ভাষার মাসের প্রধান আর্কষণ অমর একুশে বইমেলা শুরু হবে আজ। বিকেল ৩টায় বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে মেলার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলা একাডেমি নতুন সাতটি বই মেলার প্রথম দিনই প্রকাশ করবে। সেগুলোর মোড়ক উন্মোচন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এর পরই সবার জন্য উন্মুক্ত হবে লেখক-পাঠকের মিলনমেলা।
এবার বইমেলার স্লোগান ‘পড় বই গড় দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’। মেলার আঙ্গিকে এবার কিছু পরিবর্তন আসছে। বইয়ের সব প্যাভিলিয়ন-স্টল একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মূল অংশে থাকবে। আর ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশনের অংশে থাকবে খাবারের দোকান, নামাজের স্থান ও টয়লেট। কোনো অবস্থায়ই মেলার অংশে খাবারের দোকান করতে দেয়া হবে না।
সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মুহম্মদ নূরুল হুদা। তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন একাডেমির পরিচালক ও বইমেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব কেএম মুজাহিদুল ইসলাম, জনসংযোগ-তথ্যপ্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ বিভাগের পরিচালক সমীর কুমার সরকার, বইমেলার সহযোগী প্রতিষ্ঠান বিকাশের সিএমও মীর নহবত আলী ও ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের দায়িত্ব পাওয়া প্রতিষ্ঠান ক্রসওয়ার্ক কমিউনিকেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএ মারুফ।
অন্যদিকে এবার বইমেলায় কিছু আঙ্গিকগত পরিবর্তন হয়েছে উল্লেখ করে অমর একুশে বইমেলার সদস্য সচিব কে এম মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এবার মেলার পুরো বিন্যাসই পরিবর্তন করা হয়েছে। মূল মঞ্চ থাকবে বাংলা একাডেমি অংশে। বেশি স্টল ও প্যাভেলিয়সহ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অংশে থাকছে গ্রন্থ উন্মোচন ও লেখক বলছি মঞ্চ।’
একইভাবে মেট্রোরেলের কারণে বিগত সময়ে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনিস্টিটিউট সংলগ্ন যে ১৮২টি স্টল ও ১১ প্যাভেলিয়ন ছিল, তা এবার সরিয়ে এনে সোহরাওয়ার্দীর মূল কেন্দ্রে স্থাপন করা হয়েছে। আর সে স্থানে ফুডকোর্টসহ নানা সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানকে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে আগে যেখানে মেলার প্রধান প্রবেশপথ ছিল, সেটি এবার প্রস্থানের জন্য রাখা হয়েছে। মূল প্রবেশদ্বার রাখা হয়েছে বাংলা একাডেমির উল্টো দিকে। মন্দিরের প্রবেশদ্বার দিয়ে আগতরা মেলায় প্রবেশ করবে।
একইভাবে এবার মেলায় আগতদের জন্য নির্দিষ্ট স্টল খুঁজে পেতে ডিজিটাল বোর্ডসহ প্ল্যাকার্ডের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সেখানে ম্যাপ থাকবে এবং বিভিন্ন বইয়ের প্রচ্ছদ প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হবে। ইতোমধ্যে অমর একুশে বইমেলা সংক্রান্ত নীতিমালা একাডেমির ওয়েবসাইটেও দেয়া হয়েছে।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, এবারের বইমেলায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে মোট ৪৭০টি প্রতিষ্ঠানের স্টল থাকছে। এর মধ্যে ৩৬৭টি সাধারণ প্রতিষ্ঠান। শিশু চত্বরে থাকছে ৬৯টি প্রতিষ্ঠান এবং প্যাভেলিয়ন ৩৪টি।
অন্যদিকে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে সাধারণ প্রতিষ্ঠান ১০৩টি ও প্যাভেলিয়ন আছে ১৪৭টি। সবমিলিয়ে ৫৭৩টি প্রতিষ্ঠান এবং সর্বমোট ৭০৪টি (প্যাভেলিয়ন বাদে) স্টল থাকছে। এ ছাড়া ফুডকোর্ট, নামাজের জায়গা, ওয়াশরুম পর্যাপ্ত পরিমাণে রাখা হয়েছে এবার। নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে বইমেলার চারপাশে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। নিয়োজিত থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সর্বস্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
এদিকে মূল গেট থেকে ঢুকেই শিশু চত্বর পাওয়া যাবে। সেখানে সিসিমপুরসহ শিশুদের আনন্দ ও বিনোদনের জন্য নানা আয়োজন থাকবে। মাসব্যাপী বইমেলা প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত চলবে। ৯টায় আলো নিভিয়ে দেয়া হবে।
উদ্বোধনের দিন প্রধানমন্ত্রী বাংলা একাডেমি ঘোষিত সাহিত্য পুরস্কারও প্রদান করবেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি থাকবেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেবেন সংস্কৃতি সচিব মো. আবুল মনসুর। স্বাগত বক্তব্য দেবেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন।
ভোরের আকাশ/নি