বছরের পর বছর, দুর্ভোগ যেন তাদের পিছু ছাড়ছে না। চলাচলের জন্য একটি মাত্র সাঁকোই ভরসা হাজার হাজার সাধারণ মানুষের। হবিগঞ্জ সদর উপজেলার ৬ নম্বর রাজিউড়া ইউনিয়নের সাধুর বাজার ও আশপাশের গ্রামবাসীর এমন দূর্ভোগ নিত্যদিনের। নির্বাচন এলেই ব্রিজ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয় সেখানকার বাসিন্দাদের। কিন্তু কাজের কাজ হয় না কিছুই।
সাধুর বাজারের দক্ষিণ পাশ দিয়ে বয়ে গেছে সুতাং নদী। নদীর উভয় পাশে রয়েছে অনেকগুলো গ্রাম। স্থানীয়দের উদ্যোগে সুতাং নদীর ওপর নির্মাণ করা হয়েছে একটি বাঁশের সাঁকো, যা আশপাশের গ্রামবাসীর চলাচলের একমাত্র মাধ্যম। সাঁকোটি দিয়ে ভঙ্গুর হাটি, বাগআছরা, বাগপুরি, ভাটি শৈলজুড়া, গুরাবই, সূত্রাপুর, কাটাখালী, চানপুর, সুখচরসহ অন্তত ১২টি গ্রামের মানুষ যাতায়াত করে। প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে তাদের। বিশেষ করে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী, অসুস্থ রোগী ও নারীরা বিপাকে পড়ছেন বেশি।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সুতাং নদীর ওপর অবস্থিত একমাত্র বাঁশের সাঁকোটি নড়বড়ে অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে। সাঁকো দিয়ে খুবই সতর্কতার সঙ্গে চলাচল করছে সাধারণ লোকজন। কোনোরকম চলাচল করা গেলেও সাঁকোটি দিয়ে আনা-নেয়া করা যাচ্ছে না মালপত্র। এ ছাড়া বৃদ্ধ ও নারীরা ছোট সন্তানাদি নিয়েও সাঁকো পার হতে শঙ্কায় থাকেন। এটি দিয়ে অসুস্থ রোগীদের আনা-নেয়া করা যায় না।
স্থানীয় বাসিন্দা বিল্লাল আহমেদ জানান, সুতাং নদীর ওপর একটি ব্রিজের জন্য বছরের পর বছর তাদের কষ্ট-দুর্ভোগ সহ্য করতে হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরেই সাধুর বাজারের পাশে একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছেন তারা।
নির্বাচন এলে অনেকেই সেখানে একটি ব্রিজ নির্মাণ করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু কোনো জনপ্রতিনিধিই তাদের দেয়া প্রতিশ্রুতি পূরণ করেননি। যে কারণে ঘুরেফিরে বাঁশের সাঁকোটিই তাদের শেষ ভরসা। বাবুল আহমেদ, আব্দুল্লাহ মিয়া, আব্দুল বারিকসহ কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, গ্রামবাসীর দুঃখ-দুর্দশা বোঝার কেউ নেই। ছোট ছোট ছেলেমেয়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলতে পারে না। অনেক সময় দুর্ঘটনা ঘটে। তাদের দাবি, অচিরেই যেন সাধুরবাজারের পাশে সুতাং নদীতে একটি ব্রিজ নির্মাণ করা হয়।
সদর উপজেলার রাজিউড়া ইউপি চেয়ারম্যান বদরুল করিম দুলাল জানান, সুতাং নদীতে একটি ব্রিজের দাবি অনেক দিনের। তিনি স্থানীয় এমপি অ্যাডভোকেট মো. আবু জাহিরের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবগত করার পর একটি ব্রিজ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে এলজিইডির সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম জানান, তারা ব্রিজ নির্মাণে সাড়ে ৬ কোটির একটি প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছেন। অনুমোদন পেলে দ্রুত টেন্ডার আহ্বান করে কাজ শুরু করা হবে।
ভোরের আকাশ/আসা