logo
আপডেট : ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ১৫:৪৬
ভাগাড়ে রূপ নিয়েছে ঘাঘট খাল: জনজীবনে দুর্ভোগ
গাইবান্ধা প্রতিনিধি

ভাগাড়ে রূপ নিয়েছে ঘাঘট খাল: জনজীবনে দুর্ভোগ

গাইবান্ধার ঘাঘট খাল কচুরি পানায় ভরে গেছে

নদী লুপ কাটিং করে শহর থেকে দূরে সরিয়ে নেয়ায় খালে পরিণত হওয়া ঘাঘট খাল গত তিন দশকে ভাগাড়ে রূপ নিয়েছে। গাইবান্ধা শহরের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত ঘাঘট নদীটি ১৯৯০ সালে লুপ কাটিং করে উত্তরে সরিয়ে নেয়া হয়। এতে মূল নদীর তিন কিলোমিটার অংশ খালে পরিণত হয়। এ ছাড়া এই খালের দুই পাশে বসবাসকারী মানুষরা পাড় দখলে নেয়ায় এবং আবর্জনা ফেলায় পরিবেশ দূষণ ঘটছে। এতে জনজীবনে দুর্ভোগ নেমে এসেছে।

 

৩৩ বছর ধরে পরিত্যক্ত ঘাঘট খালটিকে বিনোদনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে ২০১৭ সালে ঘাঘট উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। কিন্তু নানা জটিলতায় গত ৬ বছরেও প্রকল্পের কাজ শেষ হয়নি।

 

জানা যায়, এই পুরাতন ঘাঘট নদীর (বর্তমানে খাল) তীরে জেলা প্রশাসকের বাসভবন, জেলা জজের বাসভবন, পোস্ট অফিস, স্বাধীনতা প্রাঙ্গণ, আনসার ও ভিডিপি অফিস, এসি ল্যান্ড অফিস, পুরাতন বাজারসহ সাধারণ মানুষের হাজার হাজার বাড়িঘর অবস্থিত। একদিকে ময়লা আবর্জনা ফেলে যেমন খালটিকে দূষিত করা হচ্ছে তেমনি পুরো খাল কচুরিপানায় ভরে গেছে। আবার দুই পাড়ের বাসিন্দারা কিছু অবৈধ স্থাপনাও গড়ে তুলেছেন।

 

খালটি ঘিরে বিনোদন কেন্দ্র গড়ে তুলতে স্থানীয়রা দীর্ঘদিন আন্দোলন কর্মসূচি পালন করেছেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭ সালে খালের পাড় উন্নয়নের জন্য ২৭ কোটি টাকার একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। যা বাস্তবায়ন করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। প্রকল্পের আওতায় খালের ওপর ৫৪ ও ৫৫ মিটার দৈর্ঘ্যরে দুটি ব্রিজ, সংযোগ সড়ক, একটি ওয়াশ ব্লক, ২০টি বসার বেঞ্চ, চারটি ঘাট, উভয়পাড়ে ছয় ফুট করে ফুটপাত, দুটি গ্লুইজ গেট, আবর্জনার ডাম্পিং স্টেশন, সিসি ব্লক দিয়ে নদীর স্লোপ প্রটেকশন, তলদেশের মাটি কাটা এবং বৃক্ষ রোপণ করার কথা ছিল। গত ছয় বছরে এই প্রকল্পের ৬০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। থেমে আছে দুটি ব্রিজ, ডাম্পিং স্টেশন, স্লোপ প্রটেকশন ও ফুটপাত নির্মাণসহ আরো কিছু কাজ।

 

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, পরিত্যক্ত থাকায় পুরো খাল কচুরিপানায় ভরে গেছে। সেখানে মশামাছি পোকামাকড়ের বাস। মানুষ যে যার মতো খালে ময়লা আবর্জনা ফেলছেন। পুরাতন বাজার এলাকায় বাজারের ময়লা যেমন ফেলা হচ্ছে খালে তেমনি কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের মলমূত্রও এসে পড়ছে সেখানে। দুর্গন্ধে সেসব এলাকায় টেকা দায়। খালের পানি কালো হয়ে গেছে।

 

গাইবান্ধা সামাজিক সংগ্রাম পরিষদের আহব্বায়ক জাহাঙ্গীর কবির তনু বলেন, ‘খালটি দেখভাল করার দায়িত্ব যেন কারো নেই। দুই পাড়ে গড়ে ওঠা সরকারি বেসরকারি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ না করা হলে প্রকল্পের সব কাজ সম্পন্ন করা যাবে না। পুরাতন ব্রিজের ওপর দাঁড়ালে অবৈধ দখলদারদের দখল সবার চোখে পড়ে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ নির্বিকার। অথচ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে গাইবান্ধাবাসী একটি বিনোদনের ভালো স্থান পাবে।’

 

গাইবান্ধা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ছাবিউল ইসলাম বলেন, ‘দুটি ব্রিজের নির্মাণ কাজ শেষ করতে না পারায় পূর্বের ঠিকাদারের স্থলে টেন্ডারের মাধ্যমে নতুন ঠিকাদার নিযুক্ত করা হয়েছে। তারা ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছেন। খালটির দেখভাল পৌরসভা কর্তৃপক্ষ করবে। আমরা প্রকল্পের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করার দায়িত্বে আছি।’

 

ভোরের আকাশ/নি