২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা ১০ মার্চ শুক্রবার অনুষ্টিত হবে। সকাল ১০ টায় ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়ে শেষ হবে বেলা ১১টায়। পরীক্ষার্থীকে সকাল ৮ থেকে সকাল সাড়ে ৯টার মধ্যে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে হবে। কেননা পরীক্ষা কেন্দ্রের প্রধান ফটক সকাল সাড়ে নয়টায় বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর।
গত সোমবার (৬ মার্চ) স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা) ডা. মুজতাহিদ মুহাম্মদ হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। ওই বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়, বিগত বছরগুলোর তুলনায় এ বছর এমবিবিএসে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের আবেদন বেশি। কোনো প্রকার গুজবে কান না দেওয়ার জন্যও পরামর্শ দিয়েছে অধিদপ্তর ।
এদিকে বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের সভাপক্ষে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা সম্পর্কিত জরুরি তথ্যাদি তুলে ধরে মিডিয়া ব্রিফিং করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তিনি জানান, এবছর মেডিকেলে ভর্তির জন্য আবেদন করেছেন এক লাখ ৩৯ হাজার ২১৭ জন। সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে ১০৮টি মেডিকেল কলেজে মোট আসন রয়েছে ১১ হাজার ১২২টি। সেই হিসাবে প্রতি আসনের বিপরীতে লড়বেন ১২ জন পরীক্ষার্থী। তবে শুধু সরকারি মেডিকেল কলেজে একটি আসনের বিপরীতে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৩২ জন। এক লাখ ৩৯ হাজার ২১৭ জনের মধ্যে ছেলে ৬৪ হাজার ২৬৪ জন অর্থাৎ ৪৬ দশমিক ১৬ শতাংশ এবং মেয়ে ৭৪ হাজার ৯৫৩ জন অর্থাৎ ৫৩ দশমিক ৮৪ শতাংশ।
দেশে ৩৭টি সরকারি মেডিকেলে এমবিবিএসে চার হাজার ৩৫০টি আসন রয়েছে। মেধা কোটায় তিন হাজার ৩৮৪ জন, জেলা কোটায় ৮৪৬ জন, মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৮৭ জন ও উপজাতি কোটায় ৩৩ জন ভর্তি হতে পারবেন।
দেশের ৭১টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে আসন রয়েছে ছয় হাজার ৭৭২টি। বেসরকারি মেডিকেলে ভর্তির ক্ষেত্রে কিছুটা পরিবর্তন আনার কথা জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, এ বছর যারা পাস করে প্রাইভেট মেডিকেল কলেজে ভর্তি হবেন, সেখানে আমরা কিছুটা পরিবর্তন এনেছি। আগে পাস যতই করুক সবাই ইলিজেবল (ভর্তিযোগ্য) হতো। গত বছর ৮০ হাজার পাস করেছিল। ৮০ হাজারই ভর্তির যোগ্য ছিল। ভর্তির জন্য এ বছর আমরা সেটাকে কমিয়ে ওয়ান ইজ টু ফাইভ করেছি অর্থাৎ একটা সিটের জন্য পাঁচজন করে আমরা কনফিগারেশন করব মেরিট অনুযায়ী। অর্থাৎ তাতে ৩৩ হাজার ৮৬০ জন শিক্ষার্থীর মধ্য থেকে বেসরকারি ৬ হাজার ৭৭২টি সিটে ভর্তি হতে পারবে।
১৯ টি পরীক্ষা কেন্দ্রের ৫৭টি ভেন্যুর এক হাজার ৯৭৭টি কক্ষে ১০০ নম্বরের এমসিকিউ পরীক্ষা হবে।
মন্ত্রী জানান, ভর্তি পরীক্ষা নির্বিঘ্নে, সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ করার জন্য দেশের খ্যাতিমান শিক্ষক ও চিকিৎসকদের সমন্বয়ে ভর্তি পরীক্ষা পরিচালনা কমিটি, সাংবাদিক ও দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সমন্বয়ে ওভারসাইট কমিটি এবং অভিজ্ঞ মেডিকেল শিক্ষকদের সমন্বয়ে উপদেষ্টা কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়া নম্বর সমতাকরণের জন্য আলাদাভাবে কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এর আগে এক বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর জানিয়েছে, ‘আবেদনপত্র প্রক্রিয়াকরণ, নিরীক্ষণ, উত্তরপত্র মূল্যায়ন, ফলাফল চূড়ান্তকরণ এবং পূনঃনিরীক্ষণ ডিজিটাল প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন করা হবে। উত্তরপত্র ‘ওএমআর বা আইসিআর’ মেশিনে পরীক্ষা করা হবে’।
