logo
আপডেট : ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ১০:৩৬
বইমেলায় এখনো রবীন্দ্রনাথ নজরুল-জসীম-সুকান্তরা
মুস্তাফিজুর রহমান নাহিদ

বইমেলায় এখনো রবীন্দ্রনাথ নজরুল-জসীম-সুকান্তরা

মুস্তাফিজুর রহমান নাহিদ: রবীন্দ্রনাথ-নজরুলদের সময় বইমেলা তেমন জমজমাট ছিলো না। ছিলো না সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক-টুইটার। এরপরও সারা বছরই তাদের বই বিক্রির হিড়িক ছিলো। এর প্রধান কারণ তৎকালিন শিক্ষিত মানুষের কাছে প্রধান বিনোদন ছিলো বই পড়া। এখন সময়ের পরিবর্তন হয়েছে।

 

সামাজিক মাধ্যমসহ বিভিন্ন সুবিধা থাকার কারণে মেলাতে লেখকরা উপস্থিত থাকেন, থাকে তাদের বই। পাঠক অটোগ্রাফ-ফটোগ্রাফসহ বই কেনেন। কিন্তু সময় পেরিয়ে গেলেও স্বশরীরে না থেকেও মেলায় দাপট দেখাচ্ছে সীমারবাধন ছিন্ন করা রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, জসীম, শরৎ, সুকান্তদের বই। এখনো হালের পাঠকদের আগ্রহের শীর্ষে তাদের বই।

 

মেলায় প্রতিদিন গড়ে ১০০’র বেশি বই প্রকাশ পাচ্ছে। এর মধ্য থেকে বেছে বেছে কিনছেন পাঠকরা। খ্যাতিমান লেখকদের বই কিনছেন খুবই আগ্রহ নিয়ে। এ ক্ষেত্রে সব চেয়ে বেশি এগিয়ে রয়েছে রীবীন্দ্রনাথ, নজরুল এবং শরৎচন্দ্রের বই। এ ছাড়া পাঠকদের আগ্রহের তালিকায় রয়েছে অন্যান্য খ্যাতিমান লেখকরা।

 

বিষয়টি নিয়ে কথা বললে, বাংলা একাডেমিতে বই কিনতে আসা মো. শফিকুর রহমান ভোরের আকাশকে বলেন, একাডেমিতে কিছু ভালো বই রয়েছে। আমি নজরুল সমগ্র কিনেছি। সাথে রয়েছে বেগম সুফিয়া কামাল, আবুল হোসেন ও বন্দেআলী মিয়ার বই।

 

তিনি বলেন, আমি নজরুল ভক্ত মানুষ। রবীন্দ্রনাথও পড়ি। বাচ্চারা যাতে এদের সঙ্গে পরিচিত হতে পারে সেই জন্যই এসব বই কিনেছি। আমার মনে হয় নজরুল, বীন্দ্রনাথকে ছাড়া বাংলা সাহিত্য কল্পনা করা যায় না।

 

একই প্রসঙ্গে কবি লিমা ইসলাম লিপু বলেন,‘ লেখার জন্য অনেক বেশি পড়াশোনা করা দরকার। সে কারণে যারা লিখছেন তাদের শরৎ থেকে শুরু করে নজরুল জসীম সবই পড়া উচিত। যারা নতুন পাঠক তাদেরও এসব বই পড়ার বিকল্প নেই। আমি মনে করি বাংলা সাহিত্য পড়া শুরু করতে হয় শরৎচন্দ্রের বই। মানুষের মনের কথা বলেছেন এই কথাশিল্পী। প্রতিবছর মেলায় উপহার দেওয়ার জন্য এসব লেখকদের বই কিনি। এবারো পথের দাবি, দত্তা, শ্রীকান্ত উপহার দিয়েছি।

 

