logo
আপডেট : ৩০ জানুয়ারি, ২০২৩ ১৩:১৬
রাজধানীতে গ্যাস সংকটে সমাধান কি?
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীতে গ্যাস সংকটে সমাধান কি?

আমাদের অত্যাবশ্যকীয় জিনিসগুলোর মধ্যে গ্যাস একটি। বিশেষ করে শহর এলাকাায়। আর সেখানেই ভোগান্তি! রাজধানীতে গ্যাসের সংকট কাটছেই না। রাজধানীর বেশকিছু এলাকায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা গ্যাসের স্বাভাবিক প্রবাহ না থাকায় রান্নাবান্না অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে। দিনের অধিকাংশ সময়ই গ্যাসের দেখা মিলে না অনেক এলাকায়। আবাসিকে গ্যাসের চুলা জ্বালাতে বাসিন্দাদের খরচ এখন দ্বিগুণ হয়েছে।

 

একদিকে তিতাসের গ্যাস বিল নিয়মিত পরিশোধ করতে হচ্ছে; অন্যদিকে বাজার থেকে গ্যাস সিলিন্ডার কিনে প্রতিদিনের কাজ চালাতে হচ্ছে। চাহিদা অনুযায়ী গ্যাসের সরবরাহ না থাকায় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এরই মধ্যে শিল্পকারখানার গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে। দেশে প্রতিদিন ৩৮০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের চাহিদার বিপরীতে ২৬৬ কোটি ঘনফুটের কম গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে।

 

ফলে ঘাটতি থেকেই যাচ্ছে। বাসাবাড়িতে ৬০ কোটি ঘনফুট চাহিদার বিপরীতে দেয়া হচ্ছে মাত্র ৩০ কোটি ঘনফুট গ্যাস। এতে নাগরিক জীবন চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এই সমস্যা দীর্ঘদিন ধরেই চলে আসছে। কিন্তু কেন এ বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে না তা নিয়ে নানা প্রশ্ন রয়েছে। বিশ্ববাজারে এলএনজির আমদানি মূল্য অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় এ খাতে সরকারকে বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি দিতে হচ্ছিল।

 

সে কারণে গত বছরের জুলাই থেকে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানি বন্ধ রয়েছে। এতে জাতীয় গ্রিডে পর্যাপ্ত গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে গ্যাসের সংকট কাটাতে সরকার প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এই প্রকল্পের কাজ শেষ হলে আবাসিক ও বাণিজ্যিক সব লাইনের গ্যাস সরবরাহ বাড়বে। সরকারের এমন পদক্ষেপে আমরা আশাবাদী হতে চাই।

 

সংশ্লিষ্টদের মতে, সঞ্চালন লাইনের ত্রুটির কারণে শীত মৌসুমে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে গ্যাস সংকট প্রকট হয়ে উঠছে। সংকীর্ণ পাইপলাইন দিয়ে ক্রমবর্ধমান গ্রাহকের গ্যাসের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। অন্যদিকে শীতে পাইপলাইনে তরল হাইড্রোকার্বন জমেও গ্যাস সরবরাহে বিঘ্ন ঘটায়- এটিও গ্যাস সংকটের আরেকটি কারণ।

 

রাজধানীর আবাসিক গ্রাহকের ভোগান্তির এসব কারণ চিহ্নিত হয়েছে আগেই। এসব নিয়ে লেখালেখিও হচ্ছে। তারপরও কেন কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না, তা আমাদের বোধগম্য নয়। দেশে গ্যাসের মজুত অফুরন্ত নয়। অথচ চাহিদা বেড়েই চলেছে। নতুন নতুন সংযোগও দেয়া চলছে।

 

বর্তমান অবস্থার প্রেক্ষাপটে আমাদের গ্যাস ব্যবহার নিয়ে নতুন করে ভাবার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। যেমন পাইপলাইনে সরবরাহকৃত গ্যাসের প্রচুর অপচয় ঘটে। এই অপচয় ঠেকাতে মিটার সিস্টেম চালু করা বা এ রকম কোনো উদ্যোগ বাস্তবায়িত হচ্ছে না। পরিবহন খাতে অবাধে সিএনজির ব্যবহার চললেও নিয়ন্ত্রণের কোনো উদ্যোগ নেই।

 

অন্যদিকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাসনির্ভরতাও কমছে না। গ্যাসের সংকট উত্তরণে নতুন নতুন ক‚প অনুসন্ধান ও খনন করে গ্যাসের মজুত বাড়াতে হবে। গ্যাসের অপচয় রোধ করতে হবে। গ্যাসের সঞ্চালন ব্যবস্থা উন্নত করতে হবে। সর্বোপরি গ্যাসের সাশ্রয়ী ও সুপরিকল্পিত ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।

 

ভোরের আকাশ/নি