logo
আপডেট : ১৯ মার্চ, ২০২৩ ১৮:০০
দেশে আর কোনো ষড়যন্ত্রের নির্বাচন হবে না: ফখরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশে আর কোনো ষড়যন্ত্রের নির্বাচন হবে না: ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তারা (সরকার) যে ষড়যন্ত্রের ফাঁদ তৈরি করছে আমরা সেই ফাঁদে আর পা দেবো না। এবার দেশে আর কোনো ষড়যন্ত্রের নির্বাচন হবে না।

 

রোববার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) ‘গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের বিকল্প নেই’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ মুখে গণতন্ত্রের কথা বলে কিন্তু তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না।

 

এভাবে চলতে থাকলে তা হবে জাতির জন্য খুবই দুর্ভাগ্যজনক। এমন অসভ্য বর্বর শাসক আমরা কখনো দেখিনি। এরা প্রতারক ও ভন্ড।

 

তিনি বলেন, আজকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দেশে ভয় ও ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। মানুষ এখন সত্য কথা লেখেও না, বলেও না। যারা প্রতিবাদী তারাও আর সত্য কথা বলে না। তারা আওয়ামী লীগের অন্যায়ের প্রতিবাদও করেন না। বর্তমানে দেশে এতগুলো টিভি চ্যানেল ও পত্রিকা। কই তারা তো ভিন্নমতের খবর দেখাতে কিংবা বলতে পারে না।

 

মির্জা ফখরুল বলেন, বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই তো তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নেই। তাহলে বাংলাদেশে কেন? আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা জাতীয় পার্টি ও জামায়াতে ইসলামিকে নিয়ে প্রতিষ্ঠা করেছিল। তারা সে সময় বলেছিলো যে বাংলাদেশে যে দল ক্ষমতায় যায় পরে তারা ফের ক্ষমতায় থাকার জন্য ম্যানিপুলেশন করে।

 

এমনকি আওয়ামী লীগ ওই দাবিতে দেশে তুলকালাম কান্ড ঘটিয়ে দিয়েছিল। বাসের মধ্যে গানপাউডার দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারলো। একপর্যায়ে খালেদা জিয়া সে সময় দেশ, জনগণ ও গণতন্ত্রের স্বার্থে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন।

 

তিনি বলেন, অথচ বাংলাদেশের স্বাধীনতার মূল লক্ষ্য ছিল গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা। দলমত নির্বিশেষে সবার একটা মত ছিল যে বাংলাদেশ হবে গণতান্ত্রিক। জনগণের ভোটে নির্বাচিত একটি সংসদের মাধ্যমে দেশ পরিচালনা হওয়ার কথা। কিন্তু আওয়ামী লীগ নিজেরাই ১৯৭৫ সালে সেই পদ্ধতি নষ্ট করে ফেলেছে। কারণ আওয়ামী লীগ সবসময় সামন্ততন্ত্রে থাকতে চায়। তাদের মধ্যে জমিদারি ভাব সবসময় থাকে।

 

তারা ভিন্নমতকে সহ্য করতে পারে না। সেজন্যই সে সময় তিরিশ হাজার তরুণ যুবককে হত্যা করেছে। কারণ তারা সবদিক থেকে ব্যর্থ হয়েছিল। জনগণ তাদের বিরুদ্ধে এমন ক্ষেপে গিয়েছিল যে তারা একদলীয় শাসন ব্যবস্থা বাকশাল কায়েম করেছিল।

 

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে ভয় পেলে চলবে না। আবারও আমাদের জেগে উঠে গণঅভ্যুত্থান ঘটিয়ে এই সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করতে হবে। যেন আমরা জনগণের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে পারি। তা না হলে আওয়ামী লীগ নির্বাচন নিয়ে আবারো পুরোনো ফাঁদ পেতেছে। তারা দেখাচ্ছে যে সভা সমাবেশ করতে দিচ্ছে।

 

আসলে এগুলো হচ্ছে তাদের শয়তানি। তারা দেশের মানুষকে বোকা ভাবছে। কিন্তু দেশের মানুষ তাদের ফাঁদে পা দেবে না।

 

তিনি বলেন, আজকেও আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেই প্রথমে নিজেরা আদালতকে ব্যবহার করে সেই নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যবস্থা বাতিল করে দিয়েছে। তাদের লক্ষ্য হচ্ছে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করা।

 

এজন্য যিনি রায় দিয়েছেন সেই বিচারক খায়রুল হককে একদিন জনগণের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। তিনি বাংলাদেশের ক্ষতি করেছেন। তবে এবার দেশের তরুণ প্রজন্ম থেকে শুরু করে সকল শ্রেণির মানুষ জেগে উঠেছে।

 

আসুন সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যাই। তবেই আমাদের দাবি আদায় করা সম্ভব হবে।

 

ভোরের আকাশ/নি