logo
আপডেট : ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ১৯:২৭
যাত্রাবাড়ীতে নকল হিজড়ার কাণ্ড
নিজস্ব প্রতিবেদক

যাত্রাবাড়ীতে নকল হিজড়ার কাণ্ড

ঘটনা জেনে হতভম্ব পুলিশ কর্মকর্তারাও। হিজড়াদের কবলে ব্ল্যাকমেইলের শিকার হয়েছেন এক কলেজ ছাত্র। তার কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে প্রায় ২ লাখ টাকা। ঘটনার শিকার সাইফুল ইসলাম। রাজধানীর মুন্সি আব্দুর রব কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্র। ঘটনাটি ঘটে গত ২৩ জানুয়ারি বিকালে। ক্যাম্পাস থেকে বাসায় ফিরছিলেন তিনি। এসময় যাত্রাবাড়ী এলাকায় হিজড়ার খপ্পরে পড়েন। পরে ওই হিজড়াসহ আরও কয়েকজন তাকে যাত্রাবাড়ী এলাকায় একটি মেসে নিয়ে যায়। সেখানে অনৈতিক বাণিজ্যে জড়িত এক নারীর সঙ্গে ছবি তুলে তার কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায় করা হয়। পরে তিনি থানা পুলিশের আশ্রয় নেন। অবশেষে ওই হিজড়াসহ মুক্তিপণ আদায়কারীচক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ওয়ারী) বিভাগ। গ্রেপ্তারের পর আদালতে হাজির করে প্রত্যেকের সাত দিন করে রিমান্ড আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। আদালত তাদের দুই করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

 

শনিবার ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ওয়ারী) বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. তরিকুর রহমান এসব তথ্য জানান।

 

তিনি জানান, যাত্রাবাড়ী থানার চৌরাস্তা মোড় সংলগ্ন দক্ষিণ পার্শ্বের কাছাকাছি পৌঁছিলে অজ্ঞাতনামা সাত-আট জন পুরুষ এবং তাদের সঙ্গে থাকা এক জন হিজড়া সাইফুলের পথরোধ করে। পরে চেতনানাশক প্রয়োগ করে অচেতন করে তাকে কৌশলে পাশের একটি মেসে নিয়ে জিম্মি করে রাখা হয়। কিছুক্ষণ পর হিজড়া লোকটি এক নারীসহ সেই কক্ষে প্রবেশ করে সাইফুলকে নগ্ন হতে বলে। সাইফুল রাজি না হলে তাদের অন্যান্য সহযোগীরা সেই কক্ষে প্রবেশ করে তাকে বেধড়ক মারপিট করে এবং নগ্ন ছবি তুলতে বাধ্য করে।

 

পুলিশ কর্মকর্তা তরিকুর রহমান আরও জানান, তারা সাইফুলের সঙ্গে থাকা নগদ ১ লাখ ৬৬ হাজার টাকা ও মানিব্যাগ কেড়ে নেয়। এমনকি আরও টাকা দাবি করে। অন্যথায় মোবাইল ফোনে তোলা নগ্ন ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয়। এতে কলেজ ছাত্র সাইফুল ভীত হয়ে ফোনে আত্মীয়-স্বজনের কাছ সমস্যার কথা বলে টাকা ধার চায়। পরে বিকাশে ২৪ হাজার টাকা এনে দেয়। পরবর্তীতে ওই ঘটনায় ভিকটিমের ভাই বাদি হয়ে যাত্রাবাড়ী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ওই মামলার ছায়া তদন্ত শেষে জড়িত আসামিদের অবস্থান শনাক্ত করে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

 

গ্রেপ্তারকৃতরা হলো, মো. সোহাগ মিয়া ওরফে স্বজন ওরফে কাজল ওরফে হিজড়া সজনি (৩২), মো. নাছির (৪২), মো. আমানুর মন্ডল (৪২), মো. রাজু (২৬), মো. আব্দুর রহমান (৩৬) ও মো. হৃদয় মিয়া (২২)।

 

তাদের মধ্যে মূল পরিকল্পনাকারী মো. সোহাগ মিয়া ওরফে স্বজন ওরফে কাজল ওরফে হিজড়া সজনি। নকল হিজড়া সেজে দীর্ঘদিন থেকে এই চক্রের সদস্যরা কৌশলে অসংখ্য মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলেও জানান গোয়েন্দা পুলিশের ওই কর্মকর্তা।

 

ভোরের আকাশ/আসা