একই কথা বলেন প্রকাশকরাও। জানতে চাইলে জয় প্রকাশনীর প্রকাশক মো, আব্দুল মোমিন ভোরের আকাশকে বলেন, এই সব লেখকদের বইয়ের কদর কখনও কমবে না। কারণ তারা যা লিখে গেছেন তা এখনো আধুনিক।

 

এদিকে মেলায় এখনো হুমায়ুন আহমেদের বইয়ের কাটতি ব্যাপক। অন্য প্রকাশ, অনন্য প্রকাশ, শোভা প্রকাশনীসহ বড় বড় স্টলের সামনে এখন হুমায়ূন পাঠকদের ভিড়। তারা এখনো বেছে বেছে হমায়ূন আহমেদের বই কিনছেন। কথা হয় মো. আরিফের সঙ্গে। তিনি নতুন পাঠক। পড়া শুরু করেছেন বছর দুই। তার পছন্দ হুমায়ূন আহমেদের বই।

 

তিনি বলেন, স্যারের বই পড়া শুরু করলে কখন শেষ হয়ে যায় বুঝতে পারি না। এক অদ্ভ‚ত ভালো লাগা কাজ করে। সে কারণে স্যারের বই বেশি পড়া হয়। এবার মেলায় তার, অচিনপুর, মাতাল হাওয়া, নন্দিত নরকে, ফেরা ও আজ হিমুর বিয়ে কিনেছি।

 

বাংলা সাহিত্যের বেশ কিছু বই এখনো পাঠক নন্দিত। এর মধ্যে রয়েছে, হাজার বছর ধরে, চোখের বালি, নৌকাডুবি, চিলেকোঠার সেপাই, দূরবীন, পথের পাঁচালি, নিষিদ্ধ লোবান, সেই সময়, প্রথম আলো, পূর্ব পশ্চিম, সূর্য দীঘল বাড়ি, গঙ্গা, কাবিলের বোন, সাতকাহন, কালপুরুষ, কালবেলা, গর্ভধারিণী, নীল দর্পণ, কড়ি দিয়ে কিনলাম, সাহেব বিবি গোলাম, রক্তাক্ত প্রাপ্তর, দুর্গেশ নন্দিনী, জননী, মা,

 

যে জলে আগুন জ্বলে, রাজবন্দীর জবানবন্দী, মৃত্যুক্ষুধা, জোৎস্না ও জননীর গল্প, নন্দিত নরকে, শঙ্খ নীল কারাগার, ফেরা, অচিনপুর, শ্যামল ছায়া, লোটাকম্বল, পুতুলনাচের ইতিকথা, ইতিকথার আগের কথা, পথের দাবি, দেবদাস, দত্তা, দিপু নাম্বার টু, কবি, হাসুলিবাঁকের উপকথা, শেষের কবিতা, ছাড়পত্র, শাপমোচন, নকশীকাঁথার মাঠ, সোজন বাদিয়ার ঘাট, ক্রিতদাসের হাসি, বিষাদসিন্ধু, লাল সালু, হাঙর নদী গ্রেনেড, চাঁদের অমাবস্যা, কাঁদো নদী কাঁদো,

 

সুলতানার স্বপ্ন, ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইল, নিজের সঙ্গে নিজ জীবনের মধু, চিতা বহ্নিমান, কাছের মানুষ, তেইশ নাম্বার তৈলচিত্র, সারেং বউ, সূর্য তুমি সাথি, ওঙ্কার, যদ্যপি আমার গুরু, সাত সাগরের মাঝি, পদ্মা নদীর মাঝি, শ্রীকান্ত। খোয়াব নামা, সোনালি কাবিন, দুষ্টিপাত, তিতাস একটি নদীর নাম, জোহরা, সংশপ্ত, কলকাতার কাছেই, ঝরা পালক, রূপসী বাংলা, আলালের ঘরের দুলাল , মেম সাহেব, শবনব, নুরজাহান ও পল্লী সমাজ। এ ছাড়াও বাংলা সাহিত্যে অসংখ্য ভালো বই রয়েছে।

 

ভোরের আকাশ/নি