logo
আপডেট : ২২ মার্চ, ২০২৩ ১৭:১৩
চট্টগ্রাম ৮ আসনে মনোনয়ন চান মুক্তিযোদ্ধার সন্তান আশেক রসুল খান বাবু
নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রাম ৮ আসনে মনোনয়ন চান মুক্তিযোদ্ধার সন্তান আশেক রসুল খান বাবু

চট্টগ্রাম ৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) আসনে উপ–নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী তরুণ আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান আশেক রসুল খান (বাবু)। তিনি মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের সংগঠন ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’ এর চট্টগ্রাম মহানগরের সাধারণ সম্পাদক এবং মোহরা ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য।

 

আশেক রসুল খান (বাবু) প্রখ্যাত আওয়ামীলীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম সেকান্দার হায়াত খান এবং সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্যানেল মেয়র এবং বর্তমান কাউন্সিলর (চান্দগাঁও, মোহরা, পূর্বষোল শহর ওয়ার্ড) জোবাইরা নার্গিস খানের পুত্র।

 

তার পিতা সেকান্দর হায়াত খান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর বিশ্বস্ত সহচর, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অন্যতম সংগঠক, যুদ্ধকালীন কালুরঘাট সংগ্রাম কমিটির আহবায়ক, সেক্টর– ১ এ যুদ্ধ করেন।

 

৭৫ ও ৮৮ সালে নির্যাতিত, দুঃসময়ের চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সহ–সভাপতি ছিলেন।

 

আশেক রাসুল খান বাবু পারিবারিকভাবে আওয়ামী রাজনীতির বলয়ে বেড়ে উঠেছেন। তার দাদা মরহুম ছালেহ আহম্মদ খান পাঁচলাইশ থানা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, মোহরা ইউনিয়ন পরিষদের প্রেসিডেন্ট এবং চট্টগ্রাম জুরি কাউন্সিল বোর্ডের সদস্য ছিলেন।

 

তিনি সভাপতি থাকাকালীন মোহরা এ. এল. খান হাই স্কুল মাঠে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে আগড়তলা ষড়যন্ত্র মামলা থেকে মুক্তি পাওয়ার পর বিশাল সংবর্ধনা দিয়েছিলেন।

 

আশেক রাসুল খান ২০০১ থেকে ২০০৮ এর নির্বাচন পর্যন্ত দলীয় কর্মকান্ড রাজপথে থেকে সভা সমাবেশ মিছিল ও নির্বাচনী পরিচালনার দায়িত্ব পালন করে নিজের এলাকায় এবং ২০১৩ সালে বিএনপি, জামায়াত, হেফাজতের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ মিছিল, মিটিং এবং হরতাল বিরোধী পথসভায় অংশগ্রহণ করেন।

 

তিনি ২০০৮ সালের ২৬ মার্চ কালুরঘাট স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ডাককে সম্মান, মর্যাদা ও সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য তার ব্যক্তিগত ও নিজস্ব উদ্যোগে চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগকে সাথে নিয়ে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি ভাস্কার্য, বিজয় স্তম্ভ ও যাদুঘর ফলক উম্মোচন করেন।

 

আশেক রাসুল খান বাবু বলেন, ‘আমার উপর আস্থা ও বিশ্বাস রেখে জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দিলে আমি নতুন প্রজন্মকে সাথে নিয়ে স্বাধীনতার সঠিক ইতিহাস সমাজে প্রতিষ্ঠা করা, দুর্নীতি সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা, বেকার যুব সমাজকে কর্মসংস্থানের মাধ্যমে শক্তিতে পরিণত করা হবে আমার প্রথম কাজ।

 

এছাড়া মজলুম, অসহায় মেহনতি ও দুস্থ মানুষের প্রতি সুনজর রাখা, রাজনীতির মাধ্যমে সমাজের প্রতিটি মানুষকে সর্বোচ্চ সেবা পৌঁছে দেয়া এবং বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠাই হবে আমার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।’

 

তিনি বলেন, আমার পিতা আওয়ামীলীগের দু:সময়ে পৃষ্ঠপোষকতার ভুমিকায় কাজ করেছেন। চট্রগ্রামের রাজনীতির জন্য তিনি ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতা। বাবার মৃত্যুর পর রাজনীতিতে স্বকীয় থাকলেও আমরা অনেকটা পিছিয়ে পড়েছি। আমি এবং আমার পরিবার অনেকটা গ্রুপ রাজনীতির স্বীকার।

