logo
আপডেট : ১০ এপ্রিল, ২০২৩ ১৮:০৬
সুপ্রিম কোর্ট বারে হামলা-হুমকি
বিএনপিপন্থি ২৪ আইনজীবীর হাইকোর্টে আগাম জামিন
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপিপন্থি ২৪ আইনজীবীর হাইকোর্টে আগাম জামিন

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির (বার অ্যাসোসিয়েশনে) ইফতার মাহফিলে হামলা, ভাঙচুর, হুমকি ও বিচারপতিকে প্রাণনাশের চেষ্টার অভিযোগের মামলায় ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলসহ বিএনপিপন্থি ২৪ আইনজীবীর জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আসামিদের আগামী ১২ সপ্তাহ বা মামলার প্রতিবেদন দাখিল এ দুটির মধ্যে যেটি আগে হয় সেই পর্যন্ত আগাম জামিন দিয়েছেন আদালত।

 

এ সময়ের মধ্যে তাদের ঢাকা মহানগর দায়রা আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে। জামিন সংক্রান্ত আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি মো. ইকবাল কবির ও একেএম রবিউল হাসানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এজে মোহাম্মদ আলী ও মোহাম্মদ মহসিন রশিদ।

 

রোববার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির প্রশাসনিক কর্মকর্তা রবিউল হাসান বিএনপিপন্থি ২৪ আইনজীবীকে আসামি করে শাহবাগ থানায় এ মামলা করেন। এতে বার অ্যাসোসিয়েশনে ইফতার মাহফিল চলাকালে হামলা, ভাঙচুর, হুমকি ও প্রাণনাশের চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়। ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ছাড়াও মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, অ্যাডভোকেট গাজী মো. কামরুল ইসলাম সজল, অ্যাডভোকেট শাহ আহমদ বাদল, অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান খান,

 

অ্যাডভোকেট মাহফুজ বিন ইউসুফ, ব্যারিস্টার একেএম এহসানুর রহমান, ব্যারিস্টার মাহাদিন চৌধুরী, অ্যাডভোকেট জামিউল হক ফয়সাল, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট ইউনুস আলী রবি, অ্যাডভোকেট কাজী মোস্তাফিজুর রহমান আহাদ, অ্যাডভোকেট মির্জা আল মাহমুদ, ব্যারিস্টার মেহেদী হাসান, অ্যাডভোকেট নূরে আলম সিদ্দিকী সোহাগ, অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম ছোটন, অ্যাডভোকেট মহসিন কবির রকি, অ্যাডভোকেট ফয়সাল সিদ্দীকি, অ্যাডভোকেট সফিউল আলম সপু, অ্যাডভোকেট মো. শহিদুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট মনজুরুল আলম সুজন, ব্যারিস্টার রেদওয়ান আহমদ রানজিব, অ্যাডভোকেট মো. ইসাসহ আরো ৫০-৬০ আইনজীবী ও কয়েকজন বহিরাগত রয়েছেন।

 

মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিরা সাজাপ্রাপ্ত তারেক রহমান এবং জামায়াতের নাম নিয়ে স্লোগান দিয়ে মিছিলসহ হঠাৎ আইনজীবী সমিতির ২ নম্বর হলরুমে, পরে ১ নম্বর হলরুমে প্রবেশ করে ইফতার অনুষ্ঠানের প্রধান বিচারপতির নামসংবলিত সব ব্যানার ছিড়ে ফেলেন। আইনজীবী সদস্যদের জন্য সংরক্ষিত আসনের চেয়ার-টেবিল ভেঙে ও কাপড় উপড়ে ফেলে সমিতি ভবনে একটি অরাজক অবস্থার সষ্টি করেন।

 

এ সময় উল্লিখিত আসামিদের বেআইনি কর্মকান্ডে বাধা দিত গেলে তারা সমিতির সদস্য অ্যাডভোকেট রকিবুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট পানু খান ও অ্যাডভোকেট মো. শাহনওয়াজসহ অন্যান্য আইনজীবীদের ধাক্কা দিয়ে ফেলে আহত করেন। অভিযোগে আরো বলা হয়, অ্যাডভোকেট রকিবুল ইসলামকে মামলার ১২ নম্বর আসামি অ্যাডভোকেট নূর আলম সিদ্দিকী সোহাগ প্রাণে হত্যার উদ্দেশে কাঠের লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করতে গেলে ভিকটিম হাত দিয়ে ঠেকানোর সময় তার ডান হাত মারাত্মক রক্তাক্ত হয়।

 

তখন আসামিরা সাধারণ আইনজীবীদের ইফতার অনুষ্ঠানে অংশ নিতে নিষেধ করেন এবং ইফতার অনুষ্ঠানে অংশ নিলে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

 

পরবর্তী সময়ে বিকেল ৫টা ১০ মিনিটে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক সমিতির আমন্ত্রণে ইফতার অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য সমিতির নিচ তলার সিঁড়ি দিয়ে দ্বিতীয় তলায় ওঠার সময় আসামিরা তাকে গালাগাল করেন এবং ৭ নম্বর আসামি অ্যাডভোকেট ইউনুস আলী রবি ১, ২, ৩ ও ৪ নম্বর আসামির নির্দেশে তার দিকে পানিভর্তি বোতল ছুড়ে মারেন, সমিতির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ সহ ফৌজদারি অপরাধ করেন।

 

এজাহারে বলা হয়, ঘটনার পর ইফতার শেষ করে সবাই ক্লান্ত হয়ে পড়ায় এবং পর দিন ৭ এপ্রিল সমিতির অফিস বন্ধ থাকায় সমিতির নির্বাচিত নেতা ও সিনিয়র সদস্যরা এ ঘটনা সম্পর্কে আলোচনা করে মামলা করতে বিলম্ব হয়।

 

ভোরের আকাশ/নি