তার নাম রাখা হয়েছিল চন্দ্রমল্লিকা। একসময় মল্লিকা শব্দটি বাদ পড়ে। সবাই ডাকে চন্দ্রা নামে। নড়াইলের মেয়ে চন্দ্রা এখন তাহরিম নামে পরিচিতি। এটা তার একাডেমিক নাম। নড়াইল জেলা কিংবা দেশের কাবাড়িতে সবাই তাকে এ নামে চেনে। নড়াইল থেকে মাশরাফি-ডলার-অভিষেকরা দেশের হয়ে ক্রিকেট খেললেও তাহরিমের স্বপ্ন কাবাডিকে ঘিরে। জাতীয় খেলা কাবাডিতেই তার মন।
প্রথমবারের মতো করপোরেট নারী কাবাডি লিগে তাহরিম খেলছে বেঙ্গল ওয়ারিয়সর্সের হয়ে। আক্রমণভাগের খেলোয়াড় তাহরিম জানান, এখন পর্যন্ত দুটি ম্যাচ হয়েছে। ম্যাচ দুটি হেরে আমরা একটু পিছিয়ে আছি। তবে আশা করছি ঘুরে দাঁড়াতে পারব। এখনো সে সুযোগ রয়েছে। আর আমাদের সামর্থ্যও আছে। আমরা সবাই সবার সেরাটা দিয়ে চেষ্টা করছি দলকে এগিয়ে নিতে।
কাবাডিতে কেন আসা এমন প্রশ্নের জবাবে তাহরিম বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, যেকোনো খেলাই মেয়ে জন্য একটু কঠিন। বিশেষ করে গ্রাম থেকে যারা উঠে আসে, তাদের জন্য। কাবাডির ক্ষেত্রে বিষয়টি আরো কঠিন। কাবাডি খেলার জন্য কিছু মানুষের নানা নেতিবাচক কথা শুনতে হয়, তবে এদের সংখ্যা কম। স্থানীয়রা আমাকে প্রচুর সাপোর্ট করেন।
আমার খেলা থাকলে বাজারে সবাই একসঙ্গে খেলা দেখেন। সবচেয়ে বড়কথা আমাদের পরিবার থেকে কোনো বাধা নেই। আমার মামা এবং বাবার বাড়ির সবাই খেলাধুলা ও গান-বাজনা পছন্দ করেন। সে কারণে আমি যেটা করতে চাই, তারা বাধা দেননি। সেজন্য আমি কাবাড়ি খেলতে পারছি।
কাবাডি খেলতে আসায় কার উৎসাহ সবচেয়ে বেশি জানতে চাইলে তাহরিমের উত্তর, ‘সবার আগে বলতে চাই আমার মায়ের কথা। মা-ই অনুমতি দিয়েছিলেন। তাছাড়া আমার মামা-খালারা অনেক বেশি সাপোর্ট করেন। কাকারাও উৎসাহ দেন। স্যাররাও আমাকে সাপোর্ট দেন। এক্ষেত্রে শান্ত ভাই (স্যার) এবং সুনির্মল স্যারের কথা বলতেই হয়। তাদের সাপোর্ট আমার অনেক বেশি কাজে লাগে।’
খেলতে গেলে লেখাপড়ার সমস্যা হয় হয় না এ প্রশ্নে জবাবে তাহরিম বলেন, ‘একটু তো হয়ই। ক্যাম্প থাকে সেজন্য নিয়মিত ক্লাস করতে পারি না। অনেক সময় পরীক্ষাও দিতেও সমস্যা হয়। তবে স্কুলের স্যাররা আমাকে ভালোবাসেন। আসলে তারা না চাইলে এখানে আসা সম্ভব হতো না।
কারণ আমাদের পরিবারে সবাই আগে লেখাপড়া। আমি এবার ক্লাস টেনে পড়ছি। সামনে এসএসসি পরীক্ষা। সেজন্য এবার একটু বেশি বেশি পড়তে হবে। কাবাডি এবং লেখাপড়া দুটিই একসঙ্গে চালিয়ে যাব।’
ভোরের আকাশ/নি