর্বশেষ সম্মেলন ও ২০১৯ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় দফায় মহানগর আহব্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়।
২০২১ সালে ২২ জানুয়ারি সম্মেলন ঘোষণা দিলেও শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। সর্বশেষ ২০০৩ সালের ২৫ মে খুলনা জেলা যুবলীগের সর্বশেষ ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। দীর্ঘদিন সম্মেলন বা কাউন্সিল না হওয়ায় জেলা যুবলীগের কার্যক্রম অনেকটা স্থবির। ৯টি উপজেলা ও ৬৮ ইউনিয়নে কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ।
অপরদিকে নগর যুবলীগে ২০১০ সালের ১১ জানুয়ারি নগর যুবলীগের ৫১ সদস্য বিশিষ্ট আহব্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেয় কেন্দ্র। ওই কমিটিতে অ্যাডভোকেট সরদার আনিসুর রহমান পপলু আহবায়ক এবং মনিরুজ্জামান সাগর ও হাফেজ মো. শামীম যুগ্ম-আহবায়ক ছিলেন। দ্বিতীয় দফার আহবায়ক কমিটিতে আহবায়ক হয়েছেন সাবেক ছাত্রনেতা শফিকুল ইসলাম পলাশ। যুগ্ম সম্পাদক হয়েছেন নগর ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ শাহজালাল হোসেন সুজন।
ভোরের আকাশ/নি