বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় প্রতিবছর বারুণী মেলা শেষে ‘বউমেলা’ অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার উপজেলার গাড়ীদহ ইউনিয়নের গাড়ীদহ এলাকার করতোয়া নদীর পশ্চিম কোল ঘেঁষে বউমেলা বসে। মেলায় ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ই নারী। কোনো পুরুষ আসতে পারেন না। তাই বিভিন্ন বয়সি নারীরা প্রাণভরে মেলায় ঘুরে বেড়িয়েছেন। কিনেছেন প্রসাধনীসহ নানা পণ্য সামগ্রী। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে এ মেলা।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিশাল মাঠজুড়ে মেলা বসে। মেলায় স্থান পেয়েছে বিভিন্ন ধরনের দোকান। একপাশে চলছে মোটরসাইকেল ও নাগরদোলা খেলা। নারীরা দলবেধে আবার এলোমেলোভাবে দোকানে দোকানে ঘুরছেন। জিনিসপত্র পছন্দ করছেন। দরদাম করে পছন্দের জিনিসটি কিনছেন। আবার অনেকেই ছেলে-মেয়েকে নিয়ে নানা ধরনের ভাজাপোড়ার দোকানে ভিড় করছেন। সন্তানদের আবদার পূরণে সেগুলো দোকানে বসে বা পাশে দাঁড়িয়ে অনেককে খেতেও দেখা যায়।
নিমাই চন্দ্রের স্ত্রী কল্পনা ঘোষ, তার বোন হিরা, ছেলে আকাশ ও মেয়ে নুপুরকে নিয়ে বউমেলায় এসেছেন। তিনি বলেন, মেলা থেকে বিভিন্ন ধরনের খেলনা, কসমেটিকস, হাত পাখা, কাঠের সামগ্রী, মিষ্টান্ন সামগ্রী কিনেছি। ছেলে-মেয়েকে বাইক খেলা দেখিয়েছি। নাগরদোলায় চড়ে ওরা ব্যাপক আনন্দ করেছে।
মেলায় আসা সালমা, সুমাইয়া আক্তার, মুন্নী আক্তারসহ একাধিক নারী জানান, বাড়ির কাছে মেলা হওয়ায় সকালে একদফা আসেন তারা। বিকেলে আরেকদফা মেলায় আসেন। অনেক কিছু খেয়েছেন। মেলা থেকে কিছু সাংসারিক জিনিসপত্র কেনা হয়েছে। পাশাপাশি সন্তানদের জন্য নানা ধরনের খেলনা সামগ্রী কিনেছেন। বাদ যায়নি মিষ্টান্ন সামগ্রী কেনা। বউমেলাটি তাদের ভীষণ আনন্দ দিয়েছে।
মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য আনিছুর রহমান বলেন, প্রত্যেক বছর চৈত্রের বারুণী তিথির দ্বিতীয় দিনে এখানে বউমেলার আয়োজন করা হয়। তবে এবার তিথি অনুযায়ী মেলা হয়নি। রোজার কারণে সেটি সম্ভব হয়নি। তাই ঈদের পরপরই বৈশাখ মাসে এসে ঐতিহ্যবাহী মেলাটি হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বউমেলায় বিভিন্ন বয়সি নারীরা এসে নানা ধরনের জিনিসপত্র কিনেছেন। এছাড়া এবার মেলা জাঁকজমকভাবে হওয়ায় সময়সীমা আরো দুই-একদিন বাড়তে পারে।
ভোরের আকাশ/আসা