মাসউদ রানা, দিনাজপুর: দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য কমে যাওয়ায় সরকারের রাজস্বও কমেছে। গত কয়েক মাসের তুলনায় আমদানি নেমে এসেছে অর্ধেকে। ২০২২-২৩ অর্থবছরের গত ছয় মাসে রাজস্ব ঘাটতির পরিমাণ ৮৭ কোটি ৪ লাখ টাকা। আমদানিকারকরা বলছেন, ডলার সংকটে এলসি না হওয়ায় পণ্য আমদানি কমেছে, সঙ্গে ব্যবসাও কমে গেছে।
হিলি কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরের গত ৬ মাসে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এনবিআরের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩০০ কোটি ৬ লাখ টাকা। কিন্তু আদায় হয়েছে ২১৩ কোটি ১৩ লাখ টাকা। আমদানিকারক সাইফুল ইসলাম বলেন, হিলি স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিদিন চাল, গম, ভুট্টা, পাথর, চিটাগুড, গমের ভুসি, ভুট্টার বীজ, আদা, রসুন, মিক্সার মেশিনসহ বিভিন্ন পণ্য আমদানি হয়ে থাকে।
কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে ডলার সংকটের কারণে ব্যাংকগুলো এল সি (ঋণপত্র) সীমিত করায় এই বন্দর দিয়ে আমদানি কমেছে। আমদানিকারকরা চাহিদা মতো পণ্য আমদানি করতে পারছে না।
আমদানিকারক রাশেদ বলেন, এর আগে বাংলাদেশ থেকে পেঁয়াজের ফুলকা, সবজি, পোশাক কারখানার ঝুট কাপড়, পাটের তৈরি বস্তাসহ অনেক পণ্য রপ্তানি হতো। তবে, বর্তমানে ডলারের সংকটের কারণে এসব পণ্য রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। ভারতের অভ্যন্তরে কাঁচা পণ্য রাখার মতো ব্যবস্থা না থাকায় রপ্তানিকারকরা এসব কাঁচা পণ্য রপ্তানি করতে পারছেন না।
বন্দরের শ্রমিকরা বলেন, আগের তুলনায় হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি রপ্তানি অনেকটা কমে গেছে। আগের মতো আর মজুরি হচ্ছে না। কয়েক মাস আগে প্রতিদিন ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা মজুরি পাওয়া গেলেও এখন ২০০ থেকে ৩০০ টাকা মজুরি পাওয়া যাচ্ছে। ফলে পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে।
হিলি কাস্টমস সি এম এফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের বন্দর বিষয়ক সম্পাদক রবিউল ইসলাম সুইট বলেন, ডলার সংকট তো অবশ্যই, সেইসঙ্গে ভারত অংশের হিলি থেকে বালুরঘাট পর্যন্ত সড়ক প্রশস্ত না হওয়ার কারণে সময় মতো ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাকগুলো বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারছে না। এ কারণেও অনেক আমদানিকারকরা হিলি বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি করতে নিরৎসাহিত হচ্ছেন।
হিলি স্থলবন্দরের বেসরকারি অপারেটর পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেডের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন মল্লিক বলেন, গত কয়েক মাস আগেও হিলি স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিদিন ২০০ থেকে ২৫০ ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাক ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করত। এখন তা অর্ধেকে নেমে এসেছে। বর্তমানে ৫০ থেকে ১০০ টি পণ্যবাহী ট্রাক প্রবেশ করছে।
ভোরের আকাশ/নি