ঢাকা জেলার ৬টি উপজেলা ৫ লক্ষাধিক শিশুকে ভিটামিন 'এ' প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।
আগামীকাল সোমবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে এ কার্যক্রম।
এবছর প্রতিপাদ্য ‘শিশুকে ভিটামিন এ খাওয়ান, শিশু মৃত্যুর ঝুঁকি কমান’।
রোববার দুপুরে ঢাকা জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের হলরুমে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ঢাকার সিভিল সার্জন ডা. আ ফ ম সাহাবুদ্দিন খান।
এসময় ঢাকা জেলা তথ্য অফিসের পরিচালক কাজী গোলাম আহাদ উপস্থিত ছিলেন।
সিভিল সার্জন ডা. আ ফ ম সাহাবুদ্দিন খান বলেন, ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন যে টার্গেট নিয়ে শুরু হয়েছে সেটা কোয়ান্টিটির দিক থেকে শতভাগ সফল। এখন আমরা কোয়ালিটির দিকে নজর দিচ্ছি। প্রতিবারই ক্যম্পেইনের সময় নতুন কিছু বিষয়ে আমরা জোর দিয়ে থাকি। এবার আমরা বলেছি কাপসুল খাওয়ানোর সময় শিশুর ঠোঁটে স্পর্শ করা থেকে যেনো বিরত থাকি। সুস্থ থাকতে ক্যাপসুল খাওয়াতে গিয়ে যেনো শিশু ঠোঁটে ছোয়া লাগিয়ে অন্য রোগের ঝুঁকিতে না ফেলি । ছোট ছোট এসব বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। ভালো থাকতে হলে স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে হবে। বিশেষ করে শিশুদের সুস্থ রাখতে অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে। তিনি ভিটামিন এ প্লাস ক্যাপসুল কাম্পেইন সফল করতে দেশের সকল শ্রেণীর পেশাজীবীকে সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন।
জেলা তথ্য অফিসের পরিচালক কাজী গোলাম আহাদ বলেন, ভিটামিন এ প্লাস ক্যম্পেইন মানে অনেকেই মনে করেন শিশুদের ক্যাপসুল খাওয়ানো ছাড়া আরও কিছু খাওয়ানো হবে। আসলে বিষয়টি তা নয়। ক্যাপসুল খাওয়ানোর পাশাপাশি আমরা কিছু মূল্যবান স্বাস্থ্যবার্তা প্রচার করি। যা অভিভাবকরা আমলে নিলে শিশুরা সুস্থভাবে বেড়ে উঠবে। এ কারণে শিশুকে ভিটামিন এ কাপসুল খাওয়ালে শুধু চলবে না, বরং আমাদের সবাইকে স্বাস্থ্য সচেতন বার্তাসমুহ মুখে মুখে যে যেভাবে পারি প্রচার করতে হবে। তাহলে সরকারের এই ক্যম্পেইন সফল হবে।
সিনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা অফিসার মো. মহসিন মিয়ার সঞ্চালনায় প্রজেক্টরের মাধ্যমে ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন সার্বিক তথ্য তুলে ধরেন মেডিক্যাল অফিসার ডা. রিজুয়ানা পারভিন।
তিনি জানান, এবার ঢাকা জেলার ছয়টি উপজেলায় ৫ লাখ ১২ হাজার ৪৪৬ জন শিশুকে ভিটামিন "এ" প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।
এবার ৬-১১ বছর বয়সী ৬৬ হাজার ২৬৬ জন শিশুকে নীল রঙের এবং ১২-৫৯ মাস বয়সী শিশুদের ৪ লাখ ৪৬ হাজার ১৮০ জন শিশুকে লাল রঙের ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।
ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন চলাকালে ৬ থেকে ১১ মাস বয়সী শিশুকে একটি নীল রঙের এবং ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী শিশুকে একটি লাল রঙের ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। এর পাশাপাশি জন্মের পরপর নবজাতককে শালদুধ খাওয়ানো, ৬ মাস পর্যন্ত শিশুকে শুধু মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানো; শিশুর ৬ মাস পূর্ণ হলে মায়ের দুধের পাশাপাশি পরিমাণমত ঘরে তৈরি সুষম খাবার খাওয়ানোর বার্তাও প্রচার করা হবে।
ঢাকার ৬টা উপজেলার মধ্যে ধামরাই, দোহার, কেরাণীগঞ্জ, নবাবগঞ্জ, সাভার ও সাভার পৌরসভা এলাকায় এ ক্যাম্পেইন চলবে।
ছয় উপজেলার মোট ১৭৪২ টি স্থায়ী ও ১২৬ অস্থায়ী কেন্দ্রে শিশুদের ভিটামিন এ খাওয়ানো হবে। এতে নিয়োজিত থাকবেন ৩ হাজার ৮৮৪ জন স্বেচ্ছাসেবক। এছাড়াও পর্যাপ্ত ডাক্তার, নার্সসহ স্বাস্থ্যকর্মীরা এ কাজে সরাসরি অংশ নেবেন বলেও জানান ডা. রিজুয়ানা পারভিন।
তিনি বলেন, ভিটামিন এ কাপসুল খাওয়ানো পাশাপাশি কিছু বিষয়ে সচেতন করা হবে। জন্মের পরপর নবজাতককে শালদুধ খাওয়ানো, ৬ মাস পর্যন্ত শিশুকে শুধু মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানো; শিশুর ৬ মাস পূর্ণ হলে মায়ের দুধের পাশাপাশি পরিমাণমত ঘরে তৈরি সুষম খাবার খাওয়ানোর বার্তাও প্রচার করা হবে।
গত শুক্রবার মসজিদে খুৎবার মাধ্যমেও ভিটামিন এ ক্যাম্পেইনের প্রচারণা চালানো হয় বলে জানান তিনি।
ভিটামিন "এ" প্লাস ক্যাপসুল শিশুদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ডায়রিয়া-নিউমোনিয়ার প্রকোপ কমায়, অন্ধত্ব দূর করে। এজন্য শিশুদেরকে বাড়ির পাশের কেন্দ্রে গিয়ে ভিটামিন "এ" ক্যাপসুল খাওয়াতে হবে। তবে অসুস্থ শিশুদের ভিটামিন-এ ক্যাপসুল খাওয়ানো যাবে না বলেও জানান ডা. রিজুয়ানা পারভিন।
ভোরের আকাশ/আসা