logo
আপডেট : ২৮ এপ্রিল, ২০২৩ ১৮:৫৭
ঈদের পরও স্বস্তি নেই বাজারে
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঈদের পরও স্বস্তি নেই বাজারে

নিত্যপণ্যের বাজার এখনো জমেনি। খোলেনি অধিকাংশ দোকানপাট। ক্রেতাসাধারণের উপস্থিতিও কম। তবে পণ্যমূল্যে কোনো হেরফের নেই। আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে। কোনো কোনো পণ্যের মূল্য আগের চেয়ে বেড়েছে।

 

শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দাম বাড়ার এ তালিকায় নতুন করে যোগ হয়েছে আলু। ঈদের আগে ১ কেজি আলু বিক্রি হয়েছে ৩০ টাকায়। সেখানে ঈদের পর দাম বেড়ে ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ওঠানামার মধ্যে ডিমের দাম আবারো বেড়েছে ডজনপ্রতি ৫ থেকে ১০ টাকা। এক ডজন ডিম বর্তমানে ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতি সপ্তাহের ডিমের দাম ওঠামানা করছে। কোনো সপ্তাহে ৫ টাকা কমছে তো পরের সপ্তাহে আবার ৫ টাকা বেড়ে যাচ্ছে। ঈদের পর মুগরির দামে কোনো হেরফের হয়নি। ঈদের আগে সোনালি মুরগি ৩৫০ থেকে ৩৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। বর্তমানে একই দামে বিক্রি হচ্ছে। ঈদের আগে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিপ্রতি ২০০ টাকায় নেমে এলেও বর্তমানে ২৩০ থেকে ২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর দেশি মুগরির দাম আগাগোড়াই আকাশছোঁয়া। বর্তমান কেজিপ্রতি দাম ৬৫০ টাকার বেশি।

 

এদিকে টিসিবির হিসাবে বাজারে চাল-ডাল, আটা-ময়দা ও সয়াবিনের দামে কোনো পরিবর্তন নেই। তবে গত সপ্তাহে আলু, পেঁয়াজ, রসুন ও আমদানি করা আদার দাম বেড়েছে। বাজারে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা কেজি। আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। এক সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে। গত এক মাসে দেশি রসুন ১৮ ও আমদানি করা রসুনের দাম বেড়েছে ৯ শতাংশ। আমদানি করা আদার দাম বেড়েছে ১৮ শতাংশ।

 

টিসিবি বলছে, বাজারে প্রতি কেজি রুই মাছের দাম পড়ছে ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা। গরুর মাংসের কেজি ৭৩০ থেকে ৭৫০ টাকা ও খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ১০০ টাকায়।

 

মিরপুর বাজারে করলা, ঢ্যাঁড়শ, পটোল, চিচিঙ্গা ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি বিক্রি হতে দেখা গেছে। ধুন্দুল ও ঝিঙার দাম আরো বেশি। মাঝারি আকারের প্রতিটি চালকুমড়া বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। লাউয়ের দাম ৮০ টাকা থেকে তারও ঊর্ধ্বে।

 

এছাড়া রমজান চলে যাওয়ার পরও শসার বাজারের আগুন। প্রতি কেজি শসা বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে। কাঁকরোল ১০০ থেকে ১১০ টাকায় বিকি হচ্ছে। আগের চেয়ে পেঁপের দাম বাড়তি। প্রতি কেজি পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকায়। ঈদের আগে ছিল ২৫ থেকে ৩০ টাকা।

 

এছাড়া মিষ্টিকুমড়া কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। বাজারে বিভিন্ন দামের লেবু বিক্রি করতে দেখা গেছে। সাইজভেদে এক হালি লেবুর দাম ২০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।

 

বড় মাছের মধ্যে সবচেয়ে সস্তা পাঙ্গাস ও তেলাপিয়ার কেজি ২০০ থেকে ২৫০। পাবদার দাম ৪৫০, চিংড়ি প্রকারভেদে ৬০০ থেকে ৮০০, রুই মাছ ৩৫০ থেকে ৪৫০, কাতল ৩২০ থেকে ৩৬০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হতে দেখা গেছে। বড় আকারের ইলিশের দাম কেজিপ্রতি ১৮০০ টাকা থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত উঠেছে। শিং মাছ প্রতি কেজি ৪৫০ থেকে ৪৮০, টেংরা প্রতি কেজি ৪৫০ থেকে ৫০০, শোল প্রতি কেজি ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে গরু ৮০০ এবং খাসির মাংস ১১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

 

কারওয়ানবাজারে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী আবু হোসেন বলেন, রমজান মাসে মাছ-মাংস ও মুরগির দাম বেড়েছে, এখনো সেই দামই রয়ে গেছে। কিছুটা হলেও দাম কমবে বলে আশা করেছিলাম। এদিকে চিনির দাম সরকারের বেঁধে দেয়া দামের চেয়ে বেশি। সরকার খোলা সর্বোচ্চ দাম ঠিক করেছে ১০৪ টাকা, বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১১৭ থেকে ১২৫ টাকায়। প্যাকেটজাত চিনি বেশিরভাগ দোকানে পাওয়া যায় না। তবে শপিংমলে প্যাকেটজাত চিনি ১১২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

 

ভোরের আকাশ/আসা