logo
আপডেট : ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ১৫:১৩
ভোলায় রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে ধানের চারা রোপণ
ভোলা প্রতিনিধি

ভোলায় রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে ধানের চারা রোপণ

আধুনিক যন্ত্রনির্ভর পদ্ধতিতে রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে বোরো ধানের চারা রোপণ করেছে দ্বীপ জেলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার কৃষকরা। কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণের ফলে শ্রমিক ও মজুর সংকট, অতিরিক্ত খরচ সাশ্রয়, ফসল পর্যবেক্ষণ, ১০ ভাগ চারা সাশ্রয়, করে উপক‚লীয় চাষিরা লাভবান হচ্ছেন। এই যন্ত্রের সাহায্য সমগভীরতায়, সম দূরত্বে এবং অল্প শ্রমে কৃষকরা ধানের চারা রোপণ করছেন। এতে সময় কম লাগবে, খরচ কমবে এবং ফলন বাডবে এমন দাবি কৃষক ও কৃষি বিভাগের।

 

বোরহানউদ্দিন উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, চলতি বছরে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ হাজার ৮০০ হেক্টর। এখন পর্যন্ত অর্জিত হয়েছে ৬ হাজার ৩০০ হেক্টর। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি অর্জনের আশাবাদ ব্যক্ত করেন সংশ্লিষ্ট বিভাগ।

 

বড় মানিকা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের কৃষক নাসিম, রিয়াজ আব্দুল খালেক, আওলাদ হোসেন বলেন, আগে হেক্টর প্রতি জমিতে ধানের চারা রোপণ করতে ৩০-৩৫ জন শ্রমিক লাগত। এতে করে প্রায় ২১ হাজার ৬১২ টাকা খরচ হতো। এখন রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে চারা রোপণ করতে বর্তমানে হেক্টর প্রতি খরচ হয় ১২ হাজার ৩৫০ টাকা। ফলে খরচ সাশ্রয় হয় ৯ হাজার ২৬২ টাকা। অন্যদিকে হেক্টর প্রতি ১০ ভাগ ফলন বাড়বে।

 

আওলাদ ও নাছিমসহ কয়েকজন কৃষক বলেন, আগে রাইস ট্রান্সপ্লান্টার যান্ত্রিকীকরণ পদ্ধতিতে ধানের চারা রোপণ করার কোনো ধারণা ছিল না। বর্তমান কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে ও সহায়তায় আমরা এ বছর প্রথমবারের মতো ৭০ একর জমি বোরো আবাদের আওতায় আনব। ফসল উৎপাদনে প্রযুক্তির ব্যবহার ও উন্নত জাত ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি অফিস। তাদের পরামর্শে অল্প সময়ে অধিক উৎপাদনে প্রযুক্তির ব্যবহারে ঝুঁকছেন চাষিরা। এখন অপেক্ষার দিন গুণতে হয় না কৃষকদের।

 

উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা মিজানুর রহমান রনি, নাছির উদ্দিন, আশ্রাফুল ইসলাম শিমুল হাওলাদার বলেন, বীজতলায় যে ধানের চারা দেয়া হয়, চারা তোলার সময় ধান গাছের চারায় আঘাত লাগে এবং মূল নষ্ট হয়। এতে ফলনও কম হয়। মেশিনের সাহায্যে একটি চারাও নষ্ট হয় না। রাইসপ্লান্টার মেশিনের মাধ্যমে ১ ইঞ্চি মাটিতে ১২০ গ্রাম ধান দিয়ে চারা লাগানো হয়। যা দিয়ে প্রতি শতাংশ জমি চাষ করা যায়। এ পদ্ধতিতে একই সঙ্গে ৬টি লাইন করে ধান লাগানো যায়। যার প্রতিটি সারির দূরত্ব হয় ৮ থেকে ১০ ইঞ্চি।

 

বোরহানউদ্দিন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ এইচ.এম. শামীম বলেন, রাইসপ্লান্টার পদ্ধতি শ্রম, সময়, অর্থ সাশ্রয়ের একটি আধুনিক পদ্ধতি। যা কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণের একটি সময়োপযুগী মাধ্যম। এতে ফসলের মাঠের আন্তঃপরিচর্যা, চারার গুণগত মান ঠিক থাকে। ফলন বৃদ্ধি হয়। সরকার ভর্তুকির মাধ্যমে কৃষকদের ধানের চারা রোপণের জন্য রাইসপ্লান্টার যন্ত্র ও ধান কাটার জন্য কম্বাইন হারভেস্টার মেশিনসহ কৃষির আধুনিক কৃষি যন্ত্র সরবরাহ করছেন।

 

ভোরের আকাশ/নি