প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্র সংক্রান্ত নিয়মাবলী
পরীক্ষা কেন্দ্রে উত্তরপত্রের (ঙগজ ঝযববঃ) উপর মুদ্রিত ১০ অঙ্কের সেট কোডটি প্রশ্নপত্রে মুদ্রিত সেট কোডের সাথে না মিললে কিংবা প্রশ্নপত্রে ক্রমানুসারে এক থেকে একশতটি প্রশ্ন না থাকলে উত্তরপ্রশ্নপত্রটি পরিবর্তন করে নিতে হবে। উত্তরপত্রের সকল স্থানেই কালো কালির বল পেন ব্যবহার করতে হবে।
রোল নং ও সিরিয়াল নং নির্দিষ্ট স্থানে ইংরেজিতে লিখে তারপর সংশ্লিষ্ট বৃত্তগুলো তদানুযায়ী যথাযথভাবে ভরাট করতে হবে। কোন প্রকার ঘষামাজা বা কাটাকাটি করলে উত্তরপত্র বাতিল বলে গণ্য হবে। বৃত্তগুলো নিচের প্রদর্শিত পদ্ধতিতে এমনভাবে ভরাট করতে হবে যেন ভিতরের লেখাটি দেখা না যায়।
উত্তরপত্রের নির্দিষ্ট স্থানে প্রবেশপত্র অনুযায়ী স্বাক্ষর প্রদান করতে হবে এবং স্পষ্টভাবে নাম লিখতে হবে, অন্যথায় উত্তরপত্র বাতিল বলে গণ্য হবে। উত্তর প্রদান করার আগে পরীক্ষার্থীকে প্রশ্নপত্রের সাথে সংযুক্ত উত্তরপত্রটি নিজ দায়িত্বে সাবধানতার সাথে আলাদা করে নিতে হবে।
প্রশ্নপত্রের সাথে দেয়া উত্তরপত্রে প্রতিটি প্রশ্নের জন্য চারটি সম্ভাব্য উত্তরের বৃত্ত রয়েছে। তার মধ্য হতে সঠিক উত্তরের বৃত্তটি পরিচ্ছন্নভাবে উপরে প্রদর্শিত নিয়ম মেনে সম্পূর্ণ ভরাট করতে হবে। উত্তরপত্রের নির্দিষ্ট বৃত্তসমূহ ভরাট করা এবং নির্দেশিত স্থানে যথাযথ তথ্য প্রদান করতে হবে। এতদ্ব্যতিত অন্য কোন স্থানে কিছু লিখা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ এবং লিখলে উত্তরপত্র বাতিল বলে গণ্য হবে।
খসড়ার জন্য প্রশ্নপত্র ব্যবহার করা যাবে। কোন পৃথক কাগজ ব্যবহার করা যাবে না। প্রশ্নপত্রের কোন অংশ ছেড়া যাবে না কিংবা কারও সাথে বদল করা যাবে না। উত্তরপত্রে হল পরিদর্শকের স্বাক্ষর করার সময়ে পরীক্ষার্থীকে প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্র আলাদা করা অবস্থায় রাখতে হবে। উত্তরপত্রের নির্দিষ্ট স্থানে হল পরিদর্শকের স্বাক্ষর গ্রহণ এবং সম্পূর্ণ নাম লিখা নিশ্চিত করতে হবে। কর্তব্যরত হল পরিদর্শকের স্বাক্ষর ও নামবিহীন উত্তরপত্র বাতিল বলে গণ্য হবে।
পরীক্ষা শেষে হল পরিদর্শকগণ প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্র আলাদা অবস্থায় পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে গ্রহণ করবেন এবং আলাদাভাবে নির্দিষ্ট খামে ভরবেন।
উত্তরপত্র মূল্যায়ন নীতিমালা
প্রতিটি সঠিক উত্তরের জন্য ১ নম্বর প্রদান করা হবে এবং প্রতিটি ভুল উত্তরদানের জন্য ০.২৫ নম্বর কর্তন করা হবে।
কেন্দ্রে শৃঙ্খলা সংক্রান্ত নিয়মাবলী
পরীক্ষার হলে মোবাইল ফোন, কোন ধরনের ডিজিটাল ডিভাইস, ক্যালকুলেটর, হাতঘড়ি বা পকেটঘড়ি নিয়ে প্রবেশ করা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। এরপরও পরীক্ষার হলে কারো কাছে উল্লিখিত নিষিদ্ধ কোন কিছু পাওয়া গেলে অথবা কাউকে এ ধরনের কোন ডিভাইস ব্যবহার করতে দেখা গেলে তার উত্তরপত্র বাতিল বলে গণ্য হবে।
কোন পরীক্ষার্থী পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে দুই কান ঢেকে রাখতে পারবেন না। হল পরিদর্শকগণ উত্তরপত্রে স্বাক্ষর প্রদানের সময়ে শনাক্তকরণের জন্য প্রয়োজনে পরীক্ষার্থীর মুখমণ্ডল খোলার নির্দেশনা দিতে পারবেন।
ভোরের আকাশ/আসা