logo
আপডেট : ৫ মার্চ, ২০২৩ ১৩:৫০
সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালে প্রতিনিয়ত ঘটছে চুরি
সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি

সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালে প্রতিনিয়ত ঘটছে চুরি

সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতাল

নীলফামারীর সৈয়দপুর ১০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালটি বর্তমানে চোরের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। প্রায় প্রতিদিনই এ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাদের আত্মীয়-স্বজনদের দামি মোবাইল ফোন ও বিভিন্ন মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি যাচ্ছে। এসব চুরি বন্ধে হাসপাতালে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করেছে কর্তৃপক্ষ।

 

কিন্তু তারপরও ঠেকানো যাচ্ছে না হাসপাতালের চুরির ঘটনা। গত এক সপ্তাহে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগী ও স্বজনদের প্রায় ২০টি মোবাইল ফোন ও নগদ অর্ধ লক্ষাধিক টাকা চুরি যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। চুরির ঘটনা নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও রোগীরা অনেকটাই অসহায় হয়ে পড়েছেন।

 

সূত্রমতে, সৈয়দপুর শহরের কুন্দল এলাকায় ১৯৬২ সালে ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালটি স্থাপিত হয়। ২০১১ সালে ৫০ শয্যা থেকে এ হাসপাতালটি ১০০ শয্যায় উন্নীত করা হয়।

 

মূলতঃ ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে সৈয়দপুর ১০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালটিতে সৈয়দপুর উপজেলার মানুষ ছাড়াও আশপাশের বেশ কয়েকটি উপজেলার মানুষ চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন।

 

দিনাজপুরের পার্বতীপুর, চিরিরবন্দর ও খানসামা, রংপুরের বদরগঞ্জ ও তারাগঞ্জ উপজেলার মানুষজন চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন এখানে। এ ছাড়াও রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কে দুর্ঘটনার শিকার লোকজনকেও প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য সৈয়দপুর ১০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।

 

হাসপাতালের আউটডোরে (বহির্বিভাগ) ৬-৭শ রোগী চিকিৎসা সেবা নিয়ে থাকেন প্রতিদিন। এ সময় বিভিন্ন বয়সি কয়েক শত মানুষের সমাগম ঘটে হাসপাতালটিতে। এ কারণে গত এক সপ্তাহে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগী ও স্বজনদের প্রায় ২০টি মোবাইল ফোন ও নগদ অর্ধ লক্ষাধিক টাকা চুরি যায়।

 

হাসপাতালের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, হাসপাতালে চুরির ঘটনাগুলো ঘটে মূলতঃ ভোর ২টা থেকে ৪টার মধ্যে। হাসপাতালে বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা রোগী ও স্বজনেরা যখন গভীর ঘুমে বিভোর থাকেন, ঠিক সেই সময়ে চোরেরা কৌশলে হাসপাতালে ঢুকে পড়ে। এরপর রোগী ও তাদের স্বজনদের মোবাইল ফোন সেট, নগদ টাকা ও মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে সটকে পড়ে।

 

সম্প্রতি শহরের চামড়াগুদাম এলাকার জনৈক রফিকুল ইসলাম ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। রাতে চোরেরা তার মোবাইল ফোন ও নগদ টাকা নিয়ে যায়। এর আগে সৈয়দপুর পৌরসভার সংরক্ষিত ওয়ার্ডের মহিলা কাউন্সিলরের দুটি মোবাইল ফোনও চুরি যায়।

 

এ ছাড়াও হাসপাতালের আবাসিক কোয়ার্টার থেকে এক তত্তবধায়কের ব্যবহৃত মূল্যবান মোবাইল ফোন চুরি যাওয়ার রেকর্ড রয়েছে। এর আগে হাসপাতালে বৈদ্যুতিক সংযোগের সার্ভিস তার চুরির একাধিক ঘটনা ঘটে।

 

চুরি যায় হাসপাতাল চত্বরে থাকা মসজিদের পানি তোলার মোটর। আর দিনের বেলা হাসপাতালে আসা রোগী ও স্বজনদের মোটরসাইকেল, বাইসাইকেল রিকশা ও রিকশাভ্যান চুরিরও অভিযোগ রয়েছে।

 

সৈয়দপুর ১০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মো. নাজমুল হুদা জানান, রাতের বেলা হাসপাতালের ওয়ার্ডগুলো থেকে রোগী ও স্বজনদের দামি মোবাইল ফোন এবং নগদ টাকা চুরির ঘটনার অভিযোগ মিলছে প্রতিনিয়ত। বিষয়গুলো নিয়ে সৈয়দপুর থানা পুলিশকে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে। কিন্তু এখনো সমাধান পাইনি।

 

এ বিষয়ে সৈয়দপুর থানার ওসি সাইফুল ইসলাম জানান, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মৌখিকভাবে চুরির বিষয়টি অবগত করেছেন। এ কারণে হাসপাতাল চত্বরে সাদা পোশাকে পুলিশ নিযুক্ত করা হয়েছে। অল্প দিনের মধ্যেই চুরির ঘটনার সাথে জড়িতদের পাকড়াও করা হবে বলে জানান তিনি।

 

ভোরের আকাশ/নি