চেক জালিয়াতি চক্রের মূলহোতা আব্দুল আলিম ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেছেন আরিফুর রহমান টুটুল নামে এক ভুক্তভোগী। সোমবার বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্রাব) মিলনায়তনে তিনি এ সংবাদ সম্মেলন করেন।
আরিফুর রহমান টুটুল বলেন, আমি নোয়াখালীর সেনবাগের বাসিন্দা। ২০১৬ সালে আপনজন ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বিউটিকুইন করপোরেশনের প্রোপাইটর জিলানি খন্দকারের ডিস্ট্রিবিউটার হিসেবে ওই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ব্যবসা করি। সে সময় মো. আবদুল আলিম নোয়াখালীর সদর থানার রাজগঞ্জ ইউনিয়নের ডিলার হওয়ার আবেদন করেন। সে হিসেবে কোম্পানির একাউন্টে টাকা জমা হইলে কোম্পানির আদেশে আমার অফিস থেকে ১২ লাখ টাকার ভোগ্য পণ্য সরবরাহ করি।
পরে আবদুল আলিম আমাকে প্ররোচিত করে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড, মাইজদী কোর্ট শাখায় আমার নামে একটি একাউন্ট খুলিয়ে নেয়। যার একাউন্ট নং- ২০৫০২২৫০১০০২৪৭৭১৬ এবং সেখানে ১২ লাখ টাকা পণ্যের জন্য বিভিন্ন দাগে ব্যাংকের মাধ্যমে ভেঙে ভেঙে প্রদান করে। পণ্য সর্বরাহের অনুরোধ করে কৌশলে প্রতারণা করে ২০১৭ সালের তারিখ, স্বাক্ষরবিহীন ১২ লাখ টাকার একটি চেক নিয়ে যায়।
পরবর্তীতে কোম্পানির আদেশে ১২ লাখ টাকার পণ্য আবদুল আলিমকে সরবরাহ করি। একপর্যায়ে আমার জামানতের চেক ফেরত চাইলে প্রতারক আব্দুল আলিম চেকটি দুবাইতে তার মেয়ের বাসায় ভুলে রেখে আসছে বলে জানায়। কিন্তু ২০২০ সালে আবদুল আলিমের প্রতারণা ও তার সঙ্গে সম্পৃক্ত জালিয়াত চক্রের সদস্যরা আমার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট ইস্যু করে পাঠান। পরে আদালত থেকে জামিন নেই।
২০২২ সালের ২০ অক্টোবর আমার বন্ধুর অনুরোধে ও আব্দুল আলিমের আমন্ত্রণে ও তার সকল খরচে ওমরা হজ পালনের উদ্দেশ্যে সৌদি আরব যাই। সেই সময় প্রতারক আবদুল আলিম সাক্ষ্য প্রদান করে আমার অনুপস্থিতিতে মামলাটি রায়ের জন্য তারিখ নির্ধারণ করেন। ২০২৩ সালের ৩ জানুয়ারি আদালতে হাজির হয়ে জামিন নেই।
আদালতে গিয়ে মূল চেক দেখে বুঝত পারি আমার সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। ২০১৭ সালের জায়গায় ২০১৯ বসিয়ে ১২ লাখ এর স্থলে এক কোটি ২০ লাখ টাকা এবং জালিয়াতি করে ছাপযুক্ত অন্য কাগজ থেকে আমার অপর একটি স্বাক্ষর স্ক্যান করে চেকে বসানো হয়েছে। ধার্য করা রায়ের তালিকা থেকে মামলা উত্তোলন ও মামলার চেক পরীক্ষকের নিকট ন্যায়বিচারের উদ্দেশ্যে প্রেরণের আবেদন করলে বাদী আবদুল আলিম কৌশলে তার প্রতারক চক্রের মাধ্যমে অবৈধভাবে এক কোটি ২০ লাখ টাকা এবং এক বছরের জেলের রায় হাসিল করে।
এই চক্রের প্রভাবে ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছি। আমার কাছে আইনের বিধানমতে আপিল করার ৫০ শতাংশ টাকা নেই। এ ছাড়াও জালিয়াত চক্রের সদস্যরা প্রতিনিয়তই আমাকে তাদের সঙ্গে সমঝোতার হুমকি দিচ্ছে। অসহায় অবস্থায় আমি আপনাদের স্মরণাপন্ন হইলাম। এ বিষয়ে আব্দুল আলিমের ব্যক্তিগত ফোনে বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।