logo
আপডেট : ৯ এপ্রিল, ২০২৩ ১৩:১৩
ভোজ্যতেলের চাহিদা মেটাতে বেড়েছে সূর্যমুখী চাষ
যশোর প্রতিনিধি

ভোজ্যতেলের চাহিদা মেটাতে বেড়েছে সূর্যমুখী চাষ

যশোর জেলায় বেড়েছে সূর্যমুখী চাষ

ভোজ্যতেলের চাহিদা মেটাতে যশোর জেলায় বেড়েছে সূর্যমুখী চাষ। গত বছর যশোর জেলায় সূর্যমুখী চাষ হয়েছিল ২৯ হেক্টর জমিতে। চলতি বছর চাষ বেড়ে হয়েছে ৩৮ হেক্টর।

 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, যশোর সদরে ৩ হেক্টর, চৌগাছায় ৩ হেক্টর, ঝিকরগাছায় ২ হেক্টর, অভয়নগরে ২ হেক্টর, শার্শায় ২২ হেক্টর, মনিরামপুর, বাঘারপাড়া ও কেশবপুরে ২ হেক্টর করে জমিতে সূর্যমুখী চাষ হয়েছে।

 

কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভোজ্যতেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলায় সরিষাসহ অন্যান্য তেলবীজের আবাদ বেড়েছে। সূর্যমুখীর চারা রোপণের ১১৫ দিনের মধ্যে ফসল পাওয়া যায়। এক একর জমিতে সূর্যমুখী চাষে খরচ পড়ে প্রায় ১২ হাজার টাকা।

 

একরে সূর্যমুখী উৎপাদন হয় ৩৩-৩৫ মণ। একমণ সূর্যমুখী ফুলের বীজের বাজার মূল্য প্রায় ১৩-১৪শ টাকা। একর প্রতি উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে কৃষকের প্রায় কমবেশি ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা লাভ থাকে। এছাড়াও সূর্যমুখী ফুলের বীজ সংগ্রহ করার পর গাছগুলো জমিতে পচিয়ে জৈব সার হিসেবে ব্যবহার করা যায়।

 

এতে জমির জৈবসারের ঘাটতি পূরণ হয়। অনেক কৃষক পরিবার তার দৈনন্দিন জীবনে রান্নার কাজের জ্বালানি হিসেবে সূর্যমুখীর খড়ি ব্যবহার করে থাকে। এতে করে জ্বালানি কাঠের ওপর নির্ভরশীলতা হ্রাস পায়।

 

ঝিকরগাছার ফুলবাড়ি গ্রামের চাষি ওবায়দুল ইসলামের মাঠে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিটি গাছে ফুল এসেছে। দূর থেকে তাকালে মনে হয় প্রকৃতি যেন হলুদ গালিচা বিছিয়ে দিয়েছে। দৃষ্টিনন্দন সূর্যমুখী বাগানে দাঁড়িয়ে ওবায়দুল জানান, কারো সহযোগিতা ছাড়া প্রথমবারের মত ১৭ কাঠা জমিতে সূর্যমুখী চাষ করেছি।

 

ঝড়-বৃষ্টি না হলে আশা করি যা খরচ হয়েছে এর দ্বিগুণ লাভ হবে। দর্শনার্থীরা অনেক সময় ফুলের ভেতরে গিয়ে ছবি তোলার কারণে গাছ ভেঙে যায়। কেউ কেউ ঘুরতে এসে যাওয়ার সময় ছিঁড়ে নিয়ে যায়। এসব কারণে সবসময় পাহারা দিতে হয়।

 

চাষি আব্দুল মমিন বলেন, প্রথমবারের মতো আমি এক বিঘা জমিতে সূর্যমুখী চাষ করেছি। সূর্যমুখী শুধু ফসল নয়, বিনোদনের খোরাক। অনেক মানুষ বিনোদনও নিতে আসে। তাছাড়া চাষে তেমন ঝামেলা নেই। কয়েকবার পানি সেচ দিলে হয়। তবে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো ফুলগুলো সবসময় দেখে রাখতে হয়।

 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মঞ্জুরুল হক বলেন, আগে সূর্যমুখী চাষ ছিল না। এখন সূর্যমুখী চাষ সরকারের কর্মসূচির আওতায় হওয়ায় এ বছর ১৫০ জন কৃষককে ১ বিঘা জমির জন্য সূর্যমুখীর বীজসহ সব উপকরণ দেয়া হয়েছে । প্রতি বিঘা জমিতে ছয় থেকে সাতমণ বীজ পাওয়া যাবে।

 

তিনি আরো বলেন, সূর্যমুখী ফুল চাষে তেল উৎপাদনে ভালো ভূমিকা রাখবে। আমরা কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করছি।

 

ভোরের আকাশ/নি