 

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি, কালুঘাট স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অন্যতম সংগঠক বীর মুক্তিযোদ্ধা সেকান্দর হায়াৎ খান, এমনই এক ত্যাগী আওয়ামী লীগ নেতা। দেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ, কালুরঘাটে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ – সবখানেই জড়িয়ে আছে সংগ্রাম পরিষদের চেয়ারম্যান সেকান্দার হায়াত খানের স্মৃতিচিহৃ।

 

মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন দলিল অনুযায়ী, ‘ আওয়ামী লীগ ও চট্টগ্রাম সংগ্রাম পরিষদের নেতারা ‘স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র’ চালু করলেও তার নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ কিংবা কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণের কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। ফলে কালুরঘাটে বেতার চালু হওয়ার শুরু থেকে এর সঙ্গে সামগ্রিকভাবে জড়িত ছিলেন কালুরঘাট সংগ্রাম পরিষদের আহব্বায়ক সেকান্দর হায়াত খান।

 

সেকান্দর হায়াত খান ও তার ভাই হারুন-অর-রশিদ খানের নেতৃত্বে বেতারকেন্দ্রের আশপাশের লোকজন বেতারকর্মী ও নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত বেঙ্গল রেজিমেন্টের সেনাদের খাবারের ব্যবস্থা করতেন। ‘

 

বাংলাদেশের মুক্তি-সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা কেন্দ্র ট্রাস্ট চট্টগ্রামের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা ডা. মাহফুজুর রহমান তাঁর ‘স্বাধীনতার ঘোষণা’ বইটিতে মুক্তিযুদ্ধের সময়কার সেকান্দর হায়াত খানের বিস্মৃত স্মৃতি থেকে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে নানা তথ্য লিপিবদ্ধ করেছেন।

 

সমসাময়িকদের ভাষ্যমতে, যখন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের চরম দুঃসময় চলছিলো, তখন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা সেকান্দর হায়াৎ খান।

 

১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি নগরের লালদীঘি মাঠে আওয়ামী লীগের সমাবেশে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনার যোগদানের আগ মুহুর্তে, নেত্রীর গাড়ি বহর নিউমার্কেট মোড় অতিক্রম করে জিপিও’র সামনে আসে। তখন আচমকা গর্জে উঠে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের রাইফেল। পুলিশের এলোপাথাড়ি গুলিতে একে একে ২৪ জন মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।

 

আহত হন আরো দু’শতাধিক নেতাকর্মী। পুলিশের এলোপাতাড়ি গুলি বর্ষণের সময় মানববেষ্টনী তৈরি করে শেখ হাসিনাকে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতি ভবনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেদিন গ্রেপ্তারও হয়েছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা সেকান্দর হায়াৎ খানসহ অসংখ্য নেতা কর্মী।

 

তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের মতে, ‘ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে হাইব্রিড আর বসন্তের কোকিলদের জয় জয়কার চলছ। ,আর এরমাঝেই ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে ত্যাগী নেতাদের আত্মত্যাগের কথা। ‘

 

সেকান্দর হায়াত খান চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন হওয়ার আগে মোহরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন। এলাকায় গড়ে তুলেছেন বিস্তৃত সংগঠন। সেই পথ ধরেই এগুতে চান সেকান্দর হায়াত খানের ছেলেও। বোয়ালখালী চান্দগাঁও আসনে আওয়ামী লীগ থেকে উপ নির্বাচনে মনোনয়ন চান প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা সেকান্দর হায়াত খানের ছেলে আশেক রসূল খান।

 

তার মা চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র জোবাইদা নার্গিস খানও এলাকার উন্নয়ন ও সেকান্দর হায়াত খাতের স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছেন। জানা যায়, আশেক রসূল খান আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দক্ষ সংগঠক হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করেছেন।

 

জানতে চাইলে আশেক রসূল খান বলেন, বর্তমান সরকার উন্নয়ন কর্মসূচির সুফল জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে বাবার আদর্শের পথ ধরে এলাকায় দীর্ঘদিন থেকে কাজ করে যাচ্ছি। মনোনয়ন পেলে প্রয়াত সেকান্দর হায়াত খানের ছেলে হিসেবে মাঠ পর্যায়ে আওয়ামী লীগকে আরো সুসংহত করবো।

 

ভোরের আকাশ